প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২২, ২১:০৫
চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল নিয়ে সাবেক সিনিয়র সচিব মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারীর আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস
গত ১৯ অক্টোবর ২০২২ খ্রিঃ চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির অধিভুক্ত চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি)র অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নিকট সচিবালয়ে গমন করেন সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির অবৈতনিক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, পরিচালনা পর্ষদ সদস্য সুভাষ চন্দ্র রায় ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল আজম। সেখানে হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প প্রস্তাব ও এ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সেখান থেকে ফিরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী সোস্যাল মিডিয়ায় হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাস দেন। সেটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো :-
|আরো খবর
মানব দরদী, মহান চিকিৎসক এবং দানবীর আলহাজ্ব ডাঃ এমএ গফুর। চাঁদপুর জেলায় সর্বজনশ্রদ্ধেয় এই মহান ব্যক্তিত্ব মরেও অমর, চিরস্মরণীয়। গণ ও দুরারোগ্য রোগ ডায়াবেটিস রোগীদের সুচিকিৎসার জন্যে তিনি চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের কোল ঘেঁষে অতি মূল্যবান প্রায় ৪০ শতক জমি দান করেছেন। জেলার আরও কতিপয় দূরদর্শী, দানশীল মহান মানুষকে সঙ্গী-সাথী করে সেই ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল।
মায়া, মমতা, ত্যাগ, তিতিক্ষা, পিতৃ-মাতৃ সুলভ ব্যবহারে মুগ্ধ চিকিৎসাগ্রহীতাগণ। বিত্তের সীমাবদ্ধতা থাকলেও চিত্ত অনেক বড়, উদার, আকাশসম। ফলে দিনকে দিন ছড়িয়ে পড়ছে এর সুনাম, যশ, খ্যাতি। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। খ্যাতির বিড়ম্বনা বলে একটা কথা আছে। ফলে চাঁদপুর জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার অগণিত ডায়াবেটিস রোগীকে প্রতিদিন স্বাগত জানাচ্ছেন এবং সহাস্যবদনে চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বল্পসংখ্যক ত্যাগী চিকিৎসক, নার্স, সহযোগী এবং কর্তৃপক্ষ। ছোট্ট পরিসর। কিন্তু লোকে লোকারণ্য। তবে পরিবেশ নজরকাড়া, ছিমছাম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এ কারণে এ যাবৎ রেজিস্টার্ড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮,০০০-এ।
বিদ্যমান তিনতলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণও বর্তমান জনমুখী সরকার বাহাদুরের উদারতা এবং সহায়তায় সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসকদের মনোভাব এমন যে, ত্যাগেই সুখ, ত্যাগেই শান্তি। ৩০% রোগীর চিকিৎসা করতে হচ্ছে বিনামূল্যে-সম্পূর্ণ ফ্রি-তে। কিন্তু হাসপাতালেরতো সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। এদিকে প্রতিনিয়ত রোগী বাড়ছে স্রোতের মতো। তাদের প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসা তথা ক্রমবর্ধমান চাহিদা মিটানোর জন্যে হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ, কিডনি ডায়ালাইসিস, বহিঃবিভাগ সম্প্রসারণ, জটিল রোগীদের জন্যে আইসিইউ, সিসিইউ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ভুক্তভোগী এবং সর্বসাধারণের বহুদিনের, বহুল কাক্সিক্ষত প্রত্যাশা।
রোগী, শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি কর্তৃপক্ষ সর্বদাই অন্তপ্রাণ। তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকার বাহাদুরের নিকট বিদ্যমান অবকাঠামোর উপর ১০ তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ এবং বর্ণিত সুযোগ-সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে প্রায় দুই বছর পূর্বে নিজস্ব ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা এবং সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাত্র ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকাসহ মোট ১৮ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প-প্রস্তাব সরকারের নিকট জমা দেন। অনুমোদন প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন দপ্তরের কিছু অতি প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য বেশ ঘুরাঘুরি হচ্ছে। আর আমাদেরও রয়েছে জোঁকের মতো লেগে থাকার অধ্যবসায়।
এর ধারাবাহিকতায় গতকাল স্বয়ং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-এঁর সঙ্গে প্রস্তাবনা, সর্বশেষ অবস্থা অবহিতকরণ, তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং চাঁদপুর জেলাবাসীর জন্য সামান্য উপহার প্রদানের জন্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক সর্বজনাব আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, পরিচালনা পরিষদের সদস্য সুভাষ চন্দ্র রায় এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল আজমসহ সৌজন্য সাক্ষাৎ করি।
এই সদালাপী, সজ্জন, জনমুখী, গতিশীল, দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রদানকারী, সুদক্ষ, সুযোগ্য সচিব জনাব জাহাঙ্গীর আলম একসময়ে চাঁদপুর সদর উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অসাধারণ দক্ষতা ও জনবান্ধবতার পরিচয় দিয়েছেন। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, খেলার ধারাভাষ্যের মতো চাঁদপুর জেলার সুখময় স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি আমাদেরকে আপ্লুত করেছেন। চাঁদপুর জেলার অতি সাধারণ একজন হিসেবে জেলার প্রশংসা শুনে গৌরববোধ করছি।
আমরা লেগে আছি ডায়াবেটিক হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য এবং আশাবাদীও। আপনাদের দোয়া চাই, দোয়া। উল্লেখ্য, লেখাটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব জনাব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারীর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃীত।