মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৬

প্রসঙ্গ : চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ

পীযূষ কান্তি বড়ুয়া
প্রসঙ্গ : চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ

যে কোনো জনপদ ব্র্যান্ডিং করতে গেলে বেশ ক’টি উপাদান দরকার হয়। তার মধ্যে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন আছে, তেমনি মানবসৃষ্ট উপাদানের গুরুত্বও উল্লেখযোগ্য। আজ ভারতবর্ষকে যে সকল কারণে পৃথিবী জানছে ও পর্যটকরা আসছেন, তার অন্যতম কারণ হলো সম্রাট শাহজাহান নির্মিত আগ্রার তাজমহল। মানবসৃষ্ট ব্র্যান্ডিং উপাদানের ক্ষেত্রে তা হতে পারে খাদ্য, যেমন কুমিল্লার রসমালাই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, মতলবের গান্ধীঘোষের ক্ষীর ইত্যাদি। হতে পারে তা পার্ক কিংবা রিসোর্টের মতো। যেমন : মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র কিংবা হবিগঞ্জের দ্যা প্যালেস বা নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্ক। তেমনি করে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চিকিৎসা কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে ভুবনবিখ্যাত, যা সংশ্লিষ্ট জনপদকে ব্র্যান্ডিং করতে পারে চরম উৎকর্ষে। এক নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে পাটনাকে ভুবনবিখ্যাত করে তুলেছে তা সত্যি বিরল। মানুষ আজও তক্ষশিলার কথা ভোলেনি। আবার চিকিৎসার জন্যে গ্রামের সহজ সরল মানুষটাও জানে ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের কথা।

ইলিশের বাড়ি বলে খ্যাত জনপদ চাঁদপুরকে কেবল ইলিশ দিয়ে ব্র্যান্ডিং করা আসলে দুরূহ। কারণ ইলিশ আজকাল কমে আসছে মেঘনায়। পাশাপাশি অনেক জেলা ইলিশ নিয়ে টানাটানিও করছে। একজন সম্মাননীয় উপদেষ্টাও ইলিশের দাবি করে বসলেন। তাই দূরদর্শী ভাবনা থেকে এ কথা বলতেই হয়, ইলিশকে মুখ্য রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত। কেননা জেলা ব্র্যান্ডিং সুনিশ্চিতভাবেই উন্নয়নের একটি সামগ্রিক প্ল্যাটফর্ম। ইতোমধ্যেই চাঁদপুরে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও একটি পাবলিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় চাঁদপুরকে জাতীয়ভাবে সমীহ করার ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে। মোডিকেল কলেজকে কেন্দ্র করে একটি টার্শিয়ারি হাসপাতাল যদি বাস্তবতার মুখ দেখে তবে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থান খুব দ্রুত পরিবর্তিত হবে।

একটি সংবাদ আজ (রোববার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলাম। দৈনিক ইত্তফাকের বরাতে জানা গেলো, যে ছয়টি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে তার মধ্যে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের নামও আছে। নিজের জনপদে একটা সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা চাট্টিখানি কথা নয়। আর একটা মেডিকেল কলেজ খুব সহজে পূর্ণাঙ্গতা পায় না। এমনিতেই নদী ভাঙ্গনের কারণে চাঁদপুরে যথেষ্ট অধিগ্রহণযোগ্য ভূমির অপ্রতুলতা আছে। তারপরও মেডিকেল কলেজের জন্যে ভূমি অধিগ্রহণে সবার সহযোগিতা করা উচিত। কারণ দলমত নির্বিশেষে একটি মেডিকেল কলেজ একটি জেলার সম্পদ। যত দ্রুত মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস নিজের রূপে দৃশ্যমান হবে ততই জেলাবাসী ও সন্নিহিত অঞ্চলের মানুষের লাভ। তাই মেডিকেল কলেজটিকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে টিকিয়ে রাখতে হবে জেলার স্বার্থে। পারস্পরিক বিরোধিতা পরিহার করে, ছিদ্রান্বেষণের প্রবণতা জলাঞ্জলি দিয়ে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজকে পূর্ণাঙ্গতা দিতে হবে ইলিশের বাড়ির সত্যিকারের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়