প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১১
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি মিশর আসলো কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা নিয়ে
বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধনকৃত 'হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ' নামের একটি মানবিক সেবা সংস্থা ১কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা বিতরণ শুরু করছে মিশরে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের মাঝে। শনিবার (২৩শে নভেম্ভর) সন্ধ্যায় রাজধানী কায়রোর আব্বাসিয়া বুর্জ আল থাতবিকিন সম্মেলন কক্ষে ২শতের অধিক ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের মাঝে ১৫দিনের খাবার, শীতের কম্বল, শিশুদের খেলনা ও চকলেট বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। এতে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজ।
তাছাড়াও দূতাবাসের কাউন্সিলর মোঃ ইসমাইল হোসেন, দ্বিতীয় সচিব আতাউল হক, মানবিক সেবা সংস্থাটির পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ডক্টর মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিচালক মাওলানা ইমরান নাফিস ও কার্যনির্বাহী সভাপতি, মুফতী তাওহিদুল ইসলাম।
এর আগে মিশর সফররত সংস্থাটির প্রতিনিধি দলটি নিজ নিজ কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন কায়রোস্থ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত জনাব দিয়াব আল্লু ও বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজের সংগে। উভয় রাষ্ট্রদূত ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ মিশরে অবস্থান কালে সংস্থাটির সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২৩ সনের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১ লক্ষ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি মিশরের শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আহত। অনেকেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। মিশরে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। এই মহতী কাজের জন্যে মানবিক সংস্থাটির পরিচালক সহ বাংলাদেশর জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠানে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটির পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ এই প্রতিনিধিকে জানান, বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম আমরা কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ করতে ছয়দিনের সফরে এসেছি মিশরে।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলালেশি শিক্ষার্থীদের মানবিক সেবা সংস্থা 'ওয়ান ওয়ার্ল্ড উম্মাহ ফাউন্ডেশন'-এর সহযোগিতায় মিশরে আশ্রয় নেয়া ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় করে গাজা ও খান ইউনিসেও সহায়তা পৌঁছে দিব আমরা।
তিনি আরো বলেন, মাজলুমদের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার, খাদ্য সামগ্রী ও পানি বিতরণের জন্যে ২৫ লক্ষ টাকা, বাংলাদেশে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের মাধ্যমে ২শত ফিলিস্তিনি শরণার্থীর জন্যে ১২ লক্ষ টাকা, মিশরে শরণার্থীদের ১০ লাখ টাকা, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত ফিলিস্তিনী শিক্ষার্থীদের তিন লক্ষ টাকা, দারিদ্র বিমোচনে ১০ লাখ টাকার সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও মিশরের শরণার্থী শিবিরে পাঁচ লাখ টাকার খাবার পানি, পাঁচ লাখ টাকার শীতবস্ত্র ও কায়রোর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ফিলিস্তিনিদের নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যায় বহন করা হচ্ছে।
ত্রাণ নিতে আসা শরণার্থী মিস মিন্না- ইল মাসরী বলেন, এক বছর আগে আমি আমার ছেলে সহ মিশরে এসেছি। বর্বর ইসরাইলিদের হামলায় আমার পরিবারের ১৮জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। শুধু আমার একজন চাচাতো ভাই যুদ্ধে আহত হয়ে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় গাজার খান ইউনুস শরণার্থী শিবির বেঁচে আছে। আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্যে বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ জানান মিন্না ইল মাসরী।