বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় ওসির অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ
  •   ভারত-মিয়ানমার থেকে ৮৯৮ কোটি টাকার চাল কিনবে সরকার
  •   মেয়াদোত্তীর্ণ বীজ ও কীটনাশক পাওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
  •   মশার উপদ্রবে চাঁদপুর পৌরবাসী ॥ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী
  •   শাহরাস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও চালকদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪২

ভবিষ্যতের জন্যে মনে রাখার বিষয় যেটি--

অনলাইন ডেস্ক
ভবিষ্যতের জন্যে মনে রাখার বিষয় যেটি--

ফরাজীকান্দিতে যুবদলের অফিস উদ্বোধনের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, মতলব উত্তরে মায়া চৌধুরীর অত্যাচারে বিএনপি কেনো, নিরীহ আওয়ামী লীগাররাও ঘরে ঘুমাতে পারেনি। ২ নভেম্বর শনিবার বিকেলে ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ছোট চরকালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা এমন কথা বলেন। বক্তারা আরো বলেন, সদ্য বিদায়ী ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করে লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি আর উন্নয়নের নামে আর কোনোদিন ভাঁওতাবাজি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এবং সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার হরণ করতে না পারে সেজন্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, এই মতলবে মানুষ গুম, হত্যা, জুলুম ও লুটপাটকারী সংগঠন আওয়ামী লীগের একজন সন্ত্রাসী নেতা ছিলেন, যার নাম মায়া চৌধুরী। যিনি আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যার অত্যাচারে মতলবে বিএনপির কেনো, নিরীহ আওয়ামী লীগাররাও তার কথার বাইরে গেলে ঘরে ঘুমাতে পারেনি। অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। বক্তারা যুব নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষের ওপর কোনো অন্যায়-অত্যাচার করা যাবে না। বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যেমনটি মানুষের সঙ্গে করেছে, সেসব কর্মকাণ্ড মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বক্তারা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্সে অবস্থান নিয়েছেন। তাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ছাড় দেয়া হবে না।

শুধু মতলব উত্তর উপজেলায় নয়, শুধু চাঁদপুর জেলায় নয়, সমগ্র বাংলাদেশে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ওরফে মায়া চৌধুরী বহুল পরিচিত একটি নাম। তিনি বীর বিক্রম খেতাবধারী এবং স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। সদ্য পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর তিনি অন্যতম বিশ্বাসভাজন ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে মায়া চৌধুরীর সাত খুন মাফ ছিলো। সেজন্যে রাজধানী ঢাকা ও নিজ সংসদীয় এলাকা মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলায় তার দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিলো দেখার মতো। তিনি শুধু নিজ এলাকায় নয়, জেলা পর্যায়ের আওয়ামী রাজনীতিতে নিজের সুস্পষ্ট প্রভাব দৃশ্যমান করতেন। তাঁর কথার বাইরে কিংবা প্রত্যাশার বিপরীতে চলতে গিয়ে নিজ দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যে ভালো থাকতে পারতেন না, তার বহু নজির রয়েছে। এজন্যে কতো আওয়ামী লীগারের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তার হিসাব মিলানো কঠিন। যেটা বিএনপি সহ অন্যান্য দলের লোকজন এবং সাধারণ মানুষ নীরবে প্রত্যক্ষ করতো। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ভয়ে এসব তুলে ধরার সাহসও দেখাতেন না। যারা ন্যূনতম দেখিয়েছেন, তাদেরকে এক পর্যায়ে নিজ এলাকা ছাড়তে হয়েছে।

তবে এটা স্বীকার করতে হবে যে, মায়া চৌধুরী লক্ষ্মীপুরের আবু তাহের, ফেনীর জয়নাল হাজারী, নিজামুদ্দিন হাজারী, কুমিল্লার আকম বাহারউদ্দিন বাহারের মতো প্রকাশ্য আতঙ্ক ছড়ানো নেতা ছিলেন না। তিনি তাঁর অনুগত, সুবিধাপ্রাপ্ত, বিশ্বস্ত লোকজন দ্বারা এমন পরিবেশ বজায় রাখতেন, যে কারণে তার বিরুদ্ধাচরণকারীরা মোটেও স্বস্তিতে থাকতে পারতেন না। এক পর্যায়ে ছাড়তেন এলাকা, কিন্তু নালিশ জানাবার জায়গা খুঁজে পেতেন না। এজন্যে অনেকে গুমরে মরে কেঁদেছেন, হাহাকার করেছেন, চরম অসহায় বোধ করেছেন।

আমরা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নয়, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বলছি, মায়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো যদি পুরোপুরি সত্য নাও হয়, তারপরও এগুলো নিয়ে মায়া চৌধুরী স্বয়ং ও তাঁর দলের প্রধানসহ অন্য শীর্ষ নেতাদের ভেবে দেখার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে, যদিও আত্মগোপনে নিরাপদে থাকা ছাড়া তাদের মাথায় অন্য কিছু এখন আর নেই। তবে ভবিষ্যতের ক্ষমতাপ্রত্যাশীদের বিষয়টি নিয়ে ভাববার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে ফরাজীকান্দিতে যুবদলের অফিস উদ্বোধনী সভায় বক্তারা ইঙ্গিত করেছেন। আমরা মনে করি, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হবার জন্যে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু গ্রুপিং করে প্রতিশোধপরায়ণতা থেকে এতো বেশি কিছু করা উচিত নয় যে, যাতে নিজ দলের লোকেরাই নিজেদের অসহায় ও অনিরাপদ ভাবতে বাধ্য হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়