বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২২, ০০:০০

গোড়ায় গলদ থাকলে   যা হয়
অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশে ইলিশের অভয়াশ্রম রয়েছে ছয়টি, যার মোট আয়তন ৪৩২ কিলোমিটার। অভয়াশ্রমগুলো হলো- বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও শরীয়তপুর। এর মধ্যে পাঁচটিতে মার্চ ও এপ্রিল দুমাস জাটকা ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকে। প্রথম অভয়াশ্রমটি মেঘনা নদীর চাঁদপুর জেলাধীন মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ দু মাসে মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে ৪ মাসের জন্যে ১৬০ কেজি চাল প্রদান করা হয়। কিন্তু প্রচ্ছন্ন কারণে সকল নিবন্ধিত জেলের জন্যে হিসাব মতে পুরো পরিমাণ চাল বরাদ্দ দেয়া হয় না। কিছুটা কম বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু চাল বিতরণের দিন ইউনিয়ন পরিষদে নিবন্ধিত সকল জেলে এসে উপস্থিত হয়, এমনকি অনিবন্ধিত কিছু জেলের আনাগোনাও ঘটে। এমতাবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বিপাকে পড়েন, কখনো কখনো নানা ধরনের হেনস্তার শিকার হন।

গত শুক্রবার চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণ নিয়ে অসন্তুষ্ট জেলেরা করেছেন অভিযোগ। তারা বলেছেন, প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে দু মাসের ৮০ কেজি চাল একত্রে দেয়ার কথা। কিন্তু দেয়া হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ কেজি করে। প্রতিটি বস্তা ‘বোঙা’ দিয়ে ফুটো করে চাল কমিয়ে ফেলা হয়েছে শুধু তা-ই নয়, জেলেদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে অগ্রিম ২শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ জেলেরা বলেছেন, দুমাস নদীতে মাছ না ধরার শর্তে সরকার তাদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছে। আর বাকি সবকিছুই তাদের কিনে খেতে হয়। অথচ এরপরও চাল কম দেয়া এবং বিনিময়ে টাকা নেয়াটা জুলুমের মধ্যে পড়ে।

জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ হোসেন খান বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা নেইনি। কিছু কিছু জেলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। কারো থেকে ২শ’ টাকা, কারো থেকে একশ’ টাকা নিয়েছি। চাল উঠানোর পরিবহন খরচ পোষাতেই এই টাকা নিতে হয়েছে।

এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল্লা পাটোয়ারী চাল কম দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ৭৮১ জন নিবন্ধিত জেলের জন্যে ৬৩ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। কিন্তু গোডাউন থেকে সঠিক পরিমাণ চাল পাওয়া যায় না। আর লেবারকে টাকা না দিলে তারা মাল লোড করে না। তাছাড়া প্রতিটি বস্তার ওজন ১ কেজি। এসব কারণে কিছু চাল কম হয়। সরকারিভাবে পরিবহন বাবদ যে খরচ দেয়া হয়, তাও অনেক কম। তিনি অকপটে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি জেলেদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্যে মেম্বারদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, জেলেরা যে টাকা বুঝে পেয়েছে তার স্বাক্ষর আমাকে দেখাতে হবে। কোনো মেম্বারের অনিয়মের দায় আমি নেবো না।

এ বছর জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল করতে টাস্কফোর্সের সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জেলেদের চাল কম দেয়া যাবে না। কোথাও চাল কম দেয়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলেরা তাঁর বক্তব্যে আশাবাদী। তবে গোড়ায় গলদ হিসেবে খাদ্য গুদাম থেকে চাল কম দেয়া, মোট নিবন্ধিত জেলের হিসেবে চাল বরাদ্দ কম দেয়া ও পরিবহন খরচ কম দেয়ার বিষয়টিকে অবশ্যই জেলা প্রশাসকসহ মৎস্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়কে খুবই গুরুত্বের সাথে মাথায় নিতে হবে। কেননা গোড়ায় গলদ রেখে জেলেদের চাল বিতরণ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগের আলোকে একতরফা ব্যবস্থা নিলে তা যথার্থ হবে না বলে আমরা মনে করি। আমরা অবশ্যই অনিয়মের প্রতিকার চাই। অনিয়মকে ঢাকার অজুহাতে বালিয়া ইউনিয়নের মতো অন্য কোথাও জেলেরা যাতে চাঁদাবাজির শিকার না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়