প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
ফেরাউনদের সংস্কৃতি শাম এল-ন্যাসিম উদযাপিত হলো মিশরে
হাজারো বছরের লালিত ফেরাউনিক ঐতিহ্য ঋতুরাজ ‘শাম এল-ন্যাসিম’ (বাতাসে সুঘ্রাণ) উৎসব এসে ধরা দিলো মিশরের ঘরে ঘরে। মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মের লোকজন ও সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সবাই উৎসবটি এক সাথে পালন করে। প্রাচীন মিশরীয়রা খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০ থেকে শামণ্ডএল-ন্যাসিম উৎসব উদযাপন করতো। রাজধানী কায়রোয় অবস্থিত গিজার দি গ্রেট পিরামিডের সাথে সূর্য কিরণের পরিমাপ করে প্রতি বছর দিনটির সঠিক তারিখ নির্ধারণ হয়ে থাকে, যা সাধারণত কপটিক অর্থোডক্সদের ইস্টার সানডের পরের সোমবার হয়ে থাকে। এদিনে মিশরে দিন এবং রাতের দৈর্ঘ্য সমান।
দিবসটি উপলক্ষে হেলিও পুলিশ আন্তর্জাতিক পার্কে কায়রো সিটি গভর্নর মেজর জেনারেল খালেদ আবদেল-আল মিশরীয়দের সাথে শাম এল-ন্যাসিম উদ্ যাপনে অংশ নেন এবং শিশু কিশোরদের মাঝে ফুল, মিষ্টি এবং খেলনা বিতরণ করেন।
উৎসবটি প্রাচীন মিশরীয়দের কৃষিক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত। শাম এল-ন্যাসিম নামটি প্রাচীন মিশরীয় ভাষা আফ্রাশিয়ান থেকে উদ্ভূত হয়ে কপটিক ভাষা থেকে এসেছে। যার মূল উচ্চারণটি হলো 'তশোমণ্ডনি-তশম', যার অর্থ, উদ্যানের চারণভূমি।
এই উৎসবের কোনো ধর্মীয় পটভূমি নেই। শাম এল-ন্যাসিম মিশরে বসন্তের সূচনা করে ইস্টার সানডের পরে আসে।
এই দিনে সূর্য উঠার সাথে সাথে মিশরীয় পরিবারগুলো ফেশিখ/ রিংগা মাছ অনেকটা আমাদের লোনা ইলিশের মতো, পিঁয়াজ পাতা, লেটুস ও সিদ্ধ ডিম নিয়ে নীল নদের পাড়, চিড়িয়াখানা কিংবা বিভিন্ন উদ্যানে চলে যায়।
ছোট ছোট বাচ্চারা সিদ্ধ ডিমের ওপরে রঙিন অংকন করে থাকে ও পরে তা ভেঙ্গে খায়। উদ্যানগুলোতে সারা দিন খেলাধুলা, আড্ডা ও সাথে নেওয়া শামণ্ডএল-ন্যাসিমের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘লবণাক্ত মাছ’ পিঁয়াজ পাতা, লেটুস ও সিদ্ধ ডিম খেয়ে ঘরে ফিরে সন্ধ্যার পর।
যদিও গত কয়েক বছর যাবত মিশরীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফাসিক ও রিংগা খেতে জনগণকে নিরুৎসাহিত করে আসছে। নোংরা পরিবেশে ফাসিক ও রিংগা তৈরি এবং প্রক্রিয়াজাত ও বিক্রি করায় প্রতি বছরেই শামণ্ডএল-ন্যাসিমের পর কিছু মানুষ পেটের পীড়ায় ভুগে এবং কখনো কখনো কারো মৃত্যুও ঘটে।
বিগত কয়েক বছর করোনা মহামারী ও রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলা খোলা আকাশের নিচে উৎসবটি পালন করতে দেখা যায়নি। দেশটিতে এবার ইস্টার সানডে, শামণ্ডএল-ন্যাসিম ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা চার দিনের সরকারি ছুটি ছিলো।