সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

মা-ইলিশ রক্ষা হলো কতোটুকু?

মা-ইলিশ রক্ষা হলো কতোটুকু?
অনলাইন ডেস্ক

মা ইলিশ রক্ষার্থে মেঘনা-পদ্মাসহ দেশের আরো কিছু নদীতে ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গতকাল ২৮ অক্টোবর শুক্রবার রাত ১২টায়। গত ৭ অক্টোবর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২১ দিনে চাঁদপুর জেলায় পরিচালিত অভিযানে ২১২ জেলেকে ১৭৮টি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান, ৬১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা, ২ দশমিক ৩৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ, ৪১ দশমিক ৮৫৫ লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। ২০ দিনে কাগজে-কলমে পরিচালিত হয়েছে ৩৫৩টি অভিযান, আর মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় ৮০টি।

মা ইলিশ রক্ষায় উপরোক্ত সংখ্যক অভিযান, মোবাইল কোর্ট, জেলেদের কারাদণ্ড প্রদান, ইলিশ ও জাল আটক পর্যাপ্ত নয় বলে পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত। অন্যান্য বছর মৎস্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় যুগপৎ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হওয়ার ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিলো, এবার তার কিছুই দেখা যায় নি। প্রচ্ছন্ন-অপ্রচ্ছন্ন শৈথিল্য ছিলো এবার যুগপৎ সাঁড়াশি অভিযানের ক্ষেত্রে। যার ফলে অসাধু জেলেরা অনেক বেশি মা ইলিশ ধরার সুযোগ পেয়েছে, এমনকি বিপণনও করেছে। এবার নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে ইলিশ পরিবহনকারী যানবাহনও পাকড়াও হয়েছে অনেক কম। একশ্রেণীর হকার পাড়া-মহল্লায় মা ইলিশ বিক্রি করেছে নির্বিঘ্নে।

এবার মা ইলিশ রক্ষার্থে আনুষ্ঠানিকতা ছিলো ঠিকই, কিন্তু সেটার কার্যকারিতা ও সুফল কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সঞ্চারিত হয়নি। কেননা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম খুব একটা দেখা যায় নি। নিষেধাজ্ঞা শুরুর প্রাক্কালে ২-৩ দিনে যতোটুকু কার্যক্রম করা হয়েছে, সেটা অবশ্যই অপর্যাপ্ত ছিলো। এমন অপর্যাপ্ততায় মা ইলিশ রক্ষার বিষয়ে খুবই কম সচেতনতা ও জনমত সৃষ্টি হয়েছে। পরিণতিতে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে অসাধু জেলেরা মা ইলিশ ধরেছে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এতে ইলিশ কতোটুকু রক্ষা করা গেছে এবং ডিম ছাড়তে পেরেছে সেটা নিয়ে ভাববার অবকাশ তৈরি হয়েছে।

আমাদের দেশে যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের পর পরিসংখ্যানবাজি এবং বাগাড়ম্বর যতোটা হয়, সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নকালে খুব কমই সেটার প্রতিফলন দেখা যায়। এ বিষয়টি হয়ে গেছে এখন গতানুগতিক। এমন গতানুগতিকতায় কাঙ্ক্ষিত ফল আসে না। যেমনটি জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষার উদ্যোগের ক্ষেত্রেও আসছে না। এটা অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। ভবিষ্যতে এ উদ্বেগ নিরসনের সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে, যেটা চাঁদপুরবাসী সহ দেশের ইলিশ-ভোক্তাদের জন্যে মোটেও সুখকর হবে না বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়