প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২২:২৫
মার্ক কার্নি কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নি শুক্রবার শপথ গ্রহণ করেছেন। তিনি দীর্ঘ নয় বছর দেশ পরিচালনার পর পদত্যাগ করা জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
|আরো খবর
কানাডার অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক ও বিশ্বব্যাংকিং খাতের অভিজ্ঞ এই নেতা এবার সরাসরি দেশের শাসনভার গ্রহণ করলেন, যদিও তিনি আগে কখনো কোনো নির্বাচিত রাজনৈতিক পদে ছিলেন না। ট্রুডোর বিদায়ের পর লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ করে কার্নি এবার দলকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করবেন।
ট্রুডোর বিদায় ও কার্নির উত্থান
জাস্টিন ট্রুডো জানুয়ারিতে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তিনি পদত্যাগ করবেন, কারণ জনমত জরিপে তার লিবারেল পার্টির জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি ও কানাডার বিরুদ্ধে মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে দেশটিতে জাতীয়তাবাদী আবেগ বাড়তে থাকে, যার ফলে লিবারেলদের জনপ্রিয়তা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বার্তায় কানাডার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “ধন্যবাদ, কানাডা—আমাকে বিশ্বাস করার জন্য, আমাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এবং আমাকে পৃথিবীর সেরা দেশ ও সেরা জনগণের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।”
অর্থনীতি থেকে রাজনীতির মঞ্চে কার্নির আগমন
মার্ক কার্নি অর্থনীতির এক অভিজ্ঞ ব্যক্তি, যিনি আগে কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্রিটেনের ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট ও নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এবার সরাসরি কানাডার সরকার পরিচালনায় আসছেন।
লিবারেল পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই তাকে রাজনীতিতে আনতে চেয়েছিল। কোভিড-১৯ মহামারির পর কানাডার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় কার্নি প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি লিবারেল রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ট্রুডোর পদত্যাগ ঘোষণার পর। মার্চের ৯ তারিখ লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে তিনি বিশাল ব্যবধানে জয়ী হন।
কোনো নির্বাচিত পদ ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী
কার্নি কানাডার প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য নন। এটি দেশটির রাজনীতিতে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। তবে তিনি খুব দ্রুতই একটি আসন থেকে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে প্রবেশ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, যিনি লিবারেল নেতৃত্বের দৌড়ে কার্নির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, তাকে নতুন মন্ত্রিসভায় পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মার্ক কার্নি এমন এক সময়ে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, যখন কানাডাকে অর্থনৈতিক সংকট, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তার নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি কীভাবে এগিয়ে যায় এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কতটা সফল হয়, তা এখন দেখার বিষয়।
ডিসিকে/এমজেডএইচ