বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

স্ট্রোক প্রতিরোধে কর্মঠ হোন
ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

স্ট্রোক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়।

মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কোনো কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে স্ট্রোক হয়। বিশেষ করে রক্তনালি বন্ধ হয়ে কিংবা রক্তনালি ছিঁড়ে এ সমস্যা হয়। রক্তে থাকে অক্সিজেন আর পুষ্টিগুণ। ফলে স্ট্রোক হলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো মারা যেতে থাকে। সারা বিশ্বে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক।

স্ট্রোক দুই ধরনের

ইসকেমিক স্ট্রোক : এ ধরনের স্ট্রোকে রক্তনালির পথে ক্লট বা রক্তপিণ্ড জমে রক্ত চলাচলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ৮৭ শতাংশ স্ট্রোক হলো ইসকেমিক স্ট্রোক।

হেমারেজিক স্ট্রোক : মগজে রক্ত পৌঁছে দেয় এমন রক্তনালি দুর্বল হয়ে ফেটে বা ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হলে সেটা হেমারেজিক স্ট্রোক ঘটায়। এর মূল কারণ উচ্চ রক্তচাপ।

এ ছাড়া মিনি স্ট্রোক হয় অনেক সময়। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ট্রানজিয়েন্ট ইসকেমিক অ্যাটাক। এতে মগজে সাময়িকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বছরে প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রায় ৫০ লাখই মারা যায়। উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ২০১৭ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি ১ হাজারের মধ্যে প্রায় ১১ দশমিক ৩৯ জনের স্ট্রোক হচ্ছে এবং নারীদের তুলনায় পুরুষ রোগী প্রায় দ্বিগুণ।

স্ট্রোক হওয়ার প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আসতে পারলে বিশেষ কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কিন্তু সময় পার হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষগুলো স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ এমনকি রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

কারণ

* রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল।

* উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ।

* মানসিক চাপ, অতিরিক্ত টেনশন, অবসাদ।

* সারা দিন শুয়ে বসে কাটানো ও কায়িক পরিশ্রম না করা।

* অস্বাভাবিক ওজন।

* অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। বিশেষত অতিরিক্ত তেল ও চিনিযুক্ত, ভাজাপোড়া খাবার ও পানীয় পান। ধূমপান, তামাক-জর্দা, মদ বা অন্যান্য মাদক সেবন।

লক্ষণ

স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে হলে লক্ষণও জানা চাই। লক্ষণগুলোকে সংক্ষেপে বলা হয় FAST। F = Face = মুখ বেঁকে যাওয়া, A = Arm = হাত দুর্বল অথবা অবশ হয়ে আসা, S = Speech = কথা জড়িয়ে যাওয়া এবং T = Time তথা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে আগে থেকেই খোঁজ নিয়ে রাখতে হবে কোন হাসপাতালে স্ট্রোকের ভালো চিকিৎসা রয়েছে এবং কোন নম্বরে ফোন করলে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে।

FAST ছাড়াও আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে—

* দেহের একদিকে মুখ, বাহু বা পা অবশ বা বেঁকে যাওয়া।

* হতবিহ্বল হওয়া বা কারও কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া।

* এক চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া, হাঁটতে অসুবিধা হওয়া বা মাথা ঝিমঝিম করে ওঠা।

প্রতিকার

* উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন।

* অতিরিক্ত তেলচর্বি ও চিনি-লবণযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড এড়িয়ে পুষ্টিকর ডায়েট মেনে চলুন।

* মাদককে না বলে দিন।

* প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম।

* শরীরচর্চা বা নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করা।

* ছয় মাস অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়