বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২২, ০০:০০

তবুও এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়

তবুও এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়
অনলাইন ডেস্ক

গত শুক্রবার চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় গুরুত্বহীনভাবে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘ফরিদগঞ্জের সরখালে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ’। এ সংবাদটি পাঠ করে কিছু পাঠক চাঁদপুর কলেজ সরকারি হবার পর প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেসর এ.ডাব্লিউ.এম. তোয়াহা মিয়া ওরফে তোহা স্যারকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়েছেন। কেননা এ সংবাদটির উপজীব্য হয়েছে ‘অধ্যাপক এ.ডব্লিউ.এম মোয়াহা মিয়া স্মৃতি পাঠাগারে’র কার্যক্রম।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, উক্ত পাঠাগারের উদ্যোগে সম্প্রতি ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৫ সালে অধ্যাপক তোয়াহা মিয়ার ফরিদগঞ্জের ২নং বালিথুবা (পূর্ব) ইউনিয়নস্থ সরখাল গ্রামের পৈতৃক বাড়ি চৌধুরী বাড়িতে এ পাঠাগার চালু করা হয়। গত ১ মার্চ উক্ত পাঠাগার কর্তৃক আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোঃ রুহুল আমিন। সভাপতিত্ব করেন চান্দ্রা আবদুল হাকিম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির সাথে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ তোয়াহা মিয়ার বোন কোহিনূর বেগম, পাঠাগারের উপদেষ্টা খোরশেদ আলম চৌধুরী ও সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক হাছিনা আক্তার। পুরো আয়োজনে সহযোগিতা করেন অধ্যক্ষ তোয়াহা মিয়ার প্রবাসী ভাই মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। বিজয়ীদেরকে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষ তোয়াহা মিয়ার ভাই প্রফেসর ড. গোলাম মাওলা চৌধুরীর জীবনীভিত্তিক লেখা বই ‘জীবন দর্পণে’ উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।

১৯৪৬ সালের ১ জুন থেকে চালুকৃত চাঁদপুর কলেজের বেসরকারি পর্যায়ের ৩৩ বছর নয় মাস সময়ে অধ্যক্ষ ছিলেন ৫ জন। এঁদের মধ্যে দবির উদ্দিন আহমেদ কলেজের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সময় অর্থাৎ ১২ বছর ১ মাস ৮দিন অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ চাঁদপুর কলেজ সরকারি হলে ৯ মাস ১০ দিনের মাথায় (১১/১২/১৯৮০) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বদলি হয়ে এ.ডব্লিউ.এম তোয়াহা মিয়া অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন এবং একটানা ৮ বছর ২ মাস ১৫ দিন (২৬/০২/১৯৮৯ পর্যন্ত) দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন চাঁদপুর কলেজেরই প্রাক্তন কৃতী ছাত্র। ১৯৫০ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় সপ্তদশ (১৭তম) হয়ে আইকম পাস করেন। তিনি এতোটাই সৌভাগ্যবান যে, উক্ত পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনের ৩০ বছর পর ১৯৮০ সালে একই কলেজের সরকারি পর্যায়ের প্রথম অধ্যক্ষ হতে পেরেছেন এবং তাঁর উত্তরসূরি ১১ জন অধ্যক্ষের চেয়ে সর্বাধিক সময় দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ইতিহাস লিখতে গেলে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ পরেশ চন্দ্র গাঙ্গুলীর নাম যতোটা অনিবার্যতায় উল্লেখ করতে হবে, ঠিক অনুরূপভাবে এ কলেজের সরকারি পর্যায়ের প্রথম অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.ডব্লিউ.এম. তোয়াহা মিয়ার নামও উল্লেখ করতে হবে। তিনি তাঁর কর্মকালের শেষ দিকে ১৯৮৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর কলেজ প্রতিষ্ঠার ৪২ বছর পূর্তিতে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম পুনর্মিলন উৎসব আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতিতে চাঁদপুর শহরে নানা কারণে কিছু করা যায় নি। তবে এটা জেনে ভালো লাগলো যে, ফরিদগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা সরখালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০০৫ সালে। এ পাঠাগারের উদ্যোগে সম্প্রতি ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ করাতেই বস্তুত অধ্যক্ষ তোয়াহা মিয়ার নামটি স্মরণ করার সুযোগ হয়েছে। উদ্যোগটি ছোট হতে পারে, তবুও একজন শিক্ষাবিদকে স্মরণ করার জন্য এটা কম কিসের। আমরা অধ্যক্ষ এ.ডব্লিউ.এম. তোয়াহা মিয়া স্মৃতি পাঠাগারের দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং ধারাবাহিক কর্মকা- প্রত্যাশা করছি। সাথে সাথে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়