প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
মিশরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দেওয়ার ৫৩ বছরপূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করলো নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) প্রত্যুষে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ।
দুপুরে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে দিবসটির মূল কার্যক্রম শুরু হয়। প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ মোনাজাতের পর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানোর পর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণটি প্রদর্শিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ শুরুতেই সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ৭ই মার্চের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির সকল শোষণ, নির্যাতন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠার এবং মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার এক গভীর ডাক। এ ডাক ছিল আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের আহ্বান। যে আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুরো জাতি মুক্তিযুদ্ধে জড়ালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পায় ১৬ডিসেম্বর ১৯৭১-এ। জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কেই নাড়া দেয়নি, ভাষণটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল সারা বিশ্বে। এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে মুক্তির মোহনায় দাঁড় করিয়েছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, যুগে যুগে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিপীড়িত, লাঞ্ছিত স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রেরণা ও উদ্দীপনার উৎস হিসেবে কাজ করবে। পৃথিবীর ইতিহাসে যতদিন পরাধীনতা থেকে মুক্তির জন্যে সংগ্রাম থাকবে, ততদিন ৭ই মার্চের ভাষণটি মুক্তিকামী মানুষের মনে চির জাগ্রত থাকবে। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটিকে গবসড়ৎু ড়ভ ঃযব ডড়ৎষফ ওহঃবৎহধঃরড়হধষ জবমরংঃবৎ-এর অন্তর্ভুক্ত করায় তিনি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো)-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ ভাষণটি জাতিসংঘের ৬টি অফিসিয়াল ভাষায় অনূদিত হওয়া ছাড়াও জাপানী ও ভিয়েতনামী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে চালিত করছেন। গত ১৫ বছরে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই অব্যাহত অগ্রযাত্রায় সকলকে স্বীয় দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানান।