সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

রাস্তা দখলটাই যেনো সংস্কৃতি!
অনলাইন ডেস্ক

বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান বা শীর্ষ সংবাদ হিসেবে স্থান পেয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের সংবাদ। এ সংবাদটির বিবরণী পড়ার আগে সংযুক্ত ছবিটিই পাঠকের নজর কাড়ে বেশি। একটি বিপজ্জনক মোড়ে রাস্তার সাথে মিশে কীভাবে পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি খুব সহজে উপলব্ধি করা যায়। নিকট/ দূর ভবিষ্যতে রাস্তার উপরিউক্ত বাঁক সোজা বা প্রশস্ত করতে গেলে যে নির্মাণাধীন বা নির্মিত ভবনটি ভাঙ্গা পড়বে সেটি আন্দাজ করতে কারোই অসুবিধা হয় না। কিন্তু সেটি ক্ষমতা বা প্রভাবের জোরে অন্ধ হয়ে ভবন নির্মাতা দেখে না আর আন্দাজও করতে পারে না। সেজন্যেই চাঁদপুর কণ্ঠে ‘নারায়ণপুরে সড়ক ও জনপথের রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণ' শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। এ সংবাদে

মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ লিখেছেন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তা দখল করে একের পর এক বহুতল ভবনসহ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন কতিপয় প্রভাবশালী। মতলব-গৌরিপুর পেন্নাই সড়কের পাশ ঘেঁষে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কয়েক শতাধিক স্থাপনা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে নারায়ণপুর এলাকায় রাস্তা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন সমাজ। জানা যায়, ইতিপূর্বে স্থানীয় প্রভাবশালীরা পেশী শক্তির বলে এবং রাজনৈতিক শক্তির অপব্যবহার করে সড়কের পাশ ঘেঁষে এবং সড়কের জায়গা দখল করে গড়ে তোলে নানা ধরনের দোকানপাট ও বহুতল ভবন। ফলে রাস্তা সরু হয়ে যান চলাচলে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত রাস্তা না হওয়ায় এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কর্মকর্তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই যে যার মতো করে অবৈধভাবে দখল করে নিচ্ছে সরকারি জায়গা। দখলের কারণে রাস্তাটি সরু হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা।

সওজ-এর অধিগ্রহণকৃত রাস্তা না হলেও নিয়ম অনুযায়ী বিএস নকশা মেনে কাজ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনো নিয়মণ্ডনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে মতো নারায়ণপুর বাজার এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করছেন মজিবুর রহমান নামের এক ভবন মালিক। নিয়ম না মানায় এবং রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণ করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

আমাদের সমাজে রাস্তা/ খাল/ প্রতিবেশীর জায়গা দখল, জমির আইল ঠেলা এবং এ সংক্রান্ত বিরোধে জড়ানোটা যেনো সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। চাঁদপুর পৌরসভার জায়গা দখল করে, বিশেষ করে বিভিন্ন রাস্তার মোড়কে অপ্রশস্ত করে সুদীর্ঘকাল পূর্ব থেকে যে সকল পৌরবাসী নির্বিঘ্ন দখলদারিত্ব কায়েম করে রেখেছিলো, বর্তমান মেয়র সস্তা জনপ্রিয়তা মাথা থেকে সরিয়ে তাদেরকে পৌরসভার রাস্তা ছাড়তে বাধ্য করেন। যদিও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বের প্রশ্নে তিনি অনুরূপ কঠোর হতে পারেন নি, সম্ভবত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার প্রশ্নে। সংবাদে উল্লেখিত রাস্তাটিসহ অন্য সকল স্থানে দখলকৃত রাস্তার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও জনস্বার্থে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রের মতোই হতে হবে। এ ছাড়া গত্যন্তর আছে বলে মনে করি না। রাস্তা দখল করাকে আমাদের দেশে যারা সংস্কৃতি(!) বা ইচ্ছাধীন রীতিনীতিতে পরিণত করেছেন, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথমে সতর্ক করা এবং তাতে কাজ না হলে সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে উচ্ছেদই হতে পারে যথার্থ পদক্ষেপ বলে আমরা বিশ্বাস করি। কেননা সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করার প্রক্রিয়া অনিবার্যই হয়ে পড়ে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়