প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০৪
পাঁচ লাখ টাকা দেনার দায়ে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের কর্মচারীর চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে দেনার দায়ে একবার গলায় ফাঁস দিয়ে এবং ২ দফা ৩০টি করে ৬০টি ঘুমের টেবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টায় সফল হননি রাসেল মোল্লা (৪০) নামের এক যুবক। অবশেষে জীবন প্রদীপকে নিভিয়ে দিতে চতুর্থ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন যুবকটি। সেজন্যে পুরাণবাজারে ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিস সংলগ্ন মেঘনা নদীতে বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় প্রচণ্ড স্রোতের মধ্যে ঝাঁপ দেন। অলৌকিকভাবে প্রায় ২ঘন্টা নদীতে ডুবে থেকেও রাত ১টায় জেলেদের জালে আটকা পড়েন এবং প্রাণে রক্ষা পান। তাকে ভর্তি করা হয় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোঃ মুনছুর আহমেদ জানান, রাসেল নামীয় যুবককে মূমূূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসা দেয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
|আরো খবর
রাসেল মোল্লা পুরাণবাজার বাকালী পট্টির তাহের মোল্লার ছেলে ও আওয়ামীলীগ নেত্রী ময়না বেগমের মেয়ের জামাতা। তার পরিবারে স্ত্রী রেহেনা বেগম (৩৭), মেয়ে বৈশাখী(২০), ছেলে জোবায়ের (১৬) ও মিনহাজ(৫) রয়েছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, পাওনাদার সোহেলকে গত ৫ সেপ্টেম্বর পাওনা টাকার মধ্যে ১লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিলো। তিনি টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ও সোহেল তাকে টাকার জন্যে চাপ প্রয়োগ করায় তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানাকে অবগত করা হয়েছে বলে রাসেলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, রাসেল মোল্লা শহরে মাইকিং করে ও জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ধার-দেনা করেন। এ ছাড়া পুরাণবাজার এলাকার জনৈক সোহেল মিয়ার কাছ থেকে বিদেশে পাঠাবে বলে ১বছর পূর্বে ১লাখ টাকা অগ্রিম নেন। আওয়ামী লীগ অফিসটি জ্বালিয়ে দেওয়ায় ও অফিসটি বন্ধ থাকায় বর্তমানে রাসেল মোল্লার আয়- রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংসারে স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে দেনাদাররা পাওনা টাকার জন্যে চাপ প্রয়োগ করছেন। এমতাবস্থায় রাসেল হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে তিনি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তার স্ত্রী রেহেনা বেগম জানান, গত বুধবার রাসেল ২দফা ৩০টি করে ৬০টি ঘুমের টেবলেট সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে চিকিৎসার পর রক্ষা পান। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সেখান থেকে তার স্ত্রী তাকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, এ বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।