প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৯
বালুখেকোরা এতোটা দুর্দমনীয় কেন ?
শনিবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন বিষয়ে প্রথম পৃষ্ঠায় দুটি সংবাদ এবং শেষ পৃষ্ঠায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদ দুটির শিরোনাম হচ্ছে 'বরিশাল ও মুন্সিগঞ্জ নৌসীমানার নামে চাঁদপুরের মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন॥ হাইমচরের ঈশানবালায় অভিযান' এবং 'মতলব উত্তরে নদীতে বালু উত্তোলন : প্রভাবশালীদের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পরিবার ॥ অভিযোগের তীর একলাশপুর ইউপি চেয়ারম্যানের দিকে'। শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে 'মতলবে বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন'। এ তিনটি সংবাদে বস্তুত বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য এবং স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
নদীতে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশের বিচরণ থাকা সত্ত্বেও বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য কীভাবে এতো বেশি হয় সেটা নিয়ে সব সময় জনমনে প্রশ্ন বিরাজ করে। সাথে সাথে এ কথাও আছে যে, নদীতে এ দুটি বাহিনীর দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ শৈথিল্যের কারণে কিংবা কোনোরূপ প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সন্ধির কারণে বালুখেকোরা তাদের দৌরাত্ম্য দেখাচ্ছে কিনা। দিনের বেলা বালুখেকোরা তেমন তৎপরতা না দেখালেও রাতে তারা ভীষণ তৎপর হয়ে উঠে। রাতে নদীকে তারা আলোকে আলোকময় করে বালু উত্তোলন করে এবং বিক্রি করে। বিক্রি করা এসব বালু বাল্কহেড বোঝাই করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। কালেভদ্রে বালু কাটার ড্রেজার এবং বালুবাহী বাল্কহেড কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন আটক করে। আর সেটাই গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। এতে অনেকে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেও অন্তরালে কতো কিছু যে হয়, সেটা অজানাই থেকে যায়।
আমাদের কথা হলো, বালুখেকোরা কি একটি দেশের সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী? তারা কি এতোটাই দুর্দমনীয় যে, সম্মিলিত ও সমন্বিত কোনো অভিযানেও এদের পরাস্ত করা যাবে না? তারা কি ম্যানেজ (!) করার শক্তিতে বেশি বলীয়ান, না সন্ত্রাসী শক্তিতে বলীয়ান, সেটা নিয়ে ভাববার যথেষ্ট অবকাশ আছে। ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর বালুখেকোদের কৌশল ও মানসিকতার কী পরিবর্তন হয়েছে, সেটা পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্ষের ভেতরের ভূতদের কী অবস্থা সেটা জানার কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এই কৌতূহল নিবৃত্ত করার দায়িত্ব কার কার সেটা নিয়ে নিরন্তর প্রশ্ন থেকেই যায়।