প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
ঘাট আছে অনেক, মাঠ নেই তেমন
দেশের অন্যতম বৃহৎ নদী মেঘনাই শুধু চাঁদপুর শহরকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বা সমৃদ্ধ নদী বন্দর বানায়নি, ডাকাতিয়া নদীরও রয়েছে অনেক বড় অবদান। চাঁদপুর শহরটিকে বিভক্ত করে ডাকাতিয়া নদীর অবস্থান তুলনামূলক স্থির হওয়ায় এ নদীকে কেন্দ্র করেই চলে নদী বন্দরের প্রধান কার্যক্রম। এ নদীর উত্তর পাশে নূতনবাজার এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে পুরাণবাজার এলাকা। এ দুটি এলাকাতেই ডাকাতিয়ার তীরে গড়ে উঠেছে দুটি জুট মিল, বহু অটো রাইচ মিল, লবণ মিল, ডাল মিল, ওয়েল মিলসহ বহু শিল্প কারখানা। এছাড়া শহরের ৩টি বড় বাজার যথাক্রমে পুরাণবাজার, পালবাজার, নূতনবাজারসহ সার, গৃহনির্মাণ সামগ্রীর দোকান, ডক ইয়ার্ড ইত্যাদি রয়েছে ডাকাতিয়ার দু তীরে। সেজন্যে এ শহরে রয়েছে বহু ঘাট। যেমন-১নং ঘাট, ২নং ঘাট, স্টিমার ঘাট, কয়লা ঘাট, ৫নং ঘাট, চৌধুরী ঘাট, প্রেসক্লাব ঘাট, মুখার্জী ঘাট, জুট মিল ঘাট, লন্ডন ঘাট ইত্যাদি।
|আরো খবর
চাঁদপুর শহরের নূতনবাজার ও পুরাণবাজারের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে ডাকাতিয়া নদীর ওপর আঃ আউয়াল সেতু নির্মাণ করা হলেও নদীর এতোসব ঘাটের গুরুত্ব কমেনি। কেননা এ ঘাটগুলো ব্যবহার করেই চলে নদী বন্দরের কার্যক্রম। বলা যায়, নদী বন্দরের ব্যস্ততা বা গতিশীলতা আবর্তিত হয় এ ঘাটগুলোকে কেন্দ্র করেই। অথচ কিছু ঘাটে নেই ন্যূনতম অবকাঠামো। এমন একটি ঘাট হচ্ছে প্রেসক্লাব ঘাট। শীত বা শুষ্ক মৌসুমে এ ঘাটের উত্তর পাশে ডাকাতিয়া নদীর ফোরশোর ল্যান্ডে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সমতল মাঠে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নদীপ্রেমী, প্রকৃতিপ্রেমী সকল শ্রেণীর মানুষের যে ভিড় হয় এবং নৌকা ভাড়া করে নৌভ্রমণ হয়, তাতে নৌকাতে বা অন্য নৌযানে ওঠানামার নিরাপদ ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার। প্রেসক্লাব ও পৌর পাঠাগারের মাঝখানে বিদ্যমান ছোট্ট সড়কটিকে দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারিত করে এমন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার উদ্যোগ বা প্রকল্পগ্রহণ জরুরি।
এতোসব ঘাটের চাঁদপুর শহরে নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। চাঁদপুর কোর্ট স্টেশনের পশ্চিম পাশে চৌদ্দ কোয়ার্টারের সামনে বিদ্যমান পুরানো খেলার মাঠটি ছোট-বড় গর্ত করার কারণে এবং কিছু মানুষের ভূমিদস্যুতার কারণে পুরো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। হাসান আলী সরকারি হাই স্কুল মাঠ এখন অসংখ্য কাপড়সহ অন্যান্য পণ্য ব্যবসায়ীর ভ্যান, চটপটির দোকান, বিভিন্ন ধরনের গাড়ি পার্কিংয়ে ক্রমশ দখল হওয়ার পথে। এখানে স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ক্রিকেট, ফুটবল খেলাও খেলতে পারে না শিশু-কিশোররা। মাঠটি দখলদারিত্বের ব্যাপারে হাসান আলী সরকারি হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ কার্যত নির্বিকার।
এভাবে চাঁদপুর শহরের পৌর পার্ক মাঠসহ আরো কিছু মাঠের কথা লিখা যাবে, যেগুলোতে এক সময় খেলা হতো, এখন উপযোগিতা নেই বলে তেমন খেলা হয় না। এ ব্যাপারে কারো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। তাই বলছি, আঃ আউয়াল সেতু নির্মাণের পরও ডাকাতিয়া নদীর ঘাটের ব্যবহার কমলেও একটিও বিলুপ্ত না হবার তৃপ্তিতে ভুগলে চলবে না, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে বিলুপ্ত মাঠ পুনরুদ্ধার, মাঠ রক্ষা ও নূতন মাঠ সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করতেই হবে।