প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২১, ১৮:৩২
করোনায় সারাদেশ : মৃত্যু কিছুটা কমলেও বেড়েছে শনাক্তের হার
সারাদেশে চলছে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। গত ৪ দিন ধরে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০'র নিচে নেমেছে। গত সপ্তাহের শেষের ৫ দিন দেশে গড় মৃত্যুর সংখ্যা ১৮৫ হলেও শনাক্তের হার বোন ভাবেই নিয়ন্ত্রনে আনা যাচ্ছে না। গত সপ্তাহেই দেশে শনাক্তের হার নির্ধারণ হয়েছে সর্বোচ্চ ৩২.১৯ শতাংশ। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে কী হবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
|আরো খবর
লকডাউন ঠিকভাবে মেনে না চলার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দ্রুত অবস্থার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম তা বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।
গত ২৩ এপ্রিল শুক্রবার রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার খুরশীদ আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব কি না, তা এখন বুঝতে পারছি না। অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আগের দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তেমন ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি। তবে সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণ কমেছে। আরও কিছুদিন পরে বিধিনিষেধের প্রভাব বোঝা যাবে।’ ঢাকার পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে ফিল্ড হাসপাতাল তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।
ইতোমধ্যেই চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন চাঁদপুরের করোনা বেশামাল হলে ফিল্ড হসপিটাল করার ইঙ্গীত দিয়েছেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে তিনি বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ ৩৫০ বেডের ক্যাপাসিটি রয়েছে। আরও বেড প্রয়োজন হলে পৃথক ফিল্ড হসপিটাল গঠন করা হবে।
কেন সারদেশে করোনা শনাক্ত হার কমছেই না তা পর্যবেক্ষণ শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশেষ টিম জানায়, ঈদের ছুটিতে দেশের সব জায়গায় করোনা পরীক্ষা কম হওয়ায় রোগীর সংখ্যা কম হয়েছে তবে বেড়েছে শনাক্তের হার। কিন্তু কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চার দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭২৬ জনের। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৯ হাজার ২৫৪ জনের।
এই সময় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৩০ শতাংশের মতো। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিল ৩২ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সারাদেশে রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে বেড সংখ্যা। আর যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের জন্য মিলছে না আইসিইউ। অন্যদিকে একটা আইসিইউর জন্য অপেক্ষায় থাকছেন অনেক রোগীর স্বজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, রাজধানীতে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ১৬টি সরকারি হাসপাতাল আছে। এর মধ্যে তিনটি হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা নেই। বাকি ১৩টি হাসপাতালের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৭টি হাসপাতালেই কোনো আইসিইউর শয্যা ফাঁকা ছিল না। আর ৬টি হাসপাতালে ফাঁকা ছিল ৪২টি। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ১৫০টি আসনের মধ্যে রোগী ভর্তি হয়েছে ১২০টিতে। খালি রয়েছে ২০টি বেড। এখনই সচেতন না হলে, নিয়মিত মাস্ক না পড়লে কঠিন দুঃসময়ে পড়তে হবে সবাইকে।