প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৩৪
নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আব্দুল কাদের মিলন (৩৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি। নিহতের পরিবার বলছে, রাজনৈতিক রেশ ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
|আরো খবর
শনিবার (১২ এপ্রিল ২০২৫) সকাল সোয়া ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে নেওয়ার পথে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় মিলনের মৃত্যু হয়। এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চরপাবর্তী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিমখানার সামনে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। নিহত মিলন চরহাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন মাঝি বাড়ির মো. ইসমাইলের ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুর রহীম রাকিব জানান, গত ৫ আগস্টের পর তার বড়ো ভাই মিলন বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর তিনি সৌদি আরব গিয়ে ওমরাহ পালন করেন। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন তিনি দেশে ফিরেন। শুক্রবার রাতে আমার সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায় তার অসুস্থ শ্যালককে দেখতে যান। রাত ৯টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে কোম্পানীগঞ্জের চৌধুরীহাট বাজার এলাকার চুয়ানির টেক এলাকায় আমাদের সিএনজি পৌঁছলে ২-৩টি মোটরসাইকেলের আরোহীরা আমাদের সিএনজিকে ফলো করে আমাদের ধাওয়া করে। বিষয়টি আমার ভাই বুঝতে পেরে তিনি তার মামা শ্বশুর যুবদল নেতা মাইন উদ্দিনকে মুঠোফোনে জানান। এর মধ্যে মোটরসাইকেল আরোহীরা আমাদের ধরে ফেলে।
রাকিব আরো জানান, পরে হামলাকারীরা আমার ভাইকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিমখানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে ৪ঘন্টা ধাপে ধাপে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। যুবদল নেতা মাইন উদ্দিন আমাদের বাঁচাতে এলে হামলাকারীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি চলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রথমে আমার ভাইকে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী বিবি জুলেখা বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর আগে তার হামলার সঙ্গে জড়িত ২০-২৫ জনের নাম বলে গেছেন। তারা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমার এখন কারো নাম,কোনো কিছুই মনে আসছে না। পরে হামলার সাথে জড়িতদের নাম জানাবো। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, এ ঘটনার সাথে কোনো বিএনপির লোক জড়িত ছিলো না। গত ১৫ বছর সে এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাসের রাজত্ব চালায়। তার হাতে নিষ্পেষিত লোকজনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের শিকার হয় সে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াত-বিএনপির লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করবে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকৎসার জন্যে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।