প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি
বিষয় : বাংলাদেশে সকল সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম কর্মীদের নিরাপত্তার জন্যে যুক্তরাজ্য ইউকেবাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির অনুরোধ।
মাননীয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস,
বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন । জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন সদস্য চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা সভাপতি
ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের কক্ষে ভাংচুর চালিয়েছেন এবং জিনিসপত্র লুটপাট করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া অগঠনতান্ত্রিকভাবে নিজেদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, তারা অগঠনতান্ত্রিকভাবে সভা আহ্বান করে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি এবং একজন সদস্যসহ তাদের ৩ জনের সদস্যপদ বাতিল করেছেন। এছাড়া ৫০ জনের বেশি সিনিয়র সাংবাদিকের সদস্যপদ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা সাংবাদিকদের শারীরিক নিরাপত্তা ও দেশের গণমাধ্যমগুলোর অফিসে কাজের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যে আপনার প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। সম্প্রতি বাংলাদেশে সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মারাত্মকভাবে হামলার শিকার হয়েছেন এবং তাদেরকে ভয়-ভীতিও দেখানো হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি । সাংবাদিকদের তাদের কাজের জায়গা থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করানো হচ্ছে। একটি সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্যে স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য, যা আইন দ্বারা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত থাকবে। সেনাবাহিনী সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে দুর্বৃত্তরা বেশ ক'টি টেলিভিশন চ্যানেল ও অন্যান্য গণমাধ্যম অফিসে জোরপূর্বক প্রবেশ করে সহিংস হামলা চালায় ও ব্যাপক তছনছ করে। তার মধ্যে রয়েছে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম ও কালচারাল টেলিভিশন চ্যানেল যেমন-একাত্তর টিভি, সময় টিভি, এটিএন নিউজ, এটিএন বাংলা, মাই টিভি, এশিয়ান টিভি, বিজয় টিভি এবং গান বাংলা। অনেক সাংবাদিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে এবং তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে তারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত এসব হামলার লক্ষ্যবস্ত হয়েছেন । হামলাকারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব কার্যালয়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে আর শ্যামল দত্তের সংবাদপত্র অফিসেও হামলা চালায়। তবে তিনি এই হামলা থেকে রক্ষা পান। কিন্তু এটা অনুধাবনযোগ্য যে, শ্যামল দত্ত তার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনো শঙ্কিত আছেন। এসব হামলার পরিণামে শ্যামল দত্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ ত্যাগ করতে চাইলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাদের বাধা দেয়। তারা তাকে জানায় যে, অন্যদের সঙ্গে তার নামে একটি তালিকা আছে, যাদের উপর দেশের বাইরে যেতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । এসব বিষয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশের সকল সাংবাদিকের জন্যে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারা এবং সব ধরনের সমস্যা ও হামলা থেকে যাতে সুরক্ষা পায় সেটি নিশ্চিত করার জন্যে আপনার প্রতি আমরা আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
ইউকেবাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটি,
যুক্তরাজ্য।
তাং ১২-০৮-২০২৪।
-প্রেস বিজ্ঞপ্তি।