প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২২, ০০:০০
আমাদের দেশে সচরাচর যে প্রতিবাদ দেখি, তেমন প্রতিবাদ নয়, গত রোববার কচুয়ায় দেখা গেছে কিছুটা ব্যতিক্রম প্রতিবাদ। সে প্রতিবাদ নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় সচিত্র যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার শিরোনাম হয়েছে ‘কচুয়ায় ব্রীজ নির্মাণে গড়িমসির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল’।
এ সংবাদটির গর্ভে লিখা হয়েছে, কচুয়া উপজেলাধীন সাচার উত্তর বাজার ব্রীজ সংলগ্ন খালের ওপর সাচার-রাজারামপুর সড়কের নতুন ব্রীজ নির্মাণে গড়িমসির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ১৩ মার্চ রোববার দুপুরে তারা এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। প্রায় ঘন্টাখানেক পর চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের এমপি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আশ^াসে এলাকাবাসী তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। মানববন্ধনটি কার্যত সড়ক অবরোধে রূপ নেয়ায় কচুয়া-সাচার-গৌরিপুর সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে, যাতে যাত্রী ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে। খবর পেয়ে নিকটস্থ ফাঁড়ির এসআই আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আটকা পড়া যানবাহনগুলো চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।
যে ব্রীজের কাজ নিয়ে ঠিকাদারের গড়িমসি সে সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এলজিইডির আওতায় প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ব্রীজটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি। এরপর দু বছরের অধিক সময় পার হয়ে যাবার পর সম্প্রতি ঠিকাদারের পাইলিংয়ের জন্যে বেজ কাটেন। বস্তুত এতেই এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
‘ব্রীজের নির্মাণ কাজে কেনো এই অপ্রত্যাশিত বিলম্ব’ এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল আলিম লিটন বলেন, মূল সড়ক থেকে ব্রীজ নির্মাণের স্থানটি বেশ উচুঁ হওয়ায় ঠিকাদার সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এ সমস্যা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ব্রীজ নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্যে যদি দু বছরের অধিক সময় পার হয়ে যায়, তাতে ক্ষতি কি শুধু ঠিকাদারের হয়েছে?-মোটেও নয়। নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ঠিকাদারকে এ ব্রীজ নির্মাণে লাভ যেমন কম গুণতে হবে, তেমনি সরকারকেও নির্দিষ্ট বাজেটের চেয়ে অধিক অর্থ বিল বাবদ ঠিকাদারকে পরিশোধ করতে হবে। ব্রীজ নির্মাণে এই যে গড়িমসিমূলক অহেতুক দীর্ঘসূত্রিতা ও বিলম্ব-এজন্যে মূলত দায়ী কে? আমরা মনে করি, দায়ী ব্যক্তিকে দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে এবং শাস্তি না দিলেও আনুষ্ঠানিক তিরস্কার করতে হবে।