প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুরে ৫১তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের খেলায় দলগত ও ব্যক্তিগত পদকের তালিকায় সেরা চাঁদপুর সদরের মৈশাদী ইউনিয়নের বীর প্রতীক মমিনউল্লাহ পাটওয়ারী একাডেমি।
বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা সমিতির চাঁদপুর জেলার আয়োজনে উপজেলা পর্যায়ে অ্যাকাডেমিটি অ্যাথলেটিক্সে দলগত আটটি ইভেন্টে ষোলটি পুরস্কার অর্জন করে। উপজেলা পর্যায়ের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয় ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।
জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত এ শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় উক্ত একাডেমির শিক্ষার্থীরা দলগত খেলায় সাতটি ও অ্যাথলেটিক্সে তিনটি পুরস্কার অর্জন করেন। এ খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয় ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
চাঁদপুর জেলা পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার বিকেল ৪টায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে। চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা পর্যায়ের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার।
চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও ওসমানিয়া মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক ও দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসিন আরাফাত, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামাল হোসেন, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জিল হোসেন, পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান লাবু, প্রভাষক মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুম প্রমুখ।
বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমির অধ্যক্ষ শাহ মোঃ জালাল উদ্দিন চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, মানবজীবনের শ্রেষ্ঠসময় ছাত্রজীবন। এ সময় থেকে জীবন গড়ার চলে প্রস্তুতি। জীবনকে সুন্দর ও স্বার্থক করতে হলে ছাত্রজীবনে গুণগত শিক্ষার যেমন প্রয়োজন তেমনি সুস্থ শরীর ও সুস্থ মনের জন্য প্রয়োজন খেলাধুলাও। আমি বিশ্বাস করি একজন শিক্ষার্থীকে আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। আর এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমি। একাডেমিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি খেলাধুলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছে। একাডেমিটি শিক্ষার সাফল্যের সাথে খেলাধুলায়ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর বহন করে চলছে। একাডেমিটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, (২০২১ সালে করোনাকালীন বন্ধ ছিল) সালে শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতিটি খেলায় চাঁদপুর সদর উপজেলা, জেলা, কুমিল্লা উপ অঞ্চল, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে আসছে। চলতি বছর ২০২৩-এর জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ‘শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২২’ একাডেমির শিক্ষার্থীরা এর ধারাবাহিকতা অক্ষুণœ রেখে উপজেলা ও জেলায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। আমি একাডেমির শিক্ষার্থী সকল খেলোয়াড়কে তাদের নৈপুণ্যের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি ভবিষ্যতেও একাডেমির শিক্ষার্থী খেলোয়াড়রা আরও বড় সাফল্য বয়ে আনবে এই প্রত্যাশা করছি।
একাডেমীর প্রভাষক উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপনন ও ক্রীড়ার সাথে জড়িত মোঃ রাব্বি বকাউল এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী স্যার তাঁর নিজ গ্রামের ছেলে-মেয়েদেরকে সর্বদিক হতে দক্ষ করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সালে গড়ে তোলেন। তাঁর উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে আমার অধ্যক্ষ মহোদয়ের তত্ত্বাবধনে পড়াশোনার পাশাপাশি আমার সদ্য সাবেক দুজন সহকর্মী আবু সালেহ স্যার ও জাহিদ স্যারসহ আমার সকল সহকর্মীর হাত ধরে আমাদের প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা পূর্ণতা পায়। কুমিল্লা অঞ্চলে দলগত খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে যশোরে চাঁদপুর বাস্কেটবল দলের হয়ে খেলে আসছে। এই ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রতিষ্ঠান খেলাধুলায় বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরি করে আমার প্রতিষ্ঠান তথা আমার জেলাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছি।
জেলা পর্যায়ে অংশ নেয়া বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী একাডেমির খেলোয়াড়রা হলেন :
ভলিবল (মেয়ে) : সুমাইয়া আক্তার শারমিন (ক্যাপ্টেন), খাদিজা আক্তার অপু, ইতি আক্তার, ইতি আক্তার জায়েদা, পান্না আক্তার, ফারহানা আক্তার, ছানিয়া আক্তার, তামান্না আক্তার, মার্জান খানম, ছামিয়া আক্তার, তাসমিয়া আক্তার, আছমা আক্তার।
বাস্কেটবল (মেয়ে) : সুমাইয়া আক্তার শারমিন (ক্যাপ্টেন), খাদিজা আক্তার অপু, ইতি আক্তার, ইতি আক্তার জায়েদা, পান্না আক্তার, ফারহানা আক্তার, ছানিয়া আক্তার, তামান্না আক্তার, ছামিয়া আক্তার ও প্রীতি আক্তার।
বাস্কেটবল (ছেলে) : মোঃ রাকিব আল হাসান রাকিব (ক্যাপ্টেন), ইসতিয়াক আহমেদ, মোঃ মাজহারুল ইসলাম গাজী, প্রান্ত মাহমুদ, মেহেদি হাসান সালিম, নুরে আলম পাটোয়ারী প্রান্ত, সিয়াম মিয়া, মাহারী হাসান, মুজাকির হোসেন আবির ও সাইফুল মিজি।
অ্যাথলেটিক্স (বালিকা) বড় দলে উচ্চ লাফ ও বর্ষা নিক্ষেপে জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় হয় সুমাইয়া আক্তার শারমিন, অ্যাথলেটিক্স লাফ-জাফ-গাফ বালক মাঝারি দলে দ্বিতীয় হয় ৮ম শ্রেণির ছাত্র ফিরোজ হোসেন খান।
উপজেলা পর্যায়ে অংশ নেয়া উক্ত একাডেমির খেলোয়াড়রা হলেন :
বাস্কেটবল (বালক) : রাকিব আল হাসান রাকিব, মোঃ মাজহারুল ইসলাম গাজী, মোঃ নূরে আলম পাটোয়ারী, ইশতিয়াক আহমেদ, মেহেদী হাসান সালিম, প্রান্ত মাহমুদ, আরাফাত হোসেন মাহারী, মুজাক্কির হোসেন আবির, সিয়াম মিয়া ও সাইফুল ইসলাম।
বাস্কেটবল (বালিকা) : সুমাইয়া আক্তার শারমিন, খাদিজা আক্তার অপু, সামিয়া আক্তার, সানিয়া আক্তার, তামিমা আক্তার প্রীতি, ইতি আক্তার, ইতি আক্তার জায়েদা, তামান্না আক্তার, পান্না আক্তার ও ফারহানা আক্তার।
ভলিবল (বালক) : রাকিব আল হাসান রাকিব, মাজহারুল ইসলাম, মোঃ নূরে আলম পাটোয়ারী, ইশতিয়াক আহমেদ, মেহেদী হাসান সালিম, প্রান্ত মাহমুদ, আরাফাত হোসেন মাহারী, কামাল হোসেন জয়, হাবিবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, শিহাব মজুমদার ও মাহাবিন চৌধুরী।
ভলিবল (বালিকা) : সুমাইয়া আক্তার শারমিন, খাদিজা আক্তার অপু, সামিয়া আক্তার, ছানিয়া আক্তার, মার্জান খানম, ইতি আক্তার, ইতি আক্তার জায়েদা, তামান্না আক্তার, পান্না আক্তার, ফারহানা আক্তার, আসমা আক্তার ও তাসমিয়া আক্তার।
টেবিল টেনিস (বালক দ্বৈত) : মিহাদ হোসেন ও ইমরান খান।
টেবিল টেনিস (বালক একক) : শাহরিয়ার অর্ণব।
টেবিল টেনিস (বালিকা একক) : মিলি আক্তার।
টেবিল টেনিস (বালিকা দ্বৈত) : নুরজাহান ও মিলি আক্তার।
পরবর্তী পর্যায়ের খেলা কুমিল্লা অঞ্চলে আগামী ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমি অঞ্চল পর্যায়ে দলগত খেলায় চ্যাম্পিয়ান হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলবে বলে প্রতিযোগীরা আশাবাদী।