বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

ভালোবাসার সমর্থনে
অনলাইন ডেস্ক

আমার জন্য এ বর্ষায়ও তুমি কদম ফুল এনেছ?

হ্যাঁ, বর্ষায় প্রিয়জনকে কদম ফুল দেওয়ার মধ্যে ভালোবাসার অন্যরকম স্বাদ পাওয়া যায়। বাংলার প্রকৃতি বহু হিসাব করেই বর্ষাতে কদমের মতো সুন্দর-নিষ্পাপ ফুল পাঠিয়েছে। তোমার জন্য অনেক কষ্টে ফুলগুলো সংগ্রহ করেছি। বর্ষায় ভালোবাসার মানুষকে কদম ফুল দেওয়ার রেওয়াজ বোধ হয় বেড়ে গেছে। প্রস্ফুটিত কদম পাওয়াই দুষ্কর।

তুমি জানো না, কদম ফুল আমার সহ্য হয় না।

আগেরবার বর্ষায়ও তো তোমাকে একগাদা তরতাজা কদম ফুল দিয়েছিলাম। বৃষ্টি ধোয়া সে ফুল নিয়ে বিস্মিত চোখে ভালোবাসার কত না মধুর শব্দমালা গেঁথেছিলে। কী যে খুশি ছড়িয়ে পড়েছিল তোমার চোখে-মুখে!

তাই বলে এবারও তোমাকে কদম ফুলই আনতে হবে?

রেইনকোট থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ছে। তাতে কংক্রিটের ওপর আঁকাবাঁকা রেখা তৈরি হচ্ছে। মানুষের মনের ভেতরেও কি অনুভূতির এমন অদ্ভুত আনাগোনা সময়ের সঙ্গে দিক বদলে ফেলে? পুরো দুই ঘণ্টা অভিযানের পর পাওয়া কদম ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে হতাশ কণ্ঠে বলি-

তোমার বদলে যাওয়া পছন্দ-অপছন্দের কথা আমি জানতাম না। আমার ভালোবাসার মতো কদম ফুলগুলোও কিন্তু নির্দোষ। বৃষ্টিতে ধুয়ে তা আরও পবিত্র হয়ে উঠেছে। নিষ্পাপ এ ফুল পছন্দ না করার কারণটা জানার অধিকার আমার আছে কী?

তুমি এখনও আগের মতোই বোকা রয়ে গেলে! তোমাকে না বলেছি, বিশ্বকাপ ফুটবলে আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক?

আর্জেন্টিনার সমর্থন করাতে তো অপরাধের কিছু দেখছি না। তার সঙ্গে এ কদম ফুলকে মেলানোর কারণ কী?

কদমের হলুদ ফুল আর সবুজ পাতার সঙ্গে ব্রাজিলের হলুদণ্ডসবুজ পতাকার মিল আছে তুমি জানো না? এ সময়ে আমার হাতে কদম ফুল থাকার মানে বোঝ?

অবন্তীর কথায় আমার বিস্ময়ের বিস্তৃতি বেড়ে যায়। সময়কে ধরতে গিয়ে সবকিছুর মধ্যে আরোপিত সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য খুঁজতে হবে কেন? প্রকৃতি তুলনাহীন উদার, রঙিন। কী অপরূপ রঙে সাজিয়ে রেখেছে এ ধরণীকে! পতাকার হলুদণ্ডসবুজ বা নীল-সাদা মানুষের সৃষ্টি। এসব নিয়ে বিভাজন মানুষের ক্ষুদ্র সত্তার প্রকাশ ছাড়া কিছু নয়। অবন্তীকে তা বোঝানোর সাধ্য কার?

শরীর থেকে ভেজা রেইনকোট খুলতেই অবন্তীর সারা মুখে খুশির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ও আহ্লাদিত কণ্ঠে বলে ওঠে-

তোমার শার্টটা কিন্তু দারুণ! সাদার ওপর নীলের চেকে কী সুন্দর মানিয়েছে! এটিই পরে থাকবে। এর সঙ্গে আর্জেন্টিনার পতাকার অনেক মিল!

অবন্তীকে আর সুযোগ না দিয়ে আমার বিশ্বাসকে তুলে ধরি-

আমি কিন্তু আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল হিসাব করে শার্ট পরিনি। তোমার জন্য ফুলও আনিনি।

তাহলে তুমি কোনো দলকে সমর্থন করো না?

একটা খেলায় কাউকে সমর্থন করলেই তা প্রকাশের প্রতিযোগিতায় নামার বিষয়ে আমার আগ্রহ নেই। ভালো লাগার অনুভূতি প্রকাশের এটি একেবারেই নগণ্য উপায়। আমার সমর্থন পতাকায় নয়, অন্য কোনো জায়গায়।

বড় বড় চোখে আগ্রহের আতিশয্য ফুটিয়ে অবন্তীর জিজ্ঞাসা- ‘সেটি কোথায়?’

আলগোছে ফুলগুলো বাড়িয়ে কদমের মতোই কোমল স্বরে বলিথ ‘তোমার ভালোবাসায়।’

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়