প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বিমানের নোংরা টয়লেট এবং রেমিট্যান্সের গল্প
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং জাতিসংঘের অর্থায়নে এক সপ্তাহের একটা প্রশিক্ষণ শেষ করে শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো থেকে ঢাকা ফিরলাম। এয়ারপোর্টের প্রক্রিয়া শেষ করে ব্যাগটা হাতে নিয়ে সরাসরি বিমানবন্দরের বাইরে চলে আসলাম। আসার পথে অনেকেই অনেক ধরনের সার্ভিস অফার করলো, কিন্তু আমি সেদিকে কান দিলাম না। কারণ বিমানবন্দর নিয়ে প্রচলিত গল্পগুলো সবই ঠকে যাওয়ার গল্প। আমার ইচ্ছা, হেঁটে বিমানবন্দরের সামনে থেকে সরাসরি বাসে উঠে বাসায় ফেরা। বিমানবন্দর থেকে বের হবার সাথে সাথেই একজন মধ্যবয়স্ক নারী আমার পিছু নিলেন। বারবার আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে গেলেন, বাপ আমাকে একটা রিংগিত দিয়ে যা। আমার হাবভাব দেখে উনার হয়তো বা মনে হয়েছে, আমি মালয়েশিয়া থেকে ফিরলাম। আমি যতই বলি আমার কাছে রিংগিত নেই। উনি মোটেও বিশ্বাস করেন না। আমি বাসে উঠে যাওয়ার আগ পর্যন্ত উনি চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। অবশেষে আমি বাসে উঠে পড়লে উনি হাল ছেড়ে দিয়ে আবার বিমানবন্দরের দিকে রওনা করলেন।
সিডনি থেকে ঢাকা আসা যাওয়ার জন্যে আমাদের প্রথম পছন্দ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স। কারণ ওদের খাবার এবং আতিথেয়তা। সিডনি থেকে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর পর তিন চার ঘন্টার ট্রানজিট থাকে। সেই সময়টা আমরা এয়ারপোর্টের মধ্যেই ঘোরাঘুরি করি, ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হই। ওয়াশরুমে যারা কাজ করেন তাদের চেহারা পরিচিত হওয়ায় সাহস করে বাংলায় জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি বাংলাদেশি? উত্তরে উনি বললেন, জ্বি, আমার বাড়ি চাঁদপুরে। এরপর উনার সাথে অনেক গল্প হলো। উনাদের বেতন কেমন, সুবিধা কী কী এসব নিয়ে। ইতঃমধ্যেই অনেক মানুষ ওয়াশরুমে আসছেন এবং বেরিয়ে যাচ্ছেন। একজন ভদ্রলোক এসে বুঝে উঠতে পারছিলেন না সিংকের কলটা কিভাবে কাজ করে। সেটা উনি দেখিয়ে দিলেন। সেই ভদ্রলোক যাওয়ার সময় বখশিশ হিসেবে রিংগিতের একটা নোট উনার পকেটে গুঁজে দিয়ে গেলেন।
করোনার প্রকোপ সবে কমে এসেছে। এমন সময় দেশে যেতে হলো। সে এক বিশাল ঝক্কির ব্যাপার। কতরকমের টেস্ট আর তার কাগজ যে হাতের মধ্যে রাখতে হয়েছিল, আর কত রকমের যে ফরম পূরণ করতে হয়েছিল। মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে কী একটা ফরম যেন দিলো। সেখানে সবই ইংরেজিতে লেখা। আমি দ্রুতই আমার ফরমটা পূরণ করে ফেললাম। এরপর একজন ভদ্রলোক আমাকে বললেন, ভাই আমারটাও পূরণ করে দেন। আমি উনারটা হাতে নিতেই আমার সামনে মানুষের একটা বিশাল লাইন হয়ে গেলো। উনারা সবাই মালয়েশিয়াতে কাজ করেন। এখন দেশে যাচ্ছেন। আমি বিমানে ওঠার আগে দ্রুত যতজনেরটা পেরেছি পূরণ করে দিলাম। তখন বাকিরা আফসোস করতে লাগলো। আমি বললাম, আপনারা বিমানে আমার কাছে এসেও পূরণ করে নিতে পারেন। পরে বিমানে বসেও সেই ফরম পূরণ করে দিলাম। ফরমটা পূরণ করে দেবার পর উনারা আমার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার যে হাসি দিচ্ছিলেন সেটা ছিল অমূল্য। মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে গেলো।
গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে ঝটিকা সফরে দেশে যেতে হলো। মালয়েশিয়া যেয়ে গেটের সামনে বসে আছি। একে একে মানুষ এসে জড়ো হচ্ছে। তাদের প্রায় সবাই মালয়েশিয়াতে শ্রমিকের কাজ করেন। সবার পোশাক আশাকই চটকদার। মাথায় বাহারি চুলের কাট। চোখে রোদচশমা। কানে কর্ডলেস হেডফোন। হাতে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল ফোন। সারাক্ষণই উনারা দেশের স্বজনদের সাথে কথা বলে যাচ্ছেন। প্রত্যেকের মুখই দেশে স্বজনের কাছে ফেরার খুশিতে উদ্ভাসিত। কতবার করে যে বলছেন, সব কাজ শেষ করে বসে আছি, একটু পর বিমানে উঠবো। হয়তো বা তখন দেশে থেকে উনার বাবা, মা, নতুন বউ, ছোট বাচ্চাটা বিমান দেখতে চাইছে। উনি তখন মোবাইলের ক্যামেরা ঘুরিয়ে বিমান দেখাচ্ছেন। আমরা নিজে শত কষ্টে থাকলেও প্রিয়জনকে সবসময়ই হাসিমুখ, সুখী চেহারা দেখাতে চাই যেন প্রিয় মানুষগুলো কষ্ট না পায়।
কার জন্যে কী নিয়ে যাচ্ছেন তার তালিকা বলছেন। সেটা নিয়ে আসতে যেয়ে বিমানের লোকদের সাথে কত বাগবিতণ্ডা হয়েছে তার বর্ণনা দিচ্ছেন। উনাদের কথা শুনি আর ভাবি, আহা কত সহজ সরল একটা জীবন। কত সামান্যতেই না খুশি হওয়া যায়। আর আমরা দেশ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েছি, দেশের সর্বোচ্চ সরকারি চাকুরি করেছি। তাতেও নিরাপদবোধ না করে বিদেশে পাড়ি দিয়েছি। সেখানে যেয়েও কি নিরাপদ ভাবছি নিজেদের? ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন যাতে সচ্ছলতায় কাটে তার জন্যে বাড়ি গাড়ি আরো কতো কী করছি। এতে আসলে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপকার করছি না অপকার করছি সেটা ভেবে দেখার দরকার আছে। নিজের জন্যে কিছু নিজে করার মধ্যে যে আনন্দ সেই আনন্দ থেকে আমরা তাদের বঞ্চিত করছি। তাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি হতেও দিচ্ছি না। যাইহোক সেটা নিয়ে অন্যসময় লিখবো।
ঢাকা বিমানবন্দরে চেক ইনের জন্যে একটু আগেভাগেই আসতে হয়। ভেতরে ঢুকে দেখি অনেক মানুষ একই ধরনের টিশার্ট এবং ক্যাপ পরে দল বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন। দেখে মনে হচ্ছে একদল পিঁপড়া জটলা পাকাচ্ছে। পাশে থেকে কে একজন বললেন, এরা সবাই মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এরপর চেক ইন কাউন্টারের সামনে পিঁপড়ার সারির মতো করে লাইন দিয়ে উনারা চেক ইন করলেন। চেক ইন শেষ করে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পার হয়ে বিমানে উঠতে হয়। সেখানে গায়ের বাড়তি কাপড়, বেল্ট, জুতা, মানিব্যাগ, মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি সব বের করে ট্রেতে রেখে গেট পার হতে হয়।
আমরা যখন গেটের কাছে গেলাম তখন তীব্র একটা দুর্গন্ধ এসে নাকে লাগলো। আমি সাথে সাথে ধরতে পারলাম, এটা ঘামে ভেজা মোজার গন্ধ। কারণ জুতোমোজা পরা চালু করার শুরুর দিকে আমার মোজা থেকে এমন গন্ধ আসতো। আমি যেহেতু অনেক ঘামি, তাই সারাদিনের ঘামে মোজা ভিজে যেত। এরপর যেই জুতা খুলতাম সাথে সাথে এই গন্ধটা পেতাম। পরে মোজার দোকানে আমার সমস্যার কথা বললে, ওরা এক ধরনের মোজা দেখিয়ে দিল যেটা থেকে গন্ধ বের হবে না। এরপর থেকে সেই ধরনের মোজাই পরি। মোজার দুর্গন্ধে গেটের বিমানের স্টাফদের সবারই নাক কুঁচকানো। তারা হদিস করতে পারছে না গন্ধটা কোথা থেকে আসছে। আমি বললাম, এটা মোজার গন্ধ। যেহেতু গেটে জুতা খুলে আলাদা রাখতে হচ্ছে, সেহেতু মোজার গন্ধটা ছড়ানোর সুযোগ পেয়ে গেছে।
এইবার বিমানে সিট পড়েছিল টয়লেটের কাছাকাছি। বিমান ছাড়ার সাথে সাথেই মোটামুটি তাই আমাদের সামনে লাইন লেগে গেল। একে একে সবাই টয়লেটে যাচ্ছেন। হঠাৎ দেখি এক ভদ্রলোক টয়লেটের দরজা খুলে নাক মুখ সিঁটকে ফেললেন। উনার আগেই একজন টয়লেট থেকে বের হয়েছেন। কিন্তু টয়লেট করে হয়তোবা ফ্ল্যাশ করেননি। তাই অপরিষ্কার টয়লেট দেখে উনার মুখের এই অভিব্যক্তি। একটু পর বিমানবালা এসে টয়লেটের ভেতরে ঢুকে পরিষ্কার করলেন, তারপর উনি ঢুকলেন। অবস্থা এমন দাঁড়ালো যে, একজন করে টয়লেট থেকে বের হবার পর বিমানবালা টয়লেটে ঢুকে পরিষ্কার করেন, তারপর পরেরজন ঢুকেন। এতে বেশ বড় জটলা তৈরি হয়ে গেলো। তখন আসল ঘটনা বুঝলাম। আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা টয়লেটে যেয়ে ছোট হোক বড় হোক টয়লেট সেরেছেন কিন্তু ফ্ল্যাশ করেননি। কারণ উনারা জানে না কোন্ বোতামে চাপ দিয়ে ফ্ল্যাশ করতে হয়।
এমনিতেই বিমানের টয়লেটগুলো খুবই ছোট আকৃতির। আর তার মধ্যে এতো রকমের বোতাম যে উনারা ভয়ে কোনো বোতাম না চেপে বের হয়ে আসাটাকেই নিরাপদ মনে করেছেন। আমার শুধু অবাক লাগে উনাদেরকে যেসব এজেন্সি বিদেশে নিয়ে এসেছে তারা সামান্য একটা টয়লেট-ট্রেনিং তো দিতেই পারতো। কারিগরি প্রশিক্ষণ বা ভাষার প্রশিক্ষণের কথা না হয় বাদই দিলাম। গ্রামের এইসব গরিব মানুষদের কাছ থেকে দরকারের তুলনায় তিনগুণ চারগুণ অর্থ নিয়ে উনাদেরকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। উনাদের এটুকু উপকার করতে তো বেশি কিছু লাগার কথা না। বিমানের টয়লেটের কয়েকটা ছবি তুলে কোন্ বোতামটা কোথায় থাকে সেটা দেখিয়ে কোনটাতে চাপ দিতে হবে দেখিয়ে দিলেই উনারা পারতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কারণ আমাদের শিখতে সময় লাগে না।
বছর খানেক সাভার উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেছিলাম। তখনকার একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেলো। প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তাদের নিজের কাজের বাইরেও অনেক কাজ করতে হয়। তার মধ্যে একটা কাজ হলো কাগজপত্র সত্যায়ন করার ক্ষমতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্টের আবেদন করতে, চাকুরিতে বিশেষ করে সরকারি চাকুরিতে দরকারি কাগজপত্র সত্যায়ন করে জমা দিতে হয়। সরকারি লোকজন এমনিতেই সারাদিন বিভিন্ন ঝামেলায় থাকেন। তাই তারা এগুলো এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন। আমি এটাকে উপভোগই করতাম। যে-ই আসতো তার সাথে গল্প জুড়ে দিতাম। প্রত্যেকটা মানুষই আমার কাছে এক একটা বইয়ের মতো। তাই তাদের সাথে গল্প করাটা একটা নতুন বই পড়ার অভিজ্ঞতার মতো লাগে আমার কাছে।
একদিন একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোক এসে আমাদের অফিসের দরজায় জুতো খুলছেন দেখে বললাম, জুতা খুলতে হবে না, ভেতরে আসেন। ভেতরে আসার পর জিজ্ঞেস করলাম, বলেন আপনার জন্যে কী করতে পারি? উনি বললেন, স্যার আমি মিডল ইস্টে কাজ করি। আমার হাতে লেখা পাসপোর্ট। এখন ওরা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বানাতে বলেছে। তার আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। তাই কিছু কাগজপত্র সত্যায়িত করতে হবে। আমি বসতে বলে কাগজগুলো বের করতে বললাম আর জিজ্ঞেস করলাম মূল কপিগুলো এনেছেন কি না? আমি সাধারণত মূল কপিগুলো একঝলক দেখেই সত্যায়ন করে দিই। স্বাক্ষর করতে করতে বললাম, দেশের অর্থনীতি তো টিকিয়েই রেখেছেন আপনারা। আপনাদের রক্ত পানি করা পয়সাতেই আমাদের বেতন হয়।
এটা শুনে উনি অঝোর ধারায় কাঁদতে শুরু করলেন। সেটা দেখে আমি একটু বিড়ম্বনায় পড়ে গেলাম। উনি বেশ কিছুটা সময় নিলেন ধাতস্থ হতে। স্থির হয়ে যেটা বললেন তার সারমর্ম এমন--উনি খুব সকালে সাভারের একটা ইউনিয়ন থেকে উপজেলাতে এসেছেন। এই আশায় যে সেখানে তো অনেক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা আছেন, তাদের কাউকে না কাউকে দিয়ে সত্যায়ন করিয়ে নেবেন। একটা উপজেলাতে অনেক প্রথম শ্রেণীর পোস্ট থাকে। তাদের যে কেউই সত্যায়ন করে দিতে পারেন।
উনি সকাল থেকে প্রায় প্রতিটা অফিসেই গেছেন। কেউ গল্প করছেন, বলেছেন অন্য জায়গায় যেতে। কেউ চা খাচ্ছেন, বলেছেন অন্য জায়গায় যেতে। অবশেষে উনি আমার কাছে এসেছেন। আমি সত্যায়ন করে দিয়ে বললাম হিসাবরক্ষকের কাছ থেকে সিল দিয়ে নিতে। একটু পর উনি আবার আমার কক্ষে ফিরে এলেন। হাতের একটা কাগজে উনার বাড়ির ঠিকানা লেখা। তারপরও উনি বিস্তারিত বুঝিয়ে দিলেন কীভাবে যেতে হবে। বললেন, স্যার কোনো কাজে ঐ ইউনিয়নে গেলে যেন অবশ্যই তার বাড়িতে যাই। অবশ্য আমি শেষ পর্যন্ত উনার বাড়িতে যেতে পারিনি।
আরেকটা অভিজ্ঞতার কথা বলি। তখন বাংলালিংক মোবাইল কোম্পানিতে কাজ করি। আমাদের অন্যতম সাবকন্ট্রাক্টর চীনা কোম্পানি 'হুয়াইয়ে' তাদের সাথে কাজ করতে সাইটে যেয়ে একদিন ওদেরকে ইংরেজিতে নির্দেশনা দিচ্ছিলাম। কিন্তু ওদের মুখের ভাব দেখে বুঝলাম ওরা আমার কথা বুঝতেছে না। একটু পর ওদের ম্যানেজারকে ডেকে নিয়ে আসলো। সে এসে বললো, তোমার যা দরকার আমাকে বলো। আমি ওদের বুঝিয়ে দিচ্ছি। ওরা শুধু ওদের কাজটাই জানে, ভাষাটা জানে না। শুনে আমি খুবই অবাক হলাম। পাশে রাখা ল্যাপটপের স্ক্রিনে উঁকি দিয়ে দেখি সেখানে মাই কম্পিউটার, রিসাইকেল বিন এই কথাগুলো চীনা ভাষায় লেখা। তখন আমি হাতেকলমে দক্ষ জনশক্তির সাথে পরিচিত হলাম।
বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা দেশের জন্যে বোঝা নয় বরং সম্পদ। যদি আপনি ঠিকভাবে সেটাকে কাজে লাগাতে পারেন। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের সস্তা শ্রমের চাহিদা বিশ্বজোড়া। ভারত এবং চীন তাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করেছে। তারা তাদের দেশের পাসপোর্ট করাসহ সরকারি কাজগুলো সহজ করে দিয়েছে। আর বিদেশে পাঠানোর আগে সেই কাজের ওপর একটা ছোট প্রশিক্ষণ দিয়ে দিচ্ছে, যাতে করে সে কাজটা ঠিকঠাক করতে পারে। ভাষাটা তেমন দরকারি না, কারণ তাদের উপরে উভয় দেশের ভাষা জানা একজন টিম লিডার থাকবে যার কাছ থেকে তারা নির্দেশনা পাবেন। আমরাও যদি এভাবে আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারতাম তাহলে প্রকৃত অর্থে সোনার বাংলা তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে না। কারণ আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা অনেক কর্মঠ। তারা যে কোনো কাজ করতে আগ্রহী। তারা যেহেতু শিক্ষিত না, তাই তাদের কাছে সব কাজই কাজ মনে হয়।
লেখকের অবস্থান : মিন্টো, অস্ট্রেলিয়া।