প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
সূর্য আল্লাহ তা’য়ালার সৃষ্টিসমূহের মধ্যে এক সুনিপুণ সৃষ্টি। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস এই সূর্য এবং যদি সাতদিন সূর্য উদয় না হয় তবে পৃথিবীতে কোন প্রাণি ও উদ্ভিদ জীবিত থাকবে না। মানব জাতির বিভিন্ন প্রয়োজনে সূর্য রশ্মির সরাসরি ব্যবহার নতুন নয়। খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ২৫০ বছর আগে আর্কিমিডিস গোলীয় দর্পণের সাহায্যে সূর্যের রশ্মি কেন্দ্রীভূত করে আগুন ধরানোর কৌশল উদ্ভাবন করেন।
যেসব অঞ্চলে কখনো বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব নয়, সূর্যের রশ্মির সাহায্যে বিদ্যুৎ (সোলার সেল) উৎপাদন করে সেখানকার লোকজন বৈদ্যুতিক সুবিধা ভোগ করছে। সূর্যের রশ্মির সাহায্যে মানব দেহের সব ধরনের নতুন, পুরাতন, দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ রোগের চিকিৎসা করা যায়। যুক্তরাষ্টের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ এডইন ব্যাবিট এম.ডি. প্রমাণ করেছেন যে, ‘সব ধরনের দীর্ঘস্থায়ী এবং ভয়াবহ রোগ নিরাময়ে সূর্যের রশ্মি প্রয়োগ করে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। তিনি নীল রশ্মিকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এন্টিসেপটিক বলে মনে করেন এবং দিনের বেলা মেঘমুক্ত নীল আকাশকে শ্রেষ্ঠার শ্রেষ্ঠ উপহার বলে আখ্যায়িত করেন। যা বিশ্বের উপর দারুণ উপকারী প্রভাব ফেলে থাকে।
সূর্যের রশ্মি দেখতে সাদা হলেও তা সপ্তবর্ণের রশ্মির সমন্বয়ে গঠিত। আমরা রংধনুতে যে সাতটি রং দেখতে পাই তা মুলত সূর্যের সাতটি রশ্মি। রংগুলো হলো বেগুনী, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। সবুজ রশ্মিকে বলা হয় নিরপেক্ষ রশ্মি। প্রথম তিনটি রশ্মি অধিক শক্তিশালী, এরা দেহে শীতল প্রভাব ফেলে এবং এন্টিসেপটিকের কাজ করে। শেষের তিনটি রশ্মি দেহে তাপ সৃষ্টি করে।
রশ্মি গ্রহণের পদ্ধতি : সূর্যোদয়ের ৯০ মিনিট পরে অথবা সূর্যাস্তের ৬০ মিনিট পূর্বে রশ্মি গ্রহণ করতে হয়। প্রয়োজনীয় রংয়ের একটি কাঁচ খণ্ড নিন। কাঁচ খণ্ডটি শরীর থেকে ৬ ইঞ্চি উপরে এমনভাবে সূর্যের দিকে ধরুন, যেন সূর্যের রশ্মি আক্রান্ত স্থানে পড়ে। এভাবে প্রতি দিন ১০ মিনিট রশ্মি গ্রহণ করেন। খেয়াল রাখবেন, এ সময় যেন রোগীর গায়ে জোরালো বাতাস না লাগে।
বিকল্প উৎস : যদি সূর্যের রশ্মি সরাসরি গ্রহণ করা সম্ভব না যায়, তবে বৈদ্যুতিক বাল্ব থেকেও রশ্মি গ্রহণ করা যায়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় রংয়ের ৬০ থেকে ১০০ ওয়াটের একটি বাল্ব নিন। আক্রান্ত স্থান থেকে ২০ ইঞ্চি দূরে রেখে প্রতিদিন দুবার ১০ মিনিট করে রশ্মি গ্রহণ করুন। রঙিন বাল্ব না পাওয়া গেলে সাধারণ বাল্বের গায়ে প্রয়োজনীয় রংয়ের র্যাপিং পেপার চার ভাজ করে পেঁচিয়ে নিয়েও রশ্মি গ্রহণ করা যায়। (চলবে)
অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু
সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।