প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২৮
চাঁদপুরজমিন হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসা শিবির

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদি নানুপুর চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত চাঁদপুরজমিন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লার আয়োজনে চক্ষু চিকিৎসা শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে।
|আরো খবর
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ৯টায় এ চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এরকম একটি মানবিক অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেয়ার জন্যে। রোকনুজ্জামান রোকন ভাই যে মানুষের কল্যাণে এভাবে কাজ করেন তা স্বচক্ষে না দেখলে বুঝতাম না। আমি তার এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তিনি এখানে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে শুরু থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। আজকে যে হাজার হাজার রোগী এখানে এসেছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্যে, আমি দেখে খুব খুশি হলাম। প্রশাসনে কাজ করার সুবাদে আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের হয়ে যাই, তার মধ্যে আজকের অনুষ্ঠানটি মনে রাখার মতো অনুষ্ঠান। আমি আশা করবো, এই প্রতিষ্ঠানের যদি কোনো কিছু প্রয়োজন হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আমি করার চেষ্টা করবো। আমি প্রমোশন পেয়ে চলে যাবো, কখনো আমাকে কোনো প্রয়োজন হলে রোকন ভাই বলবেন। আমি যেখানেই থাকি এই ভালো কাজের সাথে থাকার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। আমি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে সব সময় মানুষের ভালো কাজের সাথে থাকতে চাই। দোয়া করবেন যেন সব সময় রোকনুজ্জামান ভাইয়ের মত ভাল কাজে থাকতে পারি। তিনি বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলায় আমার একটা বর্ণাঢ্য সময় কেটেছে প্রায় দু বছরের অধিক। এ উপজেলায় কাজ করে এই এলাকার মানুষের কাছ থেকে আমি অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। আমি প্রশাসনের অনেক বিভাগে এর আগে কাজ করেছি, এর মধ্যে স্মরণযোগ্য হলো চাঁদপুর সদর উপজেলায় কাজ করা। চাঁদপুরের মানুষ আইনকে শ্রদ্ধা করে। এখানকার মানুষ শিক্ষিত এবং রুচিশীল মানুষ হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে। আপনারা আমার জন্যে দোয়া করবেন যেন সব সময় সুস্থ থেকে কাজ করতে পারি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চাঁদপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাহার মিয়া তার বক্তব্য বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি আমরা কিছু সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে হয়, তারই অংশ হিসেবে আজ চাঁদপুরজমিন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চক্ষু শিবির অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এখানে এসে দেখলাম হাজার হাজার রোগী। এতে প্রমাণিত হয় যে, এখানে ভালো চিকিৎসা হয়, না হলে এতো রোগী আসতো না। আমাদের শ্রদ্ধেয় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার প্রমোশন হয়েছে চলে যাবেন। আজকে রোকনুজ্জামান ভাই স্যারকে বিদায়ও দিবেন শুনে আমি চলে এসেছি। আমি সারারাত কাজ করেছি, ভোর পাঁচটায় ঘুমিয়েছি। তারপরেও এতো সুন্দর অনুষ্ঠানে আমি নয়টা বাজে আসতে পেরে আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। আমাদের ইউএনও স্যারের সাথে কাজ করে প্রায় দু বছর অনেক কিছু জানতে পেরেছি, শিখতে পেরেছি। তিনি একজন ভালো মানুষ।
ওসি বলেন, চাঁদপুরজমিন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান রোকন ভাই মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। এর আগেও এখানে কয়েকটি অনুষ্ঠান আমি দেখেছি। নিঃস্বার্থভাবে তিনি কাজ করে যান। তিনি সমাজের দর্পণ হিসেবে দৈনিক চাঁদপুরজমিন এবং অনুপমা পত্রিকা দিয়ে মানুষের সত্য ঘটনাগুলো তুলে ধরেন বিধায় আমরা জানতে পারি। এতে করে আমরা কাজও করতে পারি। আমরা কাজ করি আপনাদের জন্যে। আমরা কিছু সময়ের জন্যে আসি। এর মধ্যে আপনাদের সেবা দিতে চেষ্টা করি। আমরা যে ভালো কাজগুলো করে যাই, সেগুলোই তো আপনারা মনে রাখবেন। কাজের মাধ্যমে আমরা আপনাদের কাছে থাকবো। এ রকম সেবা করার কাজ করা সবার কপালে জোটে না। এলাকায় কতো লোক আছে, ক'জন লোক এ ধরনের কাজ করে বলেন? ইউনও স্যার চলে যাবেন, একজন ভালো মানুষকে আমরা মিস করবো। আমরা স্যারের জন্যে দোয়া করি। আমি রোকনুজ্জামান ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করি যেন মানুষের সেবায় নিজেকে সব সময় নিয়োজিত রাখতে পারেন।
হাজী লোকমান পাবলিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, চাঁদপুরজমিন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান, জাতীয় দৈনিক অনুপমা ও দৈনিক চাঁদপুরজমিন পত্রিকা প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান রোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক চাঁদপুরজমিন পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, হাজী লোকমান পাবলিক স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল ইয়াসমিন আক্তার, সিনিয়র শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম শেখ ও কুমিল্লা অন্ধকল্যাণ সমিতির দেলওয়ার হোসেন। বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. শাহজাহান গাজীর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো. হোসাইন আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক চাঁদপুরজমিন পত্রিকার ফটো সাংবাদিক শাহনেওয়াজ আহমেদ, সাংবাদিক মো. জাকির হোসেন, চাঁদপুর সদর মডেল থানার এএসআই মো. সেলিম হোসেন সহ অনেকে।
আলোচনাসভা শেষে চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করা হয়। পরে বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লার ৪ জন চিকিৎসক প্রায় ১৫ শ' রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।