প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২১, ০০:০০
করোনাকালে চুরি-ডাকাতি প্রসঙ্গে
আমাদের পুলিশ, বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনী করোনায় দেশের সর্বোচ্চ ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে-ময়দানে ব্যস্ত। তাদের এই ব্যস্ততা দেখে এক শ্রেণীর অপরাধী খুন, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। এরা ভেবেছে, করোনা থেকে মানুষ বাঁচাতে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সামরিক-আধা সামরিক বাহিনী অধিক মনোযোগী, অতএব আমরা বেশি মনোযোগ দেই আমাদের অপরাধ কর্মে। বস্তুত এদের এমন ভাবনা কিংবা অন্য কারণে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা হলেও অবনতি ঘটেছে। খুনের পর খুন, চুরির পর চুরি এবং ডাকাতিপ্রবণ এলাকা ফরিদগঞ্জে ডাকাতিও হয়েছে।
|আরো খবর
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘ফরিদগঞ্জে দুই বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ ॥ আহত ২’ শীর্ষক সংবাদে লিখা হয়েছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে ৫-৬ জনের ডাকাত দল রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসা গ্রামে ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদের বাসার কলাপসিবল গেট ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার সময় তোফায়েল আহমেদ বাধা দেন। এতে ডাকাতরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে জখম করে। তার ডাক-চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। এদিকে একই গ্রামের বেপারী বাড়িতে জনৈক তাহেরের ঘরেও একই কায়দায় প্রবেশ করতে গেলে ডাকাত দল বাধার সম্মুখীন হয়। এতে ডাকাতদের হামলায় সাইফুল ইসলাম রকি নামের এক যুবক আহত হয়। তবে তার ডাক-চিৎকারসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজনের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত তোফায়েল ও সাইফুল ইসলামকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া একই রাতে ওই ইউনিয়নের গাব্দেরগাঁও গ্রামের স্বপন পাটোয়ারী, লিটন মেম্বারের বাড়ির সাহেম, হারুন, জমাদার বাড়ির মামুন ও মাইকের বাড়ির খোরশেদের ঘরে চুরির ঘটনা ঘটে।
একই রাতে একই ইউনিয়নে দুটি ডাকাতি ও ৫টি চুরির ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। দুর্বৃত্তরা পরিকল্পনা ও রেকি ছাড়া এমন কাজ করতে পারে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন না। এর মধ্য দিয়ে উক্ত ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোথাও যে ফাঁক রয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পুলিশের করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ আনুষঙ্গিক নানা কাজে ব্যস্ততা থাকা স্বাভাবিক। ‘জনতাই পুলিশই, পুলিশই জনতা’ এমন প্রতিপাদ্যে পুলিশকে অধিকতর জনসম্পৃক্ত ও জনবান্ধব করার উদ্যোগ হচ্ছে কমিউনিটি পুলিশিং। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের সামগ্রিক কাজের গতিশীলতায় বিট পুলিশিং-এর তোড়জোড়ও চলছে। তারপরও খুন, চুরি-ডাকাতিসহ অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়াটা উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, পুলিশের ওপর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের একক চাপ কমাতে কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং জোরদার করা অতীব জরুরি। বিষয়টি আইজিপি মহোদয় ও পুলিশ সুপারের ভালোভাবে ভেবে দেখাটা বিশেষ গুরুত্বের আওতায় পড়ে।