প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪, ২১:৩৫
হাইমচরে ভাসুরের হামলার শিকার গৃহবধূ ও কন্যা শিশু
হাইমচরে ভাসুরের হামলার শিকার হয়েছেন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সেলিনা বেগম। মাকে বাঁচাতে গিয়ে জেঠার হামলা থেকে রক্ষা পায়নি ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। পাষণ্ড জেঠার আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছে শিশুটি। আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের আব্দুল করিমের বসতঘরে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত আব্দুল করিম ছৈয়ালের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩২) ও তার কন্যা শিশু সাবিকুন্নাহার পাপড়ী (১১) চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশু সাকিবুন্নাহার পাপড়ী খুদিয়া বাজাপ্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী।
|আরো খবর
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল করিম জীবিকার তাগিদে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন। তার স্ত্রী সেলিনা বেগম তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান নিয়ে ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামে স্বামীর বসতঘরে বসবাস করেন। আব্দুল করিম ও তার বড় ভাই আব্দুর রহিমের মধ্যে পূর্ব থেকেই জায়গা নিয়ে মনোমালিন্য ছিল। সেলিনা বেগমের স্বামীকে তার ভাসুর বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।
গত ২ মার্চ রাত ৮টার সময় ভাসুর আব্দুর রহিম তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ঘর থেকে বাহিরে আসার জন্য ডাকেন। সেলিনা ঘর থেকে বের না হওয়ায় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সেলিনা ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে আসলে তার ভাসুর তাকে কিলঘুসি মেরে এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকেন। সে সময় ঘরে থাকা ছোট মেয়ে পাপড়ি মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে জেঠার হামলার শিকার হন শিশু পাপড়ি। তার জেঠা গাছের লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করে ডান চোখে নীলা ফুলা জখম করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন মা-মেয়েকে উদ্ধার করে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরদিন রোববার উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে তাদের প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় গৃহবধূ সেলিনা বেগম ভাসুর আব্দুর রহিম (৫০)কে আসামী করে হাইমচর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত সেলিনা বেগম জানান, অনেক আগে থেকেই আমার ভাসুর রাতে আমার ঘরের দরজায় বাড়ি মারতেন। আমি প্রথমে বুঝতে পারি নাই। পরে একদিন তিনি আমাকে রাতে দরজা খোলা রাখতে বলে আমাকে কুপ্রস্তাব দেন। আমি তার কথায় রাজি হলে সে আমাদের ভাগের জমিটুকু আমাদেরকে দিয়ে দিবেন বলে লোভ দেখায়। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীর ভাগের অংশের সব কিছুই তার ভোগদখলে রাখেন। তবুও আমরা শান্তির লক্ষ্যে নিরব থাকি। কিন্তু ঘটনার দিন তিনি গায়ে পড়ে এসে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে ও আমার মেয়েকে তিনি এলোপাতাড়ি মারধর করেন। আমি প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু বিচার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রহিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাবা আমাকে এবং আমার ছেলেকে কিছু জমি দিয়ে গেছেন। এই জমিকে কেন্দ্র করে আমার ছোট ভাইয়ের বউ বিভিন্ন সময় আমাদের গালমন্দ করেছেন এবং আমার নামে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেছেন।
হাইমচর থানার এএসআই ইয়াকুব জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাসুর কর্তৃক হামলার শিকার হয় গৃহবধূ ও তার মেয়ে। এমন ঘটনায় সেলিনা বেগম হাইমচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে। তবে তাদেরকে থানায় মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।