প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২১, ১৪:০০
হাজীগঞ্জের ৩ প্রবাসীর লাশ হিমঘরে, ফিরিয়ে আনতে পরিবারগুলোর আকুতি
গত ১ মাসে হাজীগঞ্জের ৩ রেমিটেন্স যোদ্ধা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে হৃদরোগ ও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। নিহত সবার লাশ পড়ে রয়েছে তাদের কর্মস্থলের দেশসমূহের হিমঘরে। নিহতদের লাশ দেশে আনার জন্য তাদের পরিবার পরিজন সরকারের কাছে আকুল আকুতি জানিয়েছেন। সরকারের সহায়তা ছাড়া তাদের স্বজনদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে ৩ টি পরিবারের কোন একটি পরিবারেরও সাধ্য নেই ।
|আরো খবর
গত ২৭ জুলাই মঙ্গলবার মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের মজিবর রহমান (৩৫)। তিনি ঐ ইউনিয়নের মোল্লাহরডর গ্রামের আটিয়া বাড়ির আলহাজ্ব ফজর আলীর ছেলে। গত ১৫ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মো. মহিন উদ্দিন (২৪)। তিনি উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের আহাম্মদপুর গ্রামের আকন্দ বাড়ির সফিউল্যার ছেলে। সর্বশেষ গত ২৪ আগষ্ট বাহরাইনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান উপজেলার ১০ নং গর্ন্ধব্যপুর দক্ষিন ইউনিয়নের দেশগাঁও সরকার বাড়ির জুনাব আলী সরকারের ছেলে সোহাগ সরকার (৩৫)। এদের মৃত্যুর বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন তাদের স্ব-স্ব আত্বীয়রা।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় মজিবর রহমান,আবুধাবিতে মহিন ও বাহরাইনে সোহাগ মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে পরিবারগুলো বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হয়েছে তাদের স্বজন মারা গেছে। নিহতদের পরিবারগুলো স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে আকুতি জানিয়ে বলেছে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া লাশ আনা সম্ভব না। তাদের স্বজনের লাশ ঠিক কতো দিন এভাবে বিদেশের হাসপাতালগুলোর হিমঘরে পড়ে থাকবে তা এখনো জানেনি নিহতের কারো পরিবার।
মজিবর রহমানের নিকট আত্বীয় মজিবুর রহমান রনি জানান আমার বেয়াই মারা গেছে প্রায় ১ মাস হতে চললো। এখনো লাশ আনার প্রকৃয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি। লাশ আনতে সরকারের সহায়তা ছেয়ে মজিবুর রহমান আরো বলেন, নিহতের ছোট ছোট সন্তানগুলোর দিকে তাকালে চোখের পানি ধরে রাখা যায়নি।
সোহাগের এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বাচ্ছু জানান, সোহাগের লাশ দেশে আনার জন্য ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন আত্বীয়-স্বজনের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন বলে শুনেছি। তবে সরকার যদি সহায়তা করে তাহলে সোহাগের লাশ দেশে আনা সম্ভব আর সেটি সম্ভব হলে হয়তো তার মাসুম বাচ্ছাটি শেষ বারের মতো বাবার মুখটি দেখতে পাবে।
মহিনউদ্দিনের বাবা সফিউল্ল্যাহ জানান, ছেলেটা দেশে আসার পর বিয়ে করিয়েছিলাম। ঘরে নতুন বউ রেখে প্রবাসে ফের পাড়ি জমিয়েছে। কিন্তু এখন ছেলেকে চিরতরে হারিয়েছি। আমার তো আর কিছুই কারো কাছে চাওয়ার নেই। আমার ছেলে লাশটা দেশে আনার ব্যবস্থা যদি সরকার করে দিতো তাহলে সরকারের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, নিহতদের পরিবার লাশ আনার জন্য যে প্রকৃয়া রয়েছে তাতে যদি আমরা সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তাতে আমি সর্বাত্বক সহযোগিতা করবো।