বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

অভিভাবকদের নিয়ে অকপট সত্যোচ্চারণ প্রসঙ্গে
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশে অভিভাবকরা তাদের সন্তান ও পোষ্যদের শিক্ষার ব্যাপারে অতীতের সকল সময়ের চেয়ে বেশি সচেতন-এটা বলার বহু কারণ আছে। অভিভাবকরা প্রায় সকলে শিশু শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়েই কেবল আনা-নেয়া করে না, মাধ্যমিকে পড়–য়াদের ব্যাপারেও কিছু অভিভাবক একই কাজ করেন। এছাড়া প্রাইভেট ও কোচিং, গানের ক্লাস, নাচের ক্লাস, আর্টের ক্লাসেও অভিভাবকরা তাদের সন্তান/পোষ্যদের আনা-নেয়া করেন এবং কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। পরীক্ষা হলে তো কথাই নেই। পরীক্ষা হলের সামনে অভিভাবকদের উদ্বেগময় অবস্থান চোখে পড়ার মতো। সুযোগ পেলে কেউ কেউ সন্তানকে অবৈধ সুযোগ পাইয়ে দিতে কিংবা প্রভাবিত করতে কাজ করেন। কোনো কিছুর প্রতিযোগিতা হলে অভিভাবক বিশেষ করে মায়েরা তাদের সন্তান/পোষ্যদের নিয়ে ভেন্যুতে যান। সন্তান/পোষ্যরা প্রতিযোগিতায় হেরে গেলে কিছু অভিভাবক বেপরোয়া হয়ে যান। তারা আয়োজকদের প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস চালান। কখনো যৌক্তিক প্রতিবাদ জানান, আবার অহেতুক প্রতিবাদ করেন বা ঝামেলা বাঁধান। কোনো কোনো অভিভাবক তো অবৈধ পন্থায় প্রতিযোগিতায় তাদের সন্তান/পোষ্যকে জিতিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আয়োজকদের প্রস্তাব দেন, প্রভাবশালী কাউকে দিয়ে ফোন করান, সুপারিশ করান।

অধিকাংশ অভিভাবক তাঁর সন্তান/পোষ্যকে যে করেই হোক ক্লাসে মেধাস্থান প্রাপ্তি, পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তি, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টিতে খুবই সিরিয়াস। এজন্যে তারা যতো কিছু করা দরকার, তা-ই করার জোর চেষ্টা চালান। শিক্ষা সনদ প্রাপ্তির বাইরে সন্তানকে ধর্মীয় বা নৈতিক শিক্ষায় প্রকৃত মানুষ করার ব্যাপারে সিরিয়াস হওয়া তো দূরের কথা, ন্যূনতম আগ্রহীও হয় না।

অভিভাবকদের আচরণ নিয়ে অতি সম্প্রতি এক সমাবেশে অকপট সত্যোচ্চারণ করেছেন চাঁদপুর জেলার অন্যতম সেরা স্কুল হাসান আলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা সাফি বন্যা। তিনি বলেছেন, করোনাকালীন আমাদের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিদিন যোগাযোগ রেখেছেন এবং বাসা-বাড়ি গিয়ে অ্যাসাইনমেন্টের খাতাগুলো পৌঁছে দিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যেনো পাঠক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। অ্যাসাইনমেন্টের অনেক খাতা দেখে অবাক হয়ে যাই। কেননা খাতার লেখার সাথে শিক্ষার্থীর হাতের লেখার কোনো মিল নেই। এতেই বুঝা যায় অভিভাবকরা সন্তানদের প্রতি কতোটা যতœশীল। যে খাতায় শিক্ষার্থী লিখবে, সেই খাতায় অভিভাবকরা লিখে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এতে বস্তুত আপনাদের সন্তানদের মিথ্যা বলা শিখিয়েছেন।

নিশ্চিত খুঁটির জোর আছে বলেই একজন প্রধান শিক্ষক কিছু অসাধু অভিভাবক সম্পর্কে অকপটভাবে এতোটা সত্যোচ্চারণ করলেন। তাঁর এই জোর কি রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো শক্তির বলে?-মনে হয় না। আমরা বিশ^াস করি, তিনি ব্যক্তিগত নৈতিক শক্তির জোরেই এমন তিক্ত কঠিন উচ্চারণ করেছেন। এজন্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক ধনাঢ্য, ক্ষমতাধর, প্রভাবশালী ধরনের কিছু অভিভাবকের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন, কেউ কেউ অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নেন। তাদের মাথা হেঁট হয়ে থাকে বলে এরা সত্যোচ্চারণে দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন। এমনটি মোটেই প্রত্যাশিত নয় এবং সুশিক্ষার স্বার্থে কল্যাণকর নয় বলে মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়