বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:১৭

সর্বত্র আর্মি লিটনের মতো বিদ্যোৎসাহী দরকার

অনলাইন ডেস্ক
সর্বত্র আর্মি লিটনের মতো বিদ্যোৎসাহী দরকার

হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের ব্লু মুন ক্যাফেটেরিয়ার স্বত্বাধিকারী মো. হোসেন মোল্লা লিটন ওরফে আর্মি লিটনের দেওয়া শিক্ষা উপকরণ পেয়েছে সাড়ে ৩শ’ শিক্ষার্থী। অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আর্মি হোসেন লিটন বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। প্রতিটি শিক্ষার্থীর মাঝে ৯৫ টাকা মূল্যমানের বসুন্ধরার ৪টি বাঁধাই খাতা, কলম ও পেন্সিল বিতরণ করা হয়। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিদ্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান। সহকারী প্রধান শিক্ষক সুমন দাসের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জুয়েল রানা তালুকদার এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক অভিভাবক সদস্য হোসেন মোল্লা লিটন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ গ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা উপকরণ গ্রহণকারী দশম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আংকেল (আর্মি লিটন) বিদ্যালয়ে আমাদের সবসময় সহযোগিতা করে থাকেন।

উল্লেখ্য, আর্মি লিটন তার পেনশনের পুরো টাকা এবং ব্লু মুন ক্যাফেটেরিয়ার লাভের পুরো অংশ ব্যয় করেন দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে। তিনি অবসরে আসার পর থেকে নিজ এলাকার গরিব, অসহায় পরিবারসমূহকে সহযোগিতা করে আসছেন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োজনমত গাইড বই, প্রাইভেট খরচ, ফরম পূরণের টাকা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে আসছেন।

আর্মি লিটন কতোটুকু বিত্তবান সেটা জানা না গেলেও তিনি যে অনেক বড়ো চিত্তবান সেটা উপরের সংবাদ বিবরণী থেকে জানা গেলো। তিনি তাঁর পেনশনের টাকা ও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণসহ নানা কল্যাণে ব্যয় করছেন জেনে যে কোনো কল্যাণবুদ্ধ মানুষেরই ভালো লাগার কথা। আমরাও তার ঊর্ধ্বে নই। আমাদের সমাজে যেখানে অনেক মুসলিম বিত্তবান হিসেব করে জাকাতের টাকা সুষ্ঠুভাবে পরিশোধ করে না, সেখানে আর্মি লিটনের কল্যাণমূলক কাজে এতোটা উদারতা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। এ রকম লোক প্রতিটি বিদ্যালয় এলাকায় থাকলে শিক্ষা উপকরণের অভাবে কোনো দরিদ্র শিক্ষার্থী ভুগবে না, পরীক্ষার ফি পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হবে না।

প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, আমাদের দেশে যেভাবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের গড়পরতা মেধাবী হিসেবে ধরে নিয়ে একের পর এক সংবর্ধনা এবং সরকারি-বেসরকারি বৃত্তি প্রদান করা হয়, তাতে অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীর সংগ্রামমুখর শিক্ষাজীবন ঢাকা পড়ে যায়। যারা বিত্তবান/চিত্তবানদের ন্যূনতম সহযোগিতা, প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র তহবিল (পুওর ফান্ড)-এর অনুদান এবং যে কোনো ধরনের সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়। এর ফলে প্রণোদনাহীনই থেকে যায় অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী। পরিণতিতে এমন শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা হারিয়ে যায়, এমনকি শিক্ষাজীবন থেকে ঝরেও পড়তে হয়। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা যখন দেখা যায়, তখন পর্যবেক্ষকদের দুঃখবোধ হয়। সেজন্যে দরিদ্র মেধাবী ও সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের যে কোনো ধরনের সহযোগিতা প্রাপ্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা থাকা বাঞ্ছনীয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়