রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৮

কাকতালীয়-ঠিক এক বছর পর পূবালীর পর জনতা!

অনলাইন ডেস্ক
কাকতালীয়-ঠিক এক বছর পর পূবালীর পর জনতা!

২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল চাঁদপুর মডেল থানায় আকবর হোসেন লিটন কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, চাঁদপুর শহরের নূতনবাজারস্থ পূবালী ব্যাংকের ম্যানেজার শ্রীকান্ত নন্দী গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন। যিনি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, সম্ভবত তিনি দেশত্যাগ করে ভারত পাড়ি দিয়েছেন। ঠিক এক বছর পর চলতি ২০২৫ সালের ১৩ এপ্রিল শাহরাস্তি মডেল থানায় জনতা ব্যাংক সূচীপাড়া শাখার ম্যানেজার কার্তিক চন্দ্র ঘোষ কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. জাবেদ হোসাইন কয়েকটি একাউন্টে ৮৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮১৪ টাকা আত্মসাতের জন্যে হস্তান্তর করেছেন। পরদিন সোমবার (১৪ এপ্রিল ২০২৫) পুলিশ জাবেদ হোসাইনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এর ফলে আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার ও অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। এই ঘটনায় টাকার অংক কম হলেও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই ব্যাংকের আরেক সিনিয়র অফিসার রাকিবুল হাসানের আত্মহত্যার ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ ও শোক দুটোই সঞ্চারিত হয়েছে। এতে এক বছর আগে পূবালী ব্যাংকের কেলেঙ্কারিকে শাহরাস্তির জনতা ব্যাংকের কেলেঙ্কারি যেন ছাপিয়ে গেছে।

পূবালী ও জনতা ব্যাংক দুটোই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে পূর্বে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত । তারা নিশ্চয়ই প্রাইভেট ব্যাংকের চেয়েও ব্যাংক ও গ্রাহকের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব ও নিশ্চয়তা দেয়। কথা সেখানে নয়, কাকতালীয়ভাবে ঠিক এক বছরের ব্যবধানে চাঁদপুর জেলার এই দুটি ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাধারণ্যে এই দুটি ব্যাংকের ইমেজ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, যা সহজে কেটে যাবার মতো নয়।

পূবালী ব্যাংকের ম্যানেজার পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। তবে শাহরাস্তির জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা জাবেদ হোসাইন আটক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার আশানুরূপ অগ্রগতি প্রত্যাশা করা যায়। তিনি সহকর্মী সিনিয়র অফিসার রাকিবুল হাসানকে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার শাস্তি তো দু রকম হবে নিঃসন্দেহে।

ব্যাংকাররা বৈধভাবে অন্যান্য চাকুরিজীবীর চেয়ে তুলনামূলকভাবে অধিক আর্থিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করেন। স্বল্প সুদে লোন নিয়ে বাড়ি করেননি কিংবা ফ্ল্যাট বা প্লট কিনেন নি এমন ব্যাংক কর্মকর্তা অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সেই কর্মকর্তাদের কারো কারো অতি লোভে বিপথগামী হওয়াটা অতি লোভে তাঁতী নষ্ট হবার মতোই। এজন্যে ব্যাংকার মাত্রকেই নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান হবার আবশ্যকতা যেনো সময়ের দাবিতে পরিণত হচ্ছে।

আমরা এক বছরের ব্যবধানে চাঁদপুর জেলায় পূবালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকে সংঘটিত কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে অন্য সকল ব্যাংককে সতর্কতা-সাবধানতা অবলম্বনের তাগিদ আহরণ করার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করতে চাই। ব্যাংকগুলোর জেলা বা অঞ্চল প্রধানদের মনিটরিং/তীক্ষè নজরদারিতে আর কোনো ব্যাংকের শাখা যাতে কোনো ধরনের কেলেঙ্কারিতে না জড়ায় সেদিকে মনোযোগী হতে বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানাতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়