বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১২ মে ২০২২, ০০:০০

নৌপুলিশের এমন ভূমিকাই চাই

নৌপুলিশের এমন ভূমিকাই চাই
অনলাইন ডেস্ক

গত ৯ মে সোমবার দিবাগত রাতে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নৌথানার পুলিশ লঞ্চের লোকজন কর্তৃক হামলার শিকার যাত্রীদের উদ্ধারে তাৎক্ষণিক যে ভূমিকা রেখেছে, তাতে সাধারণ মানুষ খুশি হয়েছে। বিশেষ করে লঞ্চযোগে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী যাত্রীগণ স্বস্তিবোধ করেছে। জানা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাহিদ-৭ যোগে সপরিবারে চট্টগ্রামগামী ট্রেন ধরার জন্যে চাঁদপুর আসছিলেন জনৈক মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলাধীন ধুলিয়া ইউনিয়নের ঘূচরাকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। লঞ্চটি চাঁদপুর পৌঁছার অনেক আগে মোশারফ ভূঁইয়ার ছেলে মেহেদী হাসান ও ভাতিজা কাউসারের সাথে লঞ্চের কেবিন বয়ের একটি বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে লঞ্চের স্টাফদের সাথে উক্ত দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে লঞ্চের স্টাফরা এ দুজনকে দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। ওরা ভেবেছিলো, ঘটনা হয়তো ওখানেই শেষ। কিন্তু না, মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া চাঁদপুর লঞ্চঘাটে সপরিবারে নামার সময় লঞ্চের সুপারভাইজার সাইদুর মৃধা ও অন্য স্টাফরা মিলে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আহত করে। এ দৃশ্য অবলোকন করে লঞ্চঘাটে কর্মরত নৌপুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শুধু তাণ্ডই নয়, তাৎক্ষণিকভাবে লঞ্চের সুপারভাইজারসহ হামলাকারী পাঁচজনকে আটক করেন এবং হামলায় আহত পাঁচ যাত্রীকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থাগ্রহণ করেন। এ ঘটনায় মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া বাদী হয়ে চাঁদপুর নৌথানায় মামলা দায়ের করার পর মঙ্গলবার দুপুরে আটককৃত পাঁচজনকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের সকলকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

লঞ্চ যাত্রীরা লঞ্চঘাটে নৌপুলিশের এমন ভূমিকাই সবসময় প্রত্যাশা করে। লঞ্চ থেকে মালামাল নিয়ে যাত্রীরা লঞ্চঘাটে নামার সময় কুলিরা নিরীহ যাত্রীদেরকে অনেক সময় হয়রানি করে। কিন্তু পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খুব একটা এগিয়ে আসে না। আবার যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে কিংবা কেবিন নিয়ে লঞ্চ স্টাফদের বচসা হলেও নৌপুলিশকে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। তবে কোনো যাত্রী যদি সুনির্দিষ্টভাবে নৌপুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে, তাহলে তারা কমণ্ডবেশি সক্রিয়তা প্রদর্শন করে।

লঞ্চের কেবিন ভাড়া দেয়াটা যে কোনো লঞ্চ কর্তৃপক্ষের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ। স্বামী-স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো পরিচয়ে পুরুষ ও নারী কেবিন ভাড়া নিয়ে লঞ্চে যাতায়াত করলে কম-বেশি নানা অঘটন ঘটে। মাঝে মধ্যে কেবিনে খুনের ঘটনাও ঘটে। এবার তো ঈদ উপলক্ষে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে লঞ্চের কেবিন ভাড়া নেয়ার বিষয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী নির্দেশনা জারি করেন। কেবিন ভাড়ার ক্ষেত্রে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা মানে কিনা সেটা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সাথে নৌপুলিশেরও পর্যবেক্ষণ করা বাঞ্ছনীয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা নিজের চেয়ার ঠিক রাখার জন্যে ভীষণ কৌশলী হয়। অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব হলে হতাহত ঠেকানোসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা সাত-পাঁচ ভেবেই তবে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলার দিকে যায়। অন্যথায় অভিযোগ পাওয়া না পাওয়ার দোহাই বা অজুহাত দেখিয়ে অনেক বড় ঘটনায়ও মামলার বিষয়টি এড়িয়ে যায়। চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নৌ থানার পুলিশ যাত্রীদের স্বার্থে ও নিরাপত্তায় সম্প্রতি যেভাবে এগিয়ে আসছে, বস্তুত যাত্রীরা সেটিই প্রত্যাশা করে। আমরাও প্রত্যাশা করি, নৌপুলিশ যেনো স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই অধিকাংশ পদক্ষেপ নেয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়