স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জাতীয় পর্যায়ে গণি মডেল হাইস্কুল

প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জাতীয় পর্যায়ে উঠলো ২০২৩ সালে সারা বাংলাদেশের মধ্যে রানার্স আপ হওয়া চাঁদপুর গণি মডেল হাইস্কুল। গত ৭ মে কুমিল্লা ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বিভাগীয় রাউন্ডের চূড়ান্ত খেলায় কুমিল্লা হাইস্কুলকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পেলো গণি মডেল হাইস্কুল।

কুমিল্লায় চূড়ান্ত পর্বের খেলায় কুমিল্লা হাইস্কুল প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয়। তারা ১৯ ওভার ৩ বলে সবক'টি উইকেট হারিয়ে ৮৮ রান করে। বল হাতে চাঁদপুরের রাফিদ ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ১১ রানে ৪টি উইকেট তুলে নেন।

চাঁদপুর গণি হাইস্কুল ৮৯ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান করেন। ব্যাট হাতে হিমেল ২৮ ও ফারহান চৌধুরী ২৩ রান করেন।

এর আগে একই ভেন্যুতে ৪ মে রোববার বান্দরবান জেলা হাই স্কুলকে ১০ উইকেটে হারিয়ে বিভাগীয় রাউন্ডের চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলার সুযোগ পায় গণি স্কুল।

রোববার কুমিল্লা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বান্দরবান জেলা হাইস্কুল। তারা নির্ধারিত ৪০ ওভারের মধ্যে মাত্র ৩৩ ওভার ২ বলে সবক'টি উইকেট হারিয়ে ৫২ রান করেন। বল হাতে চাঁদপুরের অনিমেষ ৪টি এবং সিফাত ও রাফিদ ২টি করে উইকেট নেন।

চাঁদপুর গণি মডেল হাইস্কুল ৫৩ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ৭ ওভার ২ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৫ রান করে। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে শফিক ২৪ রান ও মাহফুজ ১৫ রান করেন।

চাঁদপুরের দলটি ২য় রাউন্ডের খেলায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের ১টি স্কুলের সাথে লড়ে এবং সেই খেলাতেও জয়লাভ করে। ওইদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্ররাসহ অভিভাবকগণ।

চাঁদপুর গণি মডেল হাইস্কুলের ক্রিকেট দলটি প্রথম রাউন্ডের খেলাগুলোতে জেলা পর্যায়ের স্কুল দলগুলোর সাথে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অংশ নেয়। জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলেই কুমিল্লাতে খেলার সুযোগ পায় বলে দলের কোচ পলাশ কুমার সোম জানান।

চাঁদপুর গণি মডেল হাইস্কুল জেলা পর্যায়ে আল-আমিন একাডেমীর সাথে ৪ উইকেটে, হাসান আলী হাইস্কুলের সাথে ১৬৩ রানে, পুরাণবাজার মধুসূদন হাইস্কুলের সাথে ১২৫ রানে এবং জেলা পর্যায়ের ফাইনালে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে ১৭৪ রানে জয়লাভ করে।

গণি মডেল হাই স্কুলের খেলোয়াড়রা হলেন : সাফি, আয়ান, রাফিদ, ইলিয়াছ, মুনতাসির, সিফাত, নাফি, ইয়াসিন, ফারদিন (১ ) ও ফারদিন (২)। কোচ পলাশ কুমার সোম।

জাতীয় পর্যায়ে যাওয়ায় গণি মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবব্বাস উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বিদ্যালয়ের পক্ষে অংশ নেয়া ক্রিকেটারগণ জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে খুবই ভালো খেলেছেন। দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারই তাদের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী খেলছেন। আশা করি আমাদের দল এবারো জাতীয় পর্যায়ের স্কুল টুর্নামেন্টের খেলায় ভালো কিছু করবে। এজন্যে আমি জেলাবাসী সকলের কাছে দলের এবং খেলোয়াড়দের জন্যে দোয়া ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান বাবুলের সাথে এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, গতবারের মতো জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ভালো খেলা উপহার দিয়ে বিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলটি ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পেয়েছে। দলের ক্রিকেটারগণ নিয়মিত অনুশীলন করছেন। দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারই জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ভালো পারফরমেন্স করছেন। আমরা সকলের দোয়া চাই।

বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্ যাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ সেলিম আকবর এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা জেলা পর্যায়ের খেলার সময় মাঠে উপস্থিত থেকে দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিয়েছি এবং সবসময়ই খোঁজখবর রেখেছি। জেলা শহরের উদীয়মান ক্রিকেটারদের নিয়ে এবং স্কুলে পড়া ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গঠন করা হয়েছে। আশা করি গতবারের মতো এবারও আমাদের দলটি জাতীয় পর্যায়ে ভালো খেলে চাঁদপুরের সুনাম অর্জন করবে রাজধানী ঢাকাতে।

দলের কোচ ও ক্রিকেটার পলাশ কুমার সোম এ প্রতিবেদককে বলেন, গতবছরও আমরা জেলা পর্যায় থেকে ২য় রাউন্ডে, কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে বিভাগীয় পর্যায় এবং ঢাকাতে খেলার সুযোগ পাই। আমাদের দলের সকল খেলোয়াড়ই প্রত্যেকটি ম্যাচে ভালো খেলছেন। আশা করি আমাদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আমরা এ বছরও ভালো কিছু করতে পারবো। আমাদের প্রত্যাশা, ঢাকাতে শুরু হওয়া স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জাতীয় পর্যায়ের খেলায় দলগুলোর সাথে আমাদের দলের ক্রিকেটারগণ ভালো খেলা উপহার দিবে।