প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৯:২৩
হাজীগঞ্জের সেই শিশু আরাফ হত্যার রায় বৃহস্পতিবার
চট্টগ্রামের ভাড়াবাসায় বাবা-মায়ের সাথে বাস করতেন আড়াই বছরের শিশু আরাফ। ভাড়া বাসায় ২০২০ সালের ৬ জুন ভাড়াবাসার পানির ট্যাংকি থেকে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান আরাফের লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম পুলিশ। সে ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ ভাড়া বাসার দারোয়ারসহ বেশ কজনকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আশে শিশু আরাফ হত্যার রহস্য। আসছে বৃহস্পতিবার আরাফ হত্যার রায় প্রকাশ হবে। আরাফ হাজীগঞ্জের গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম ও ফারহানা বেগম দম্পত্তির একমাত্র সন্তান। আব্দুল কাউয়ুম একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরী করার সুবাদে চট্টগ্রামে বাস করতেন। এরআগে এই মামলার রায় গত বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোঃ জসিম উদ্দিনের আদালতে হওয়ার কথা ছিলো। আসছে বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় প্রকাশ হবে।
|আরো খবর
জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ জুন বিকেলে নগরীর বাকলিয়া থানার মিয়াখান নগরে একটি ভবনের ছাদে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় দুই বছরের শিশু আরাফকে। ওই ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় মিয়াখান নগরের বাসিন্দা মোঃ ফরিদ, শিশু আরাফের পরিবার যে বাড়িতে ভাড়া থাকত সেই ভবনের দারোয়ান মোঃ হাসান ও হাসানের মা নাজমা বেগমকে। পরে আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জানা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে মিয়াখান নগরে ভবনের সামনে গাড়ি রাখার জায়গায় খেলছিলো শিশু আরাফ। মায়ের কাছে চানাচুর খাওয়ার পর সে পানি খেতে চেয়েছিল। এ সময় আরাফের মা ফারহানা ইসলাম পানি আনতে ঘরের ভিতরে যান। তিনি ফিরে এসে দেখেন ছেলে নেই। এই ফাঁকে আদর করার ছলে আরাফকে নিয়ে ভবনের ছাদে চলে যান নাজমা বেগম। সেখানে পানির ট্যাংকে ফেলে আরাফকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ভবনটির বাসিন্দা নাজমা বেগম, তার ছেলে বাড়ির দারোয়ান হাসান ও তাদের পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তখন নাজমা বেগম আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন, বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে প্রতিবেশীর শিশুকে আদর করার ছলে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করেন।
নাজমা আদালতে দেয়া জবানবন্দি বলেছিলেন, ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় অর্থের লোভ এবং পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদের প্রলোভনে বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনার সময় নাজমার ছেলে হাসান (২৩) গেট খুলে দিয়ে তাকে ছাদে উঠতে সহায়তা করেছিলেন। ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আলম মিয়া ছিলেন ৮তলা ওই ভবনের মালিক। মূলত তাকে ‘মামলায় ফাঁসাতে’ ওই ভবনের বাসিন্দা কোনো শিশুকে হত্যা করতে নাজমাকে ২০ হাজার টাকার লোভ দেখান ফরিদ। আসামী ফরিদ বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারী ছিলেন। ঘটনার আগে কাউন্সিলর প্রার্থী ও ভবন মালিক নুরুল আলম মিয়ার প্রচারে হামলার ঘটনায় ফরিদকে আসামি করা হয়েছিলো। এ কারণে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।
ঘাতক চক্রের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে শিশুটির বাবা-মা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আমরা মাননীয় আদালতের কাছে আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।