বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

বইমেলায় কবি
অনলাইন ডেস্ক

কবি সাহেব আমি আপনার জন্য কোথায় দাঁড়াব। আপাতত শাহবাগ দাঁড়ালেই চলবে। ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বইমেলার ধুলো গায়ে না লাগলে কেমন যেন জমেই না

ফেসবুকে স্ট্যাটাসটা দিয়ে সবেমাত্র ব্যাগটা কাঁধে নিয়েছি, এমন সময় সাকিবের ফোন। তাহলে কবি সাহেব বইমেলায় আসছেন? উত্তরে আমি হেসে বললাম, এই প্রাণের মেলায় না গিয়ে থাকা যায়? তা ছাড়া এই যান্ত্রিক জীবনের সব কোলাহল ভুলে থাকার ওই একটা জায়গাই তো আছে। সাকিব বলল, তুই পারিসও বাবা সেই ভার্সিটি লাইফের সেই মানুষটিই আজও রয়ে গেলি, একটুও বদলাসনি। তা কবি সাহেব আমি আপনার জন্য কোথায় দাঁড়াব। আপাতত শাহবাগ দাঁড়ালেই চলবে। ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বইমেলার ধুলো গায়ে না লাগলে কেমন যেন জমেই না। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে সাকিব বলল, বিয়েটিয়ে এবার কর। আমি একবার শুধু ওর মুখের দিকে তাকালাম, তারপর আবার নিজের কাজে মনোযোগ দিলাম। তানিশাকে আজ খুব মনে পড়ছে। বইমেলাতেই তানিশার সঙ্গে আমার পরিচয়। লেখকদের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করতে তানিশার ভালো লাগে। তাই প্রতিদিনই বইমেলায় আসতো। আমি তখন ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র, একটা বইয়ের স্টলে বসতাম। ব্যাস, তানিশার সঙ্গে বই লেনাদেনায় কখন যে মনটাও দিয়ে দিয়েছি, টের পাইনি। তারপর ফেসবুকে কিছুদিন সম্পর্কের অগ্রগতি। তানিশা যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পর সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নারীর বিরহেই বুঝি মনটা কবিদের দলে চলে যায়। অনেক গল্প-কবিতা লিখি তানিশাকে নিয়ে, যদি একটিবার ওর নজরে পড়ে। তানিশার গালে সুন্দর একটা টোল পড়ত, সেই টোল নিয়ে কতবার যে কবিতা লিখতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। আজ লিখি অনেক অনেক লিখি; কিন্তু তানিশার চোখে পড়ে না। মেলাতে একটা বইও বের করেছি ওকে নিয়ে। সাকিবের ফোনের শব্দে চমক ভাঙলো। কার সঙ্গে যেন বেশ উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে। তারপর ফোন রেখে বলল, দোস্ত আমি যাইরে, আমার জরুরি একটা কাজ পড়ে গেছে। বন্ধুকে বিদায় দিয়ে আমি একাই হাঁটতে লাগলাম। বইয়ের মিষ্টি গন্ধ, সেই সঙ্গে তানিশার স্মৃতি, বারবার অতীতে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ পেছন থেকে একটা মেয়েলি কণ্ঠ শোনা গেল। অনেকটা চমকেই পেছনে ফিরে তাকালাম। তানিশা দাঁড়িয়ে। কী ব্যাপার কতক্ষণ ধরে ডাকছি, বড় বড় নিশ্বাস ফেলার শব্দ, সেই সঙ্গে তানিশার কণ্ঠে অভিমানের সুর। আমি যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আজ অনেকদিন পর তানিশাকে দেখছি। আজ সকালে দেশে ফিরেছি, আইডি অ্যাকটিভ করতেই ফেসবুকে তোমার স্ট্যাটাসটা দেখলাম। বেশ তো কবি হয়ে গেছ। আমি কোনো কথারই উত্তর দিতে পারছি না। স্বপ্ন দেখছি না তো? তানিশার হাত ছুঁয়ে দেখলাম। কই স্বপ্ন তো নয়। তানিশা আশপাশে তাকিয়ে বলল, কী হলো, পাথর হয়ে গেলে নাকি?। আমি বললাম, না অবাক হয়েছি, আমি তো ভেবেছি তুমি আর কোনোদিন ...। স্যরি, আসলে ইচ্ছে করেই তোমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছি, বলতে পারো ভালোবাসার পরীক্ষা নিলাম। খুব কমন পরীক্ষা, তবুও যেন খুব কষ্টের। তা রেজাল্ট কী হলো?। পাস মার্ক দিতে পারি, যদি ঘুষ দাও। আমি হেসে দিলাম। তা কবি সাহেব একটা অটোগ্রাফ দেওয়া যাবে?। তুমি একটুও বদলাওনি। তানিশা হেসে বলল, বদলাতে চাইলেই কি আর বদলানো যায়? তাহলে অটোগ্রাফ চাই? হু। আমি তানিশার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, হৃদয়ে দিলে চলবে? তানিশা আবারও হেসে উঠল। হেসে উঠল ওর গালের টোল।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়