প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
৪২তম জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ : ট্রায়ার-১
কক্সবাজারে ৯০ ওভারের ম্যাচে অংশ নিচ্ছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন চাঁদপুর
খুলনার সাথে ৪৩ রানের জয় দিয়ে ৪২তম জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতায় মৌলভীবাজার এম সাইফুর রহমান জেলা স্টেডিয়ামে জয়ের পর্ব শুরু করেছিলো চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল। আর সেই মাঠেই ৪৩ রানে শরীয়তপুরের সাথে জয়লাভ করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ইলিশ নগরী চাঁদপুরের এই ক্রিকেট দল। আর এ জয়ের ফলে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য ৯০ ওভারের ম্যাচে অংশ নিতে যাচ্ছে দলটি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে সারা বাংলাদেশে ৩২ জেলা নিয়ে ৮টি ভেন্যুতে ট্রায়ার-১-এর খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। ভেন্যুগুলো হলো : ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, চাঁদপুর, জামালপুর, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর ও মৌলভীবাজার জেলা স্টেডিয়াম। দেশের ৬৪ জেলা ক্রিকেট দলের মধ্যে যারা ট্রায়ার-১-এ উঠেছে তারাই এ প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পেয়েছে।
৮ ভেন্যুর চ্যাম্পিয়ন দলগুলোকে দুগ্রুপে ভাগ করে দুদিনের ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৯০ ওভার করে। এ পর্যায়ে ফাইনালে ওঠা দু দলের জন্যে রয়েছে নগদ প্রাইজমানিসহ ট্রফি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫ লাখ ও রানারআপ দল পাবে আড়াই লাখ টাকা। আর এ ম্যাচগুলোতে স্ব স্ব জেলায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার যারা জাতীয় পর্যায়ে খেলছেন তারাও দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাবেন।
চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল মৌলভীবাজারে ৩ মার্চ প্রথম ম্যাচে অংশগ্রহণ করে শক্তিশালী খুলনা জেলা ক্রিকেট দলের সাথে। চাঁদপুর ৪৩ রানের জয় পায়। টসে জয়লাভ করে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় চাঁদপুর। তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রান করে। ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সবোর্চ্চ রান করেন জিসান ৬৬, তোফায়েল শাকিল ৬৬, ফজলে রাব্বি ৩৯ ও সাদ্দাম ২১।
খুলনা জেলা ক্রিকেট দল ২৪৮ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ৪৮ ওভার ৪বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান করে। বল হাতে চাঁদপুরের পক্ষে সাদ্দাম ৩, ফজলে রাব্বি ও ইয়াসিন ২টি করে উইকেট নেন।
চাঁদপুর প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে ২য় ম্যাচ খেলে জয়পুরহাটের সাথে। ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে চাঁদপুর প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করে। দলের পক্ষে অলরাউন্ডর ফজলে রাব্বি ১০১ বলে করেন ৯৮ রান।
জয়পুরহাট জেলা ক্রিকেট দল ২৬৫ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ৩৯ ওভার ১ বলে সবক'টি উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে। চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল ৯০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দল ১০ মার্চ রোববার শেষ ম্যাচে অংশ নেয় শরীয়তপুর জেলা ক্রিকেট দলের সাথে। টসে জয়লাভ করে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় চাঁদপুর। দলটি ৪৯ ওভার ৫ বলে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান করে। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ আশরাফ ৯৩ ও তোফায়েল ৪০ রান করেন।
শরীয়তপুর জেলা ক্রিকেট দল ২৬৯ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামে। তারা ৪৭ ওভার ৩ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান করে। চাঁদপুর ৪৩ রানে জয়লাভ করে গ্রুপ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু এ প্রতিবেদককে বলেন, দলের সকল খেলোয়াড়ের আন্তরিকতা এবং ধারাবাহিকতার কারণেই আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে উঠেছি। আশা করি এ দলটি কক্সবাজারে ভালো খেলবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-কমিটির সম্পাদক শেখ মোতালেবের সাথে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, দলের ক্রিকেটাররা তাদের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। সকলেই ক্রিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে এবং তারা বিভিন্ন দলের হয়ে নিয়মিত খেলে যাচ্ছে। আশা করি চূড়ান্ত পর্যায়ে দলটি ভালো করবে।
জেলার ক্রিকেটের কর্ণধার ও বিসিবির কোচ শামিম ফারুকী এ প্রতিবেদককে বলেন, খেলোয়াড়রা প্রথম মাচ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ম্যাচেই ভালো করেছেন। ব্যাটসম্যান ও বোলাররা সকলেই ভালো পারফরমেন্স করেছেন। তাদের ধারাবাহিকতা ছিলো অনেক ভালো। তারা আগামীতে ভালো করবে বলে আশা করছি।
জেলা দলের টিম ম্যানেজার ও সাবেক ক্রিকেটার এস এম মুজিবুল হক রাসেল এ প্রতিবেদককে বলেন, দলের খেলোয়াড়রা স্টেডিয়ামে বেশ ক'দিন অনুশীলন করেছেন। তারা মৌলভীবাজারে এসে ম্যাচ খেলার পাশাপাশি নিয়মিত অনুশীলন করেছেন। দলের সকল ক্রিকেটারই খেলার জন্যে পুরোপুরি ফিট ছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় আমরা আগামী দিনেও এগিয়ে যেতে চাই।
জেলা দলের ট্রেইনার ও সাবেক ক্রিকেটার সাইফ সোহাগ বলেন, শুরু থেকেই আমাদের দলের খেলোয়াড়রা ভালো খেলছেন। তারা ম্যাচের পর এবং অনুশীলনের সময় সবার সাথে সবাই শেয়ার করছেন ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে। আশা করি আমরা ২ দিনের ম্যাচেও ভালো করবো। এ জন্যে আমরা সকলের দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
চাঁদপুর জেলা দল : সাদ্দাম হোসেন, ফজলে রাব্বি, মাসুদ, তোফায়েল মাল, সাইফুদ্দিন বাবু, ফাহাদ, জিসান, শাকিল, ইয়াসিন , রাফি, মেহেদী, রিয়াদ, হীরা ঢালী, আশরাফ, তানভীর, সাইমুন । দলের ট্রেইনার সোহাগ ও টিম ম্যানেজার এস এম মজিবুল হক (রাসেল), কোচ বাবু।