প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২২, ০০:০০
কলেজটির প্রতি এমন অবহেলা ঘুচে যাক
হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বলাখাল বহুল পরিচিত একটি জায়গা। বলাখাল নামে রেল স্টেশন থাকলেও এক সময় বলাখাল নামে বাজার ছিলো না, ছিলো কালিয়াতল বাজার। এ বাজারটির পরিবর্তিত নাম হচ্ছে বলাখাল বাজার। এ বাজারটির পাথর নিক্ষেপ দূরত্বে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। লাগোয়া পূর্ব দিকে বলাখাল জে.এন. উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, পশ্চিম দিকে বলাখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর দিকে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর পাশে বলাখাল চন্দ্রবান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কেজি স্কুল এবং বলাখাল মকবুল আহমেদ ডিগ্রি কলেজ। এ কলেজটির কয়েক শ’ গজ দূরে অবস্থিত বলাখাল মাদ্রাসা। শুধু চাঁদপুর জেলা নয়, দেশের খুব কম জায়গাতেই এতোটা সন্নিহিত অবস্থায় ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান রয়েছে।
|আরো খবর
বলাখালে হাইস্কুল ও প্রাইমারী স্কুল ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বাকি চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতোত্তর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। মাদ্রাসা ও কেজি স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাবেক এমপি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রথিতযশা চিকিৎসক ডাঃ এম.এ. সাত্তার (বর্তমানে মরহুম)-এর মুখ্য অবদান থাকলেও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠায় ডাঃ এম. এ. সাত্তারের পাশাপাশি তৎকালীন হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে হাজীগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তাফাজ্জল হায়দার নসু চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম)-এর মুখ্য অবদান রয়েছে।
বলাখালের এ ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব সময় সবদিক বিবেচনায় ভালোভাবে পরিচালিত হয়েছে এমনটি বললে অত্যুক্তি হবে। কেননা প্রতিষ্ঠান-প্রধানের ওপর নির্ভর করে এসব প্রতিষ্ঠান কখনো সাফল্যে ভাস্বর হয়েছে, আবার কখনো ব্যর্থতায় ম্লান হয়েছে। বলাখাল মকবুল আহমেদ ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মকবুল আহমেদ মুন্সি কলেজটিকে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে যেভাবে উদ্ভাসিত করেছেন, পরবর্তীতে অধ্যক্ষ আঃ রব শিকদার আর সেভাবে পারেন নি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসন্তোষ, মালার শিকার হওয়াসহ নানা জটিলতায় তিনি স্বস্তিতে চালাতে পারেন নি কলেজটি। তার কর্মকালে এ কলেজের স্বনামধন্য শিক্ষকগণ একের পর এক বিভিন্ন কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ লাভ করেছেন। মেধাবী শিক্ষকদের কেউ কেউ চলে গেছেন বিদেশে। উক্ত অধ্যক্ষের অবসর গ্রহণের পর যাঁরা অধ্যক্ষের দায়িত্বে এসেছেন তাঁরা চেষ্টা করছেন কলেজটিকে সামগ্রিকভাবে অগ্রসর করে নিতে। কিন্তু অবকাঠামোগত সমস্যায় কলেজটি কাক্সিক্ষতভাবে এগুতে পারছে না।
হাজীগঞ্জ উপজেলার ৮টি কলেজের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক দিয়ে এ কলেজটি অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও ১৯৯৬ সালের পর এই প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে কোনো উন্নয়ন হয় নি। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি প্রচ্ছন্ন-অপ্রচ্ছন্ন অবহেলার শিকার হয়ে আছে যেনো। এই অবহেলার বিষয়টি অতি সম্প্রতি চাঁদপুর কণ্ঠসহ স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ আকারে ফলাও করে প্রচারিত হওয়ায় বেশ জানাজানি হয়েছে। আমরা স্থানীয় এমপিসহ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে এ কলেজটির প্রতি বিদ্যমান অবহেলা ঘোচানোর যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।