সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৬

মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নীতিতে যুবদলের কমিটি, আরো কিছু করা যায় কি?

অনলাইন ডেস্ক
মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নীতিতে যুবদলের কমিটি, আরো কিছু করা যায় কি?

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারস্থ পৌর ২নং ওয়ার্ড যুবদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সম্পূর্ণভাবে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নীতির ভিত্তিতে। শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কমিটি ঘোষণা করেন চাঁদপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক শাহাজাহান কবির খোকা ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার। নবঘোষিত কমিটির প্রতিটি সদস্যের রক্ত ও ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করে মাদকমুক্ত থাকার প্রমাণস্বরূপ তাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ কমিটিও একই নীতিতে গঠিত হবে। আংশিক কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবুল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মো. সুমন গাজী। এছাড়া আরও ১৭জন বিভিন্ন পদে মনোনীত হয়েছেন। পৌর যুবদলের পক্ষ থেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংগঠনকে সুসংগঠিত ও দায়িত্বশীল করতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

চাঁদপুর কণ্ঠের বয়স ৩১ বছর এক মাস ১০দিন পেরিয়ে গেছে। আমাদের মনে পড়ে না, এ দীর্ঘ সময়ে আমরা যুবদল কেনো, অন্য কোনো দলের মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নীতিতে গঠিত কোনো কমিটির খবর প্রকাশ করেছি। সেজন্যে এমন খবর বিরল ও ব্যতিক্রমই বলতে হয়। তিক্ত হলেও সত্যের খাতিরে বলা দরকার যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের আলোকে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের কমিটির সদস্যদের কেউ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দস্যুতা সহ অন্য কোনো অপরাধে জড়িত কিনা সেটা জেনে নিলে আরো ভালো হয়, তবে সেটা কতোটুকু সম্ভব সে বিষয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে। কিন্তু সাধারণ্যে গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয়ের টুলস আবিষ্কার করে রাজনৈতিক দলগুলো যদি সেগুলো অবলম্বন করে, তাহলে সেটা রক্ত ও ডোপ টেস্ট এবং গোয়েন্দা রিপোর্টের চেয়েও ভালো কিছু উপহার দিতে পারে বলে আমাদের ধারণা। উপরোল্লিখিত কথাগুলো বলার জন্যে বলা, ভালো কিছুতে প্রত্যাশার শেষ নেই বলে অনেকটা অত্যুক্তি করা। সর্বোপরি এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত নীতিতে পুরাণবাজারে যুবদলের কমিটি গঠনের প্রয়াস দৃষ্টান্তমূলক। এমনটি চাঁদপুরের সর্বত্র সহ দেশের সর্বত্র হোক-এটা আমরা প্রত্যাশা করি।

প্রমঙ্গক্রমে বলা দরকার, আমাদের দেশে বড়ো বড়ো রাজনৈতিক দলগুলোর একটা প্রবণতা দৃষ্টিকটু, সেটা হচ্ছে দু/তিন বছরের জন্যে কমিটি গঠন করে সে কমিটিকে পাঁচ থেকে দশ বছর চালিয়ে নেয়া এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা না করা। এতে দলের ভেতরে নেতৃত্বের প্রশ্নে কোন্দল, গ্রুপিং সৃষ্টি হয়, নিজেদের মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হয়, দল ভারী করতে সন্ত্রাসী/মাস্তান/ মাদকসেবী চরম উচ্ছৃঙ্খল লোকজনকে দলে ভিড়ানো হয়, যেটা দলের ঊর্ধ্বতন মহল নিয়ন্ত্রণ বা নিরসন না করে কেবল চেয়ে চেয়ে দেখে এবং বিবদমান গ্রুপ থেকে নানা ফায়দা লুটে। এটা অনেক বড়ো ধরনের অপরাধ কিংবা অনিয়মকে লালন করার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। সেজন্যে এমন প্রবণতা রোধ করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাঁচ/ দশ বছর পর সম্মেলন করেও সেটাকে দ্বিবার্ষিক/ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন বলে চালিয়ে দেয়ার রীতি বন্ধ করতে হবে। সৎ, ত্যাগী ও আদর্শবান নেতাদের যোগ্য অধিষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। তবেই রাজনৈতিক দলগুলোর সুন্দর ও সাধারণ্যে গ্রহণযোগ্য রূপ তৈরি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বাহুল্য হলেও বলতে হয়, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নীতিতে পুরাণবাজারে গঠিত যুবদলের কমিটিও যদি ভবিষ্যতে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে বছরের পর বছর পার করে দেয়, তাহলে চমক সৃষ্টিকারী এ কমিটির লোকজনকে একদিন বদনামের ভাগীদার হতেই হবে-এটা স্পষ্টতার সাথেই আগাম বলে দেয়া যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়