প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বিখ্যাত আল-আজহার মসজিদে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ইফতার
মিশরে রমজান মানেই আনন্দ আর উৎসব। বছরের অন্যান্য মাসের মধ্যে দেশটি সবচেয়ে বেশি আনন্দমুখর হয় ‘পবিত্র রামজান’ মাসে। এই মাসকে কেন্দ্র করে গোটা মিশর সাজে ব্যতিক্রমী এক সুন্দররূপে। পবিত্র রমজানে বিশ্ব বিখ্যাত আল-আজহার মসজিদের ইফতার নিয়ে আজ জানাচ্ছি পাঠকদেরকে।
মিশরের বিশ্ববিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৫ হাজারেরও অধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেন। তার মধ্যে আবাসিক ও অনাবাসিক মিলে রয়েছে ১২শ' বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্যে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে প্রতিদিন পাঁচ হাজারেরও অধিকজনকে ইফতার পরিবেশন করা হয় মসজিদে।
আসরের আজানের সময় হলেই ইফতারের জন্যে দলে দলে ছুটে আসেন আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ মোবাইলের অ্যাপস-এর মাধ্যমে পূর্ব পাশের গেট দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেন। সুউচ্চ মিনারের প্রাচীন মসজিদটির ভিতরের চারপাশে কাঠের দেয়াল। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন ও নামাজ আদায় করেন। মাঝখানে খোলা ময়দান, যেখানে রয়েছে সাদা টাইলস করা উঠান। নামাজ আদায় করে মসজিদের বারান্দায় বসে কেউ কেউ কোরআন পড়েন, কেউ তাসবিহ পাঠ করেন, এ যেন জান্নাতি এক পরিবেশ।
এরই মধ্যে আল-আজহারের আন্ডার সেক্রেটারি ডক্টর মুহাম্মাদ আল-দুওয়াইনির তত্ত্বাবধানে কর্মকর্তা কর্মচারীরা শুরু করেন ইফতারের প্রস্তুতি। যেখানে সবাই সুন্দরভাবে ইফতারের সামগ্রীগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে দিচ্ছেন। কারো সঙ্গে কারো কথা নেই। যে যার মতো কাজ করছেন। কেউ কেউ দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
মাগরিবের আজানের ৩০ মিনিট আগে সবাইকে ডাকা হয় ইফতার সামনে নিয়ে বসার জন্যে। আজানের ১৫ মিনিট আগে একজন ক্বারী সুমিষ্ট সুরে কোরআন তিলাওয়াত করতে থাকেন। আজান হওয়ার সাথে সাথে খেজুর এবং পানি খেয়েই সবাই নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। নামাজ শেষ করে সবাই বাকি খাবার শেষ করেন।
এখানকার ইফতারে থাকে মিশরের ঐতিহ্যবাহী ইফতার খাবার--খেজুর, জুস, পানি, ভাত, এইশ বেলাদি (রুটি), ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, কোপ্তা,সব্জি সহ মিশরীয় মিষ্টি।
আল-আজহারের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ময়মনসিংহের আজিজুল ইসলাম বলেন, নিজ মাতৃভূমি, পরিবার, বন্ধু বান্ধব, প্রিয়জনদের ছেড়ে জ্ঞান অর্জনের শর্তে এই প্রথম বিদেশের মাটিতে পবিত্র মাহে রামাদান মাস অতিবাহিত করছি। সেহরির এবং ইফতারের সময় পরিবারের সকলকে বিশেষ করে প্রিয় মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধবদের খুব মিস করি, সেই সাথে দেশীয় ইফতারের আইটেমগুলোকেও। কিন্তু যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫ হাজারেরও বেশি আল-আজহার শিক্ষার্থী ভাইদের সাথে একত্রে ইফতার করি, তখন অন্যরক ভালো লাগা কাজ করে। এখানে এসে কিছু সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশীয় বড় ভাইদের সাথেও দেখা হয়। এই মহতী উদ্যোগের জন্যে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মোবারকবাদ জানান আজিজুল ইসলাম।