প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
গত সোমবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় ‘মতলব উত্তরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বৃদ্ধার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু’ শীর্ষক সংবাদটি পড়ে সচেতন ও সংবেদনশীল পাঠক মাত্রেরই মন খারাপ হয়েছে।
এ সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, গত রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মাজেদা বেগম (৭৫) নামে এক বৃদ্ধা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুর ১১ দিন পূর্বে ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে তিনি মতলব উত্তর উপজেলাধীন ১২নং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের সরকার বাড়িতে তার মেয়ে নাসরিন বেগম (৫৫)কে প্রতিপক্ষের সশস্ত্র হামলা থেকে বাঁচাতে গেলে হামলাকারী মুস্তাকিন সরকার ও তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম কর্তৃক ব্যাপক মারধরের শিকার হন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ হামলায় মাজেদা বেগম ও তার কন্যা নাসরিনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে নিকটজনেরা চাঁদপুর জেলা সদরস্থ সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গিয়েও মুস্তাকিন সরকার গং তাদের ওপর দ্বিতীয় দফা হামলা করেন। জানা যায়, মুস্তাকিন সরকার গং এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় দফায় দফায় প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালান। তাদের হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েও আহতরা নিরাপদ বোধ করেন না।
মুস্তাকিন সরকার হচ্ছে মৃত আঃ রাজ্জাক সরকারের পুত্র। তাদের সাথে একই বাড়ির প্রতিবেশী ইউনুস সরকার ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগমের সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ ক’টি সালিস-দরবার হয়েছে এবং আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে। কেনো এই সম্পত্তিগত বিরোধ এ সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে, প্রায় ৪-৫ বছর পূর্বে মুস্তাকিন সরকার তাদের বাড়ির জমিতে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেন। এ বিল্ডিংটি প্রতিবেশী ইউনুস সরকারের জমির ওপর নির্মিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন, যে দাবিটি সার্ভেয়ার কর্তৃক জমির পরিমাপে সত্য বলে প্রমাণিত হয়। তখন বিল্ডিংটি সরিয়ে নেয়ার কথা উঠলেই মুস্তাকিন সরকার ও তার পরিবারের সদস্যগণ ইউনুস সরকারের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের রক্তাক্ত জখম করেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুস্তাকিন সরকার তাদের নির্মিত বিল্ডিংয়ের পাশে বিরোধপূর্ণ জমিতে মাটি কেটে বেড়া দিয়ে জোরপূর্বক দখল করতে গেলে ইউনুস সরকারের স্ত্রী নাসরিন বেগম তাতে বাধা দেন। এতে মুস্তাকিন সরকার গং উত্তেজিত হয়ে নাসরিন বেগম ও তার মাকে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহতাবস্থায় তারা চিকিৎসা নিতে ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরবর্তী চাঁদপুর জেলা সদরস্থ সরকারি জেনারেল হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানেও মুস্তাকিন সরকার গং কর্তৃক দ্বিতীয় দফা উপর্যুপরি হামলার শিকার হন। এ হামলার ধকল নাসরিন বেগম কিছুটা সামলাতে পারলেও তার বৃদ্ধা মা মাজেদা বেগম আর পারেন নি। সেজন্যে তিনি ২০ ফেব্রুয়ারি চিরতরে চোখ বুঁজে প্রতিপক্ষের সম্ভাব্য(!) আরো হামলা থেকে নিজেকে নিরাপদ(!) দূরত্বে নিয়ে যান।
মুস্তাকিনের নামের শেষে বংশগত পদবী সরকার আছে বলেই কি তিনি নিজেকে সরকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন, না তার খুঁটির জোর অন্য কোথায় সেটা মতলব উত্তরের গণমাধ্যম কর্মীদের অনুসন্ধান চালিয়ে স্পষ্ট করা দরকার বলে আমরা মনে করি। যতো বড় ক্ষমতার অধিকারী ও প্রভাবশালী হোক না কেনো, মুস্তাকিন সরকার গং সম্পত্তিগত বিরোধে প্রতিবেশীর ওপর উত্তেজনাবশত বার বার হামলা চালাতে পরেন, তাই বলে দূরবর্তী/নিকটবর্তী হাসপাতালে গিয়েও উপর্যুপরি হামলা চালাতে পারেন না। আমরা এ ব্যাপারে মতলব উত্তর থানা পুলিশসহ পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট নির্যাতিতের পক্ষে সর্বোচ্চ আইনগত সহায়তা প্রত্যাশা করছি।