প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
টাইফয়েড এক ধরনের জ্বর, যা সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়ে থাকে। টাইফয়েড জ্বর যে কোনো বয়সে হতে পারে। সারা বিশ্বে প্রতি বছর টাইফয়েড জ্বরে প্রায় ২ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ২ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ৪ জন মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়। ৫ বছর বয়সের নিচের শিশুদের মধ্যে প্রতি বছর গড়ে ১ হাজারে ১৯ জন টাইফয়েডে ভোগে। ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চারা টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি এবং এর ৮৫ ভাগ শিশুই আক্রান্ত হয় ২-৪ বছরের মাঝে।
টাইফয়েড কারণ
* বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে প্রধানত টাইফয়েড ছড়ায়। মাছি টাইফয়েডের জীবাণু বহন করে খাবারকে দূষিত করে।
* যারা এই জীবাণু বহন করে তাদের হাতে তৈরি খাবার খেলে অথবা তাদের হাতে খাবার পরিবেশন করলে এ রোগ ছড়াতে পারে।
* পানি এ রোগের একটি প্রধান কারণ।
* সঠিক মল নিস্কাশনব্যবস্থার অভাব। টাইফয়েড রোগীর মল থেকে পানি ও খাবার দূষিত হতে পারে।
* টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগী যদি বাথরুম ব্যবহারের পর ঠিকমতো হাত না ধুয়ে থাকে তাহলে পানি ও খাবার দূষিত হতে পারে। যদি কোনো সুস্থ মানুষ এই পানি বা খাবার খায় তবে সে সহজে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়।
টাইফয়েডের লক্ষণ
* শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়, প্রায় ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফা. পর্যন্ত উঠে এবং ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত থাকে। তাপমাত্রা সাধারণত রাতের দিকে বাড়ে এবং দিনে কমে যায়।
* ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা।
* ত্বকে র্যাশ, ঠোঁট-মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
টাইফয়েড জ্বরের জটিলত
* জ্বর যদি অনেক দিন স্থায়ী হয় তবে অনেক গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
* পেটে ছিদ্র হয়ে যাওয়া
* পেটে রক্তক্ষরণ
* হৃদপেশীর সংক্রমণ
* হেপাটোমেগালী
* কিডনি সংক্রমণ
* লিউকোপেনিয়া
* নিউমোনিয়া
এর প্রতিরোধ কি?
* নিরাপদ স্থানে খাবার গ্রহণ
* দূষিত খাবার এবং পানি পরিহার করা
* পানি ফুটিয়ে খাওয়া
* খাবার ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া
* স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা করা
* ব্যক্তিগত পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা
* জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা
* কাঁচা শাকসবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিরোধ
প্রতিরোধক হিসেবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা খুব সহজেই দীর্ষমেয়াদী রোগভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে পারি। শুধুমাত্র একটি ডোজের ভ্যাকসিন প্রতিরোধক হিসেবে কার্যকর। ২ বছর বয়স থেকে ছোট-বড় সকলেই এই ভ্যাকসিন দিতে পারে। প্রতি ৩ বছর পর পর বুস্টার ডোজ হিসেবে একটি ভ্যাকসিন দিতে হবে।
টিকা দেয়ার নিয়ম/মূল্য
* দুই বছরের ঊর্ধ্বে সবাই টাইফয়েডের টিকা নিতে পারবেন।
* ১ম ডোজের ৩ বছর পর ২য় ডোজ টিকা নিতে হবে।
* টাইফয়েড পরীক্ষা (Widal Test) ২০০ টাকা।
* প্রতি ডোজ ৫০০ টাকা। (Vaxphoid-Incefta)
উল্লেখ্য, ৩ মাসের মধ্যে টাইফয়েড জ্বর না হলে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে না।
ডাঃ এম.জি. ফারুক ভূঁইয়া : পরিচালনায়, চাঁদপুর ভ্যাকসিন সেন্টার। ০১৮১৯-৮৪৩১২৮
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]