প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
গতকাল ছোট্ট একটি বিষয় নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘ফরাক্কাবাদ বাজার মোড়ে একটি অবৈধ দোকানে থেমে আছে এলজিইডির সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ’। শিরোনামেই আন্দাজ করা যায় সংবাদের গর্ভে কী আছে।
ফরাক্কাবাদ বাজার হচ্ছে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফরাক্কাবাদের বিশেষ ও বহুল পরিচিতি হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর কারণে। এ বাজারের অদূরেই অবস্থিত তাঁর পৈতৃক বাড়ি। এছাড়া বাজার সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ ও পুরানো মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফরাক্কাবাদ হাই স্কুল। এ বাজারের মোড় থেকে বালিয়া বাজার পর্যন্ত বিদ্যমান সড়ক প্রশস্ত করার জন্যে এলাকাবাসী ও বাজার ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেমতে চলতি অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়কটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে এ কাজ পুরোদমে শুরু হয়। কিন্তু ফরাক্কাবাদ বাজারের চৌরাস্তা এলাকায় একটি অবৈধ দোকানের কিছু অংশের কারণে ডিজাইন অনুযায়ী সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ করা যাচ্ছে না। ওই অবৈধ দোকানের মালিক পক্ষ পেশী শক্তি ব্যবহার করে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এতে করে বাজারের অন্য সকল ব্যবসায়ী এবং এলাকার সচেতন মহলসহ সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ফরাক্কাবাদ বাজারের পশ্চিম দিকের সড়কের দুপাশের ব্যবসায়ীরা সড়কটি প্রশস্তকরণের প্রয়োজনে তাদের দোকানের সামনের জায়গা ছেড়ে দিলেও চৌরাস্তার মুখে একটি অবৈধ দোকানের মালিক কোনোভাবেই জায়গা ছাড়ছে না। এই মালিক হচ্ছেন মৃত আঃ খালেক তপাদারের ছেলেরা। তারা তাদের অবৈধ দোকানের সামান্য অংশ কিছুতেই সরাচ্ছে না। এজন্যে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ বন্ধ আছে। এতে বিক্ষুব্ধজনদের বক্তব্য হচ্ছে : এমনটি হতে পারে না। সড়ক প্রশস্ত হলে দু পাশের ব্যবসায়ীরাই সুবিধা ভোগ করবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সড়ক প্রশস্ত ও সোজা করার জন্যে অবৈধ দোকানের কিছু অংশ সরানোর কোনো বিকল্প নেই।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, আমরা সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রাখতে অবৈধ দোকানের কিছু অংশ সরিয়ে নিতে বলেছি। এ ব্যাপারে তারা একমাস সময় চেয়েছেন। কিন্তু ততক্ষণ সরকারি কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলবো।
ফরাক্কাবাদ বাজারের চৌরাস্তায় আলোচিত দোকানটিকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সকলেই অবৈধ বলছেন। যেখানে অবৈধ হওয়ার কারণে দোকানটি পুরোপুরি উচ্ছেদ করাই ঔচিত্যের পর্যায়ে পড়ে, সেখানে সেটি না করে দোকানের কিছু অংশ সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে ছেড়ে দেয়ার জন্যে অনুরোধ-উপরোধের মানে কী হতে পারে সেটা প্রায় সকলেরই মাথায় ঢোকে না। নিশ্চয়ই অবৈধ দোকানের মালিকদের শিনাজুরিমূলক ক্ষমতাকে স্বয়ং ইউপি চেয়ারম্যানসহ ফরাক্কাবাদ বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল সমীহ করছেন। কথা হলো, তারা এমন ক্ষমতা দেখানোর সাহস পায় কীভাবে? তাদের খুঁটির জোর কোথায়? আমরা মনে করি, এমন ক্ষমতার উৎসকে আঘাত করতে এবং খুঁটিকে উপড়ে ফেলতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেয়া অতীব জরুরি।