সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২২, ০০:০০

নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা
অনলাইন ডেস্ক

প্রায় ৮০ ভাগ মহিলা সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া নামক রোগে আক্রান্ত। যা অজ্ঞতা বা লজ্জার কারণে অনেক সময় মহিলারা প্রকাশ করতে চায় না। প্রত্যেকের শরীর আলাদা, তবে সাধারণভাবে কিছু যোনিস্রাব হওয়া স্বাভাবিক এবং প্রত্যেকের জন্যে পরিমাণে পরিবর্তিত হয়। ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে এবং স্বাস্থ্যকর পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে যোনিপথের জন্যে স্রাব প্রয়োজন। একটি স্বাস্থ্যকর যোনিস্রাব সাধারণত গন্ধহীন, পরিষ্কার বা সাদা রঙের হতে পারে এবং সাধারণত একটু পুরু বা এমনকি আঠালো হয়।

সাদাস্রাব কী?

সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া হচ্ছে মহিলাদের একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণত মাসিকের ৫/৭ দিন আগে অথবা পর থেকে সাদাস্রাব হয়ে থাকে। সাদাস্রাবের ঘনত্ব পাতলা শ্লেষ্মা থেকে ছানা কাটা পানির মতো হতে পারে। প্রথমের দিকে পাতলা ও পরে ঘন সাদাস্রাব একটি স্বাভাবিক ঘটনা। মহিলাদের বিয়ের আগে অথবা পরে যে কোনো সময় সাদাস্রাব হতে পারে। আপনার যোনি এবং সার্ভিক্সের ভেতরের গ্রন্থিগুলো অল্প পরিমাণে তরল তৈরি করে। এ তরলটি প্রতিদিন যোনি থেকে প্রবাহিত হয়, পুরানো কোষগুলোকে বহন করে, যা যোনিতে সারিবদ্ধ থাকে। যোনিস্রাব সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এটি আপনার যোনিকে সুস্থ এবং পরিষ্কার রাখার আপনার শরীরের উপায়। যোনিস্রাব একটি স্বাভাবিক ঘটনা, যা সমস্ত মহিলার অভিজ্ঞতা হয় যা সাধারণত অন্তর্বাসে সাদা বা পরিষ্কার তরল হিসেবে প্রদর্শিত হয়। কিছু মহিলার স্রাব হয় প্রতিদিন এবং অন্যদের মাঝে মাঝে। স্রাবটি তরল এবং কোষ দ্বারা গঠিত, যা যোনি দিয়ে নির্গত হয়। আপনার মাসিক চক্রের পর্যায়ের উপর ভিত্তি করে স্রাবের পরিমাণ, রঙ এবং ধারাবাহিকতা পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু স্রাব মাসিকের রক্ত থেকে ভিন্ন। তবে অস্বাভাবিক স্রাব উপস্থিত হলে, অন্যান্য উপসর্গগুলোও কি কারণে স্রাব ঘটছে তার উপর নির্ভর করে।

অন্যান্য যেসব উপসর্গ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে : ১। চুলকানি। ২। জ্বলন্ত। ৩। জ্বালা। ৪। লালভাব। ৫। প্রস্রাব এবং যৌন মিলনের সময় ব্যথা। ৬। অধিক পরিমাণে পিচ্ছিল ও অস্বচ্ছ মিউকাস জাতীয় পদার্থের নিঃসরণ, যাতে পরনের কাপড় ভিজে যায়। ৭। নিঃসরণের সময় যোনিপথের আশপাশের জায়গায় চুলকানি হলে। ৮। সাদাস্রাব নিঃসরণের সময় অধিক দুর্গন্ধ হলে। ৯। নিঃসরণ হলুদ, লালচে, বাদামী অথবা সাদা থকথকে ছানার মতো হলে। ১০। রক্ত কিংবা পুঁজ থাকলে। ১১। তলপেটে ব্যথা থাকলে। ১২। জ্বর থাকলে। উপরের সবগুলো অথবা যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা গেলে বুঝতে হবে, এটি অস্বাভাবিক সাদাস্রাব। সেক্ষেত্রে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আগেই বলেছি, সাদাস্রাব একটি স্বাভাবিক ও নিয়মিত ঘটনা। তবে সমস্যা দেখা দেয় তখনই যখন লালচে কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়। বিভিন্ন কারণে অস্বাভাবিক সাদাস্রাব হতে পারে। স্বাভাবিক যোনিস্রাব একটি সুস্থ শারীরিক ফাংশন। এটি আপনার শরীরের যোনি পরিষ্কার এবং সুরক্ষার উপায়। উদাহরণস্বরূপ, যৌন উত্তেজনা এবং ডিম্বস্ফোটনের সাথে স্রাব বৃদ্ধি হওয়া স্বাভাবিক। ব্যায়াম, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার এবং মানসিক চাপের ফলেও স্রাব হতে পারে। আমাদের সমাজে অজ্ঞতার কারণে সাদাস্রাব নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে স্বাভাবিক যোনিরসকে সাদাস্রাব মনে করা। স্বাভাবিকভাবে মেয়েদের যোনিপথে এক ধরনের পিচ্ছিল নিঃসরণ হয়। এটি যৌনমিলনের সময় লুব্রিকেসনের কাজ করে। অজ্ঞতা ও পর্যাপ্ত ধারণার অভাবে যোনিরসের এ নিঃসরণকে সাদাস্রাব মনে হতে পারে। তবে শুধুমাত্র হলদেটে, বাদামী অথবা লালচে নিঃসরণ হলে কেবল সেটাকে সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া বলে। অর্থাৎ স্বাভাবিক যোনিরস সাদাস্রাব নয়।

তবে অস্বাভাবিক যোনিস্রাব সাধারণত একটি সংক্রমণের কারণে হয়। উক্ত কারণগুলো হলো :

১। মানসিক অশান্তি মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকলে অস্বাভাবিক সাদাস্রাব হতে পারে। সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই টেনশনমুক্ত থাকতে হবে। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় শরীরের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব মহিলা অধিক চিন্তাযুক্ত থাকেন, তারা সাদাস্রাবজনিত জটিলতায় বেশি ভোগেন। তাই রিলাক্স থাকুন, সাদাস্রাব থেকে মুক্ত থাকুন।

২। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল : যেসব মহিলা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে পিল নেন তাদের দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব নিঃসরণ হতে পারে। বলা যেতে পারে এ ধরনের সাদাস্রাব হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের সাইড ইফেক্ট। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি শুধুমাত্র পিলের সাইডইফেক্ট মাত্র।

৩। পুষ্টিহীনতা : অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতা সাদাস্রাবের একটি অন্যতম কারণ। অপুষ্টির কারণে শরীরের স্বাভাবিক প্রসেস ঠিকঠাক কাজ করে নাই। এর ফলে সাদাস্রাব অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। তাই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে হলে পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই।

৪। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন : অনেক মেয়ে আছেন, যারা সময়ের কাজ সময়ে করতে অনীহা বোধ করেন। ঘুম, খাওয়া কিংবা বিশ্রামের তোয়াক্কা করেন না। নির্দিষ্ট ও সঠিক সময়ে খাওয়া ও ঘুমের ক্ষেত্র উদাসীনতা প্রকাশ করেন। এতে করে শরীরের কার্যক্ষমতা ব্যহত হয়। এর ফলে সাদাস্রাব হয়ে থাকে।

৫। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব : ঘুম মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। ঘুম ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। সুস্থ থাকার জন্যে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। অস্বাভাবিক সাদাস্রাব এবং ¯œায়ুবিক জটিলতা থেকে বাঁচতে নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে ও ঘুম থেকে উঠতে হবে।

৬। জরায়ুতে ইনফেকশন : জরায়ু খুবই সংবেদনশীল একটি অঙ্গ। জরায়ুতে খুব সহজেই ইনফেকশন হতে পারে। জরায়ুতে ইনফেকশনের কারণে সাদাস্রাব একটি নৈমিত্তিক ঘটনা। তাই জরায়ু ইনফেকশন থেকে বাঁচতে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার কোনো বিকল্প নেই। তবে মনে রাখতে হবে, জরায়ু অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হওয়ায় অধিক ক্ষারযুক্ত সাবান পরিহার করতে হবে।

৭। অপরিষ্কার কাপড় ও নোংরা অপরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করলে : অপরিষ্কার কাপড় অথবা একই প্যান্টি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করলে জরায়ুতে ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও মাসিক চলাকালে একই প্যাড বারবার ব্যবহার করলে মোনালিয়া জীবাণু দ্বারা জরায়ু ইনফেক্টেড হয়। এতে করে সাদাস্রাব নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

৮। মানসিক অস্থিরতা : মানসিক অস্থিরতার কারণে সাদাস্রাব হতে পারে। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকলে শরীরের ইন্টার্নাল ফাংশনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যহত হয়। এর ফলে সাদাস্রাবসহ নানাবিধ জটিলতা দেখা দেয়।

৯। হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন : অস্বাভাবিক মাত্রায় হস্তমৈথুন শরীর ও মন উভয়ের জন্যেই ক্ষতির কারণ। মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুনের কারণে সাদাস্রাব নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই মাস্টারবেশনের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।

১০। হরমোনের প্রভাব : মেয়েদের ইস্টোজেন হরমোন বেড়ে গেলে অস্বাভাবিক মাত্রায় সাদাস্রাব হতে পারে। বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় স্বামীর সংস্পর্শে না থাকলে এমনটা হতে পারে। তবে দুর্গন্ধযুক্ত হলুদ অথবা লালচে স্রাব নিঃসরণ না হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই।

এছাড়াও বিবাহিত অথবা কুমারী যে কারোরই সাদাস্রাব হতে পারে। বিভিন্ন কারণে এবং বিভিন্ন সময়ে সাদাস্রাব হতে পারে। যেমন : যৌন-ভাবনা বা উত্তেজনার সময়/ডিম্বের প্রস্ফুটনের সময়/ যৌনমিলন/যৌন আবেগ/ গর্ভাবস্থায় অথবা ইস্ট্রজেন হরমোনের কারণে সাদাস্রাব হতে পারে।

সাদাস্রাব প্রতিকারের উপায় :

* দুটি মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে যদি পিংক ডিসচার্জ হয় অর্থাৎ গোলাপী স্রাব হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে সাদাস্রাবের ঝুঁকি আছে। এক্ষেত্রে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে যদি পিরিয়ডের মাঝামাঝি সময়ে এলোভেরা জেলের মতো পাতলা স্রাব হয়, তাহলে স্বাভাবিক বলে ধরে নিতে হবে।

* সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। কেননা জরায়ুতে সংক্রমণের অধিক হারে সাদাস্রাব হয়ে থাকে।

* বিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে সেক্স হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেশি হয়ে থাকে। তাই এ সময় স্বামী দূরে থাকলে মানসিক ও শারীরিকভাবে নারীরা জটিল একটি সময় অতিবাহিত করেন। নিঃসরণের মাত্রা বেশি হয়ে থাকে। এতে করে সাদাস্রাব হতে পারে। তাই সাদাস্রাব থেকে মুক্ত থাকতে বিবাহিত নারীদের স্বামীর সংস্পর্শে থাকা জরুরি।

* মাসিক চলাকালে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার কাপড় ও অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে।

* সাদাস্রাব চলাকালে যৌনমিলন মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে করে সংক্রমণের মাত্রা অধিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

* পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, আশযুক্ত ফলমূল খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার সাদাস্রাবের ঝুঁকি কমায়।

* সঠিক ও নির্দিষ্ট সময়ে পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নিতে হবে।

* টয়লেট ব্যবহার করার পরে সবসময় সামনে থেকে পেছনে মুছা। এটি আপনার মলদ্বার এলাকা থেকে আপনার যোনিতে ব্যাকটেরিয়া আসা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

* দিনের বেলায় সুতির আন্ডারপ্যান্ট পরুন।

* আঁটসাঁট প্যান্ট, প্যান্টিহোজ, সুইমিং স্যুট, বাইক চালানোর শর্টস দীর্ঘ সময়ের জন্যে পরা এড়িয়ে চলুন।

* আপনার লন্ড্রি ডিটারজেন্ট বা ফ্যাব্রিক সফটনার পরিবর্তন করুন যদি আপনি মনে করেন যে এটি আপনার যৌনাঙ্গে জ্বালাতন করতে পারে।

* গরম জলের টাবে গোসল এড়িয়ে চলুন।

* প্রতিদিন গোসল করুন বা ঝর্ণা করুন এবং আপনার যৌনাঙ্গ শুষ্ক করুন।

* দুশ্চিন্তা করবেন না।

* অপ্রয়োজনীয়ভাবে মেয়েলি স্বাস্থ্যবিধি স্প্রে, রঙিন বা সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট পেপার, ডিওডোরেন্ট প্যাড বা ট্যাম্পন এবং বাবল বাথ এড়িয়ে চলুন। অনেকেই বিশেষ স্থান পরিষ্কারের জন্যে সাবান, ডেটলমিশ্রিত পানি অথবা ডিওডোরান্ট স্প্রে ব্যবহার করেন। এতে করে ভ্যাজাইনাতে স্বাভাবিক পিএইচের মান কমে আসে। অর্থাৎ ভ্যাজাইনাল এরিয়াতে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে ক্ষতিকর জীবাণু বৃদ্ধি পায়। ফলাফল হিসাবে যোনিপথে সংক্রমণ দেখা দেয়। যা সাদাস্রাবের কারণ। সাদাস্রাবের নিঃসরণ মেয়েদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের সুস্থতার প্রতীক। সাধারণত স্বাভাবিক স্রাব পাতলা ও চটচটে হয়ে থাকে। অনেকটা এলোভেরার জেলের মতো। তবে স্রাবের রঙ লাল অথবা কালচে হলে বুঝতে হবে সমস্যা আছে। এছাড়াও দুর্গন্ধযুক্ত ও অতিরিক্ত পরিমাণে সাদাস্রাব দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।

সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন : মাসিকের আগে সাদাস্রাব হয় কেনো?

উত্তর : আপনার মাসিকের আগে সাদাস্রাব মাসিক চক্রের একটি স্বাভাবিক অংশ। আপনার চক্রের এ পর্যায়ে স্বাভাবিক স্রাবকে কখনও কখনও ‘ডিমের সাদা শ্লেষ্মা’ বলা হয়, কারণ এটির পাতলা, প্রসারিত এবং পিচ্ছিল গঠন। এটি মাসিকের লাল রঙের পূর্বে ঘন হতে শুরু করে।

প্রশ্ন : মাসিকের কতদিন আগে সাদাস্রাব হয়?

উত্তর : প্রজনন প্রক্রিয়ার একটি চক্র হলো মাসিক। সাদাস্রাব হলো এরই একটি অংশ, যা সারা মাস ধরে চলে। যেখানে মাসিক প্রতি ২৮ দিন অন্তর ৩ থেকে ৭ দিনের জন্য হয়ে থাকে। মাসিকের পূর্বে সাদাস্রাব কিছুটা গাঢ় হয় এবং এর পরিমাণ বাড়ে তবে এটি সারা মাস ধরে কিছু পরিমাণ নিঃসৃত হয়।

প্রশ্ন : অতিরিক্ত সাদাস্রাব কেনো হয়?

উত্তর : আপনার শরীর থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সাদাস্রাব মাসিক এবং নিয়মিত যোনি স্বাস্থ্য উভয়ের জন্যেই স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত সাদাস্রাবে একটি সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এটি প্রায়শই সংক্রমণ বা যোনি ব্যাকটেরিয়া পরিবর্তনের কারণে ঘটে। উপরে উল্লেখিত কারণগুলোও এর জন্যে দায়ী হতে পারে।

প্রশ্ন : সাদাস্রাব না হওয়ার কারণ।

উত্তর : বয়স, যোনি সংক্রমণ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সাদাস্রাব না হওয়ার সমস্যার কিছু কারণ। এমনকি উর্বরতার ওষুধ যোনি শুষ্কতার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কখনও স্রাব বা তৈলাক্তকরণের অভাব একটি সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।

প্রশ্ন : সাদাস্রাব লাল হয় কেনো?

উত্তর : যৌন-সংক্রামিত সংক্রমণের কারণে সাদাস্রাব লাল হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি অন্তর্ভুক্ত : ভ্যাজাইনাইটিস। যোনির এই প্রদাহ প্রায়ই তিন ধরনের সংক্রমণের কারণে হয়। খামির, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস এবং ট্রাইকোমোনিয়াসিস।

প্রশ্ন : দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব কেনো হয়?

উত্তর : বেশির ভাগ সময়ই দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব সংক্রমণকে নির্দেশ করে। এটি যৌনাঙ্গের সংক্রমণকেই ইঙ্গিত করে। দুর্গন্ধযুক্ত ¯্রাবের কারণ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে : যৌন সংক্রমণ, গনোরিয়া, ক্ল্যামিডিয়া, জেনিটাল হারপিস, ট্রাইকোমোনিয়াসিস, স্মেগমা এবং ব্যালানাইটিস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস, অ্যানাল ফিস্টুলা। যখন আপনি দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব লক্ষ্য করবেন সাথে সাথে চিকিৎসকের এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

প্রশ্ন : পানির মতো স্রাব কেনো হয়?

উত্তর : পানির মতো স্রাবকে জলীয় স্রাব বলা হয়, যা স্বাভাবিক, স্বাস্থ্যকর যোনিগুলোর জন্যে এটি সাধারণ। বেশির ভাগ নারীর প্রজনন বছরগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১ থেকে ৪ মিলিলিটার (প্রায় ১/২ চা চামচ) স্রাব হয়। আপনি ডিম্বস্ফোটন, গর্ভবতী বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার করার কারণে আপনার ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে গেলে আপনি আরও স্রাব অনুভব করতে পারেন। সাধারণত স্রাব বেশ তরল হয় এবং কিছু নির্দিষ্ট কারণে এটি ঘন হতে পারে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ডাঃ মোঃ মাজহারুল হক : বি.এ. ডি.এইচ.এম.এস. (বি.এইচ.বি.) ঢাকা; ডি.ইউ.এম.এস. (কন্ট); এম.এইচ.জি. (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত), যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ঢাকা।

ইসলামিয়া হোমিও হল। চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

মোবাইল ফোন : ০১৯২২৪৯২৬২৪ ও ০১৭৯৪৫০৯০৮০।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়