মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

রোদে পোড়া পালিশ
অনলাইন ডেস্ক

(গত সংখ্যার পর)

শোলকা ওসির রুম থেকে হু হু করে বেরিয়ে পড়ে। ওসি শোলকার বাবা ও নিপুকে ফোন করে বিকেলের মধ্যে থানায় এসে দেখা করতে বলে। ওসির একপ্রকার মাথা খারাপ হয়ে যাবার অবস্থা। একটার পর একটা ঘটনা। সব ঘটনার মানুষ সুষ্ঠু সমাধান চায়। কিন্তু সব সমস্যার সমাধান কি পাওয়া সম্ভব?

শোলকার বাবা ও নিপু একসাথেই থানায় আসে। ওসির রুমে প্রবেশ করে। বেশ কয়েকজন লোক ছিলো। ওসি ওসব লোকদের বিদায় করে দিয়েছেন। এবার শোলকার বাবাকে বাহিরে অপেক্ষা করতে বলে। তারপর দরজা বন্ধ করে দ্রুত কথা শুরু করে ওসি।

-শোলকা তোমার কাকাতো বোন। তোমাদের রক্তের সম্পর্কের মাঝে কোনো আত্মীয় হয় না। আমি সব জানি। তারপরেও শোলকা তোমাকে ভালোবাসে। সে তোমাকে বিয়ে করতে চায়। আমি তাকে কথা দিয়েছি তোমাকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার। তুমি তাকে বিয়ে করবে। কথা ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে বলে লাভ নেই। সাপ্পাসাপ্পা বলে দিলাম।

-না স্যার এটা কেমন করে হয়? আমার পক্ষে অসম্ভব। এটা সম্ভব না। তাছাড়া আমার কোনো চাকুরি-বাকুরি নেই। আমি বিয়ে করে তাকে খাওয়াবো কী? সমাজ যা মেনে নেবে না, তা আমি কিভাবে করি?

-শোন। আমি কোনো ওজর-আপত্তি বুঝি না। শোলকাকে তোর বিয়ে করতে হবে। তুই শুধু আমাকে সময় জানাাবি এবং আগামীকালের ভেতরে। আর না হয় মাথার উপর মামলতো ঝুলে আছেই। জীবন বরবাদ করে হয়ে যাবে।

ওসির এমন কথা শোনে নিপুর মাথায় যেন সাত আসমান ভেঙে পড়ে যেন। শোলকা না হয় আমাকে পছন্দ করে। করতেই পারে। তাই বলে বিয়ে করতে হবে কেন? যদি বিয়ে করলে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে না পড়তাম তাহলে করে নিতাম। ওসি কেন আমাকে এভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করবে। অথচ এ ঘটনায় আমি কুড়ি হাজার টাকা দিয়েছি। এখন কিসব কথা বলছেন তিনি। এ চিন্তা করতে করতে ওসির রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে নিপু। নিপু বের হতে দেখেই শোলকার বাবা দ্রুত এসে ওসির রুমে প্রবেশ করে।

-স্যার আমাকে কেন ডেকেছেন?

-শোনুন, আপনার মেয়ে শোলকা আপনার ভাইয়ের ছেলে নিপুকে বিয়ে করতে চায়। কাছে শুনে খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু কিছু করার নাই। নিপু ওকে বিয়ে করতেই হবে। আর আপনারাও তা মেনে নেবেন।

-তা কী করে সম্ভব স্যার? আমাদের হিন্দু শাস্ত্রেতো এমন নিয়ম নাই।

-না থাকলে নিয়ম করে নেবেন। আর না হয় আপনার মেয়ের জীবন শেষ হবে নিপুর জীবনও। সুতরাং দুই জীবনের দিকে তাকিয়ে সব মেনে নেন। আমি আপনাদের মঙ্গলের জন্যেই এ প্রস্তাব দিয়েছি।

-কিন্তু স্যার এসব কথাতো সমাজে বলতেই পারবো না। আর আমার মেয়ের এখানে কী দোষ?

-আরে দাদা। আপনার মেয়েই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল। আপনার মেয়ে এবং নিপু মিলে নুপুরকে খুন করেছে। শুভ আসলে এখানে কিছুই করেনি। আর আমি যা বলেছি তাই সত্য। আপনার মেয়ের কথাতেই আমি শুভকে এ মামলায় ফাঁসিয়েছি। তার জীবনে গুরুত্বর্পূণ সময় কারাগার আর মামলাতেই শেষ হয়ে যাবে। এখন আপনার মেয়ে ও ভাতিজার জীবন বাঁচাতে চাইলে যা বলেছি তাই করুন।

-স্যার। আমি কী বলবো বুঝতে পারছি না। আমাকে একটু চিন্তা করতে দিন। না হয় আগামী দুদিন পর সিদ্ধান্ত জানাবো।

নিপু কাকার জন্যে অপেক্ষা না করেই বাড়ি চলে যায়। আর শোলকার বাবা নিপুকে অনেক খোঁজখুঁজি করে না পেয়ে বাড়ি চলে যায়। বাড়িতে এসে গোমরা মুখে বসে থাকে শোলকার বাবা। নিপু একটা অস্থিরতার মধ্যে যাচ্ছে। সে কী করবে বুঝে উঠতে পারে না। গুমট একটা অস্থিরতা মধ্যে কাটে সময়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে। আস্তে আস্তে রাত গড়িয়ে। নিপুদের ঘরে আসে শোলকা। জেঠিমাকে বলে নুপুর যে খাটে ঘুমিয়ে ছিলো সে খাটে শোয়ার অনুমতি নেয়। নিপুর ঠিক দক্ষিণ পাশের রুমে ঘুমিয়েছে। তখন মধ্যরাত নিপুর কাছে আসে শোলকা। নিপুর গায়ে হাত দিয়ে জাগায়। মূলত নিপুও ঘুমাতে পারেনি। মানসিক চাপে অস্থির হয়ে উঠেছে সে। শোলকার বাবাও ঘুমাতে পারেনি। মেয়ে কোথায় আছে সে খবরও রাখেনি। শোলকা অবশ্য তার মায়ের কাছে বলেই জেঠিদের ঘরে ঘুমাতে এসেছে।

শোলকা বলে, নিপু বাহিরে চলো কিছু কথা আছে। তোমার সাথে খুব জরুরি কথা আছে। নিপু বলে কী কথা?

-বাহিরে চলো। আখড়ার কাছে। ওখানে শান্ত পরিবেশ। যেহেতু ভয়ে ওখানে রাতে কেউ যায় না। এরচেয়ে নিরিবিলি কথা বলার সুযোগ মিলবে না।

-আমি মানসিক চাপে আছি।

-সব চাপ সারিয়ে দেবো। চলো। হাত ধরে নিপুকে বের করে নিতে চায় শোলকা।

-আচ্ছা আচ্ছা। তুমি ঘরের দরজা খোল। যাতে শব্দ না হয়। নিঃশব্দে বের হও। (চলবে)

[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়