প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০
ফিলিস্তিনের পথে বাংলাদেশিদের পাঠানো বৃহত্তম ত্রাণবহর
লাল-সবুজের পতাকা ও মিশরে বাংলাদেশি চ্যারিটি ফান্ড ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘বাংলাদেশ ফিলিস্তিন মৈত্রী সংস্থা’র ব্যানার টানানো ৩৫টি লরিতে ৫ কোটি টাকারও অধিক অন্তত সাতশ’ টন জরুরি ঔষধ ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১৫টি লরিভর্তি একটি ত্রাণবহর গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে মিশর-ফিলিস্তিন সীমান্ত রাফার উদ্দেশ্যে কায়রো ত্যাগ করে।
বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুদানে ভর্তি এ সকল লরির মধ্যে ছিল প্রাণরক্ষাকারী জরুরি ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি, তাঁবুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহারিক জিনিসপত্র। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাঠানো এ যাবৎ কালের সর্ববৃহৎ ত্রাণবহর। এ সকল অনুদান আল আজহারে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ, স্বেচ্ছাশ্রম এবং তাদের সাথে বাংলাদেশের একাধিক বেসরকারি সেবা সংস্থা, মিশরস্থ বাংলাদেশি ছাত্র সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল।
ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হুজাইফা খান জানান, এবারের সপ্তম দফায় ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ২২টি লরি গাজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এর মধ্যে ফাউন্ডেশনটির নিজস্ব ৯টি লরির সাথে আরো ১১টি সংস্থার ১৩টি লরি গাজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সেগুলো হলো, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের জনৈক চিকিৎসক দম্পতির একটি ওষুধের লরি, মাকতাবাতুল আশরাফ, ইলমান নাফিয়া, হাফেজ্জী হুজুর (রহঃ) সেবা ফাউন্ডেশন, আস সিরাজ ফাউন্ডেশন, আহলে হাদীস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, অঙ্গীকার ফাউন্ডেশন, ক্রিয়েটিভ ইনস্টিটিউট, উত্তরা গাউসুল আজম জামে মসজিদ, সিম্পল রিজন (ব্রিটেন) ও দারুল জান্নাহ জামে মসজিদ (ব্রিটেন)।
বাংলাদেশ ফিলিস্তিন মৈত্রী সংস্থা-এর সভাপতি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আব্দুল আজিজ তরফদার জানান, ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর থেকে মিশরের গ্রান্ড ইমাম শাইখুল আযহার ড. আহমাদ আল তাইয়িবের তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৮৪০ টন ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছেছে। সেই সাথে প্রথম থেকেই আমরা দায়িত্বশীলতার সাথে নিয়মিত আজহারের মাধ্যমে সরাসরি গাজায় সহায়তা পাঠিয়ে আসছি।
আব্দুল আজিজ তরফদার যাদের অক্লান্ত শ্রম ও ভালবাসায় আজকের লাল-সবুজের এ বিশাল লরির বহর প্রস্তুত হয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আমরা নির্যাতিত মানুষদের পাশে ছিলাম এবং যুদ্ধপরবর্তী গাজা পুনর্নির্মাণেও তাদের পাশে থাকবো। সংস্থাটি মনে করে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ এই নীরব আন্দোলনে আমাদের পাশে থাকবে।
আল আজহার বাইতুয যাকাত এন্ড সাদাকাত হাউস জানায়, নির্যাতিত অসহায় গাজাবাসীর জন্যে আজ কায়রো থেকে ১৮৪০ টন জরুরি খাদ্যসামগ্রী ও ঔষধ নিয়ে ১১৫টি লরি গাজার উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়েছে। যার সাথে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ৩৫টি লরিভর্তি জরুরি খাদ্য ও ওষুধসমগ্রী যুক্ত রয়েছে। সংস্থাটির সেক্রেটারি মেজর জেনারেল (অবঃ) আমর লুতফি সংস্থাটির এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।