প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
উচ্চ রক্তচাপ যাকে আমরা হাইপ্রেসার বলে থাকি তা আসলে কী? একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে হাইপারটেনশন (Hypertension)।
ঐঞঘ বা ঐচঘ হলো এমন একটি রোগ যখন কোন ব্যক্তির রক্তের চাপ সব সময়েই স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে থাকে। হাইপারটেনশনকে প্রাথমিক (আবশ্যিক) হাইপারটেনশন অথবা গৌণ হাইপারটেনশনে শ্রেণীভুক্ত। প্রায় ৯০-৯৫% ভাগ ক্ষেত্রেই “প্রাথমিক হাইপারটেনশন” বলে যাকে চিহ্নিত করা হয়।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় এখন অনেক কমবয়সীরাও ভোগেন। এর একমাত্র কারণ হলো অনিয়মিত জীবনধারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই। এক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা জরুরি।
এখন আমরা জেনে নিবো কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে সাধারণ কিছু খাবার খেয়েই কমানো যায় উচ্চ রক্তচাপ। তাই জেনে নিন কোন ৪ খাবার খেয়ে বশে আনবেন রক্তচাপ-
সবুজ শাক সবজি
পালং শাক, কেল ও লেটুস জাতীয় খাবারে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। পটাসিয়াম কিডনিকে প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত সোডিয়াম থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
কলা
কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও পটাসিয়াম। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কলায় থাকা পটাসিয়াম খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
বিটরুট
নাইট্রিক অক্সাইড সমৃদ্ধ এই সবজির স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। রক্তনালিগুলো প্রসারিত রাখতে কাজ করে এই সবজির পুষ্টি উপাদান।
রসুন
সবার রান্নাঘরেই রসুন থাকে। শুধু খাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল খাবার, যা পেশি শিথিল করে। এমনকি রক্তনালিগুলোকেও প্রসারিত করে এই ভেষজ উপাদান। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে সহজেই।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এছাড়া আর কী ঘরোয়া খাবার খেতে পারেন। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রচুর শাকসবজি যেমন পালংশাক, ফুলকপি, শসা, লাউ, মটরশুঁটি, কলমি শাক, বাঁধাকপি, টমেটো, কুমড়া, বেগুন ইত্যাদি রাখতে হবে। পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এক কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারেন প্রতিদিন।
আসুন এবার আমরা জেনে নেবো কি কি কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়?
এক. রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ।
দুই. খাবারে অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ গ্রহণ করা।
তিন. অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় মদ্যপান করা।
চার. শরীরের অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি।
পাঁচ. ধূমপান।
ছয়. পর্যাপ্ত শাকসবজি এবং ফলমূল না খাওয়া।
সাত. রাত্রে পর্যাপ্ত না ঘুমোনো (৬-৮ ঘন্টা)।
আট. অতিরিক্ত চা , কফি বা ক্যাফিন-যুক্ত পানীয় সেবন।
নয়. স্থুলতা।
দশ. বংশগত কারণ।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আরও কিছু বিধিনিষেধ অবলম্বন করতে হবে।
১. অতিরিক্ত ওজন কমানো: প্রতি ১ কেজি অতিরিক্ত ওজন কমালে রক্তচাপ সাধারণত ১ পয়েন্ট কমে আসে। তাই ওজন বেশি হলে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে। পেট বা কোমরের মাপের জন্য নারীদের লক্ষ্য ৩১.৫ ইঞ্চির কম আর পুরুষদের লক্ষ্য ৩৭ ইঞ্চির কম হওয়া উচিত।
২. নিয়মিত শরীর চর্চা করা: সপ্তাহে আড়াই ঘণ্টা করে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারলে রক্তচাপ ৫ পয়েন্ট পর্যন্ত কমতে পারে। তাই সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন আধা ঘণ্টা করে মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। মাঝারি ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা ও সাইকেল চালানো। নতুন করে ব্যায়াম শুরু করছেন অথবা দীর্ঘ বিরতির পর আবার ব্যায়াম শুরু করছেন—এমন ব্যক্তিদের জন্য আমাদের ৯ সপ্তাহে দৌড়ানোর গাইডটি সহায়ক হতে পারে।
৩. ধূমপান না করা: ধূমপান ও উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। তাই ধূমপান ত্যাগ করা খুব জরুরি। ধূমপান ছাড়তে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না? চেষ্টা করুন। চেষ্টায় অনেক মানুষই সফল হয়। আপনিও হবেন আশা করছি।