প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
দূরপরবাসে তবু প্রাণে ভাসে
স্টকহোমে বসে আমি,
তাকিয়ে আছি বাংলাদেশের দিকে।
যেখানে মানুষের জীবন চলছে,
যথারীতি আগের মতো করে।
আমার কাছে মনে হচ্ছে না যে,
আমি তাদের মতো একজন।
মনে হচ্ছে না যে আমি,
একদিন তাদের মাঝেই ছিলাম।
যাদের আমি দেখেছি অতীতে,
মনে হচ্ছে তাদের সাথে আমার
ছোটবেলার সেই সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।
আমার একটি শান্ত জীবন থাকতে,
কেন আমি বার বার ফিরে তাকাই সেদিকে?
একটি সুন্দর জীবন একসঙ্গে থাকতে পারতো,
কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি।
বরং, আমি এখানে বসে আছি,
এবং এখনও ভাবছি,
আশা যখন আছে তাহলে অপেক্ষা করলে ক্ষতি কী! কিন্তু সেই আশা এখন শেষের পথে,
কারণ বিশ্বাস এখন ফুরিয়ে গেছে।
বাংলাদেশে আমি জন্মগ্রহণ করেছি,
সেখানে আমার পরিবার ছিলো,
তারা আর আগের মতো নেই,
তারা এখন পাষ- হয়ে গেছে।
আমি সব সময় মনে করতাম,
আমি যেনো আমার সেই প্রাণপ্রিয় জন্মভূমিতে মরি,
কিন্তু এখন আমি জানি না আমি কি সেখানে মরতে চাই?
আমি যে পথে হাঁটতাম,
যেখানে যেতাম,
যাদেরকে আপন করে ভাবতাম,
তারা আজ সেই আগের মতো,
একইভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে না।
আমার মনের মাঝ থেকে ওখানকার সকল স্মৃতি মুছে ফেলা উচিত।
আমার অন্য কোথাও ভ্রমণ করতে যাওয়া উচিত,
আমি যেখানেই যাই না কেন,
বাংলাদেশ আমাকে ছাড়ছে না।
আমার নতুন করে যাওয়া উচিত সেই জায়গায়,
যেখানে আমার সব কিছু ছিল!
গরমের উষ্ণতা, প্রেমের শূন্যতা, মায়ের অনুপস্থিতি, আমি আর ফিরে পাবো না।
তাই আমি সব কিছু ফেলে দূরে বসবাস করছি।
স্টকহোমে আমি জন্মগ্রহণ করিনি,
তবে সেখানে আমার পরিবার আছে,
এবং আমি এখন তাদের মাঝে বসত করছি।
বাংলাদেশ এখন ঠাণ্ডা হয়ে গেছে,
আমার নতুন এই দেশে
চলছে নতুন জীবন যথারীতি ভাবে।
যদিও আমি প্রায়ই সেই বাংলাদেশের কথা মনে করি, কিন্তু স্টকহোমই আমার এখন বসত বাড়ি,
আমি তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে শুরু করেছি।
তবে হে বাংলাদেশ!
তুমি আমারই সেই প্রাণপ্রিয় জন্মভূমি,
আমি তোমায় আজও ভালোবাসি।
কবি : সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।