চাঁদপুরে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চাঁদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সমন্বয়কদের ডাকা আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন এখানকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তারা চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে চাঁদপুর জেলা জজ আদালত ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় সম্মুখস্থ সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

৩১ জুলাই বুধবার দুপুর ১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সম্মুখে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের উত্তর পাশে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভের শুরুতে শিক্ষার্থীরা জেলা জজ আদালতের সম্মুখে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয় এবং তাদেরকে সরিয়ে সড়কের একপাশে নিয়ে আসে। সেখানে মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নেয়।

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘আমার খাও, আমার পর, আমাকে গিয়ে গুলি কর’ ‘তোমার কোটা তুমি নাও, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দাও’ ‘আমার ভাই মরলো কেন, আমার বোন মরলো কেন, জবাব চাই, ‘দিয়েছিতো রক্ত আরো দেব রক্ত, জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’ ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা...’ বলে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারি বিভিন্ন বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ গুলি করে ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। আর পুলিশ নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে ঘটনাস্থলে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও স্পেশাল পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সে জন্যে সতর্ক অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের শান্ত রাখতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ ইয়াসির আরাফাত, চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শেখ মুহসীন আলম ও ডিবির ওসি এনামুল হক চৌধুরী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে তাদের আন্দোলন করার জন্যে বলেছি। তারা যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না করে এবং জনগণের জানমালের ক্ষতি না করা এসব বিষয়ে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে গত ১৯ জুলাই চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তিতে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ৭টি মামলায় এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের ৭৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩০ জুলাই এদের মধ্যে ১জনকে একদিনের রিমান্ড এবং ৫ জনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আদেশ দিয়েছে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।