প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্পেনে বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতির অভিষেক
বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং শিল্প সংস্কৃতিতে বৃহত্তর নোয়াখালী বিশেষ ভূমিকা রাখছে। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের প্রতীক বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতি, মাদ্রিদ। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাত ৯টায় মাদ্রিদের বাঙালি অধ্যুষিত লাভাপিয়েস এলাকার রাজপুত রেস্টুরেন্টের হল রুমে এই সমিতির নবগঠিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। ২০০০ সালে মাদ্রিদে সমিতিটির অগ্রযাত্রা শুরু হয়।
গত ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের জন্যে সমিতির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এই উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভা ও নৈশভোজের। অনুষ্ঠানে লোকের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন বাংলাদেশের এক টুকরো নোয়াখালীর অংশ। মনেই হচ্ছিল না যে, মাদ্রিদে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস মাদ্রিদের কাউন্সিলর (শ্রম উইং) মোতাসিমুল ইসলাম।
বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতি মাদ্রিদের সদ্য সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি আবুল কাশেম মুকুল, সাধারণ সম্পাদক ডালিম বেপারী রাজু ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাবুদ্দীনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশ মসজিদের সভাপতি খোরশেদ আলম মজুমদার, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি আল মামুন, সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিন মনির, কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, কমিউনিটির প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আবুল আজাদ বেঙ্গল, বাংলাদেশ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মিয়া, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দর, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সদস্য সচিব মোঃ দুলাল সাফা, বিক্রমপুর মুন্সিগঞ্জ সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান ঝন্টু, বর্তমান সভাপতি মিল্টন ভূঁইয়া কচি, অ্যাসোসিয়েশন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি ফজলে এলাহি, গ্রেটার সিলেট অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের উপদেষ্টা আবু জাফর রাসেল সহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
নোয়াখালী সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাহারুল আলম, মোহাম্মদ কিবরিয়া, আবুল কাশেম, মোঃ দেলওয়ার মজুমদার , বিল্লাল হোসেন শাকিল, দিদারুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নোয়াখালী ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এবং ভাষার দিক দিয়ে প্রাচীন একটি জেলা। নোয়াখালীর প্রাচীন নাম ছিল ভুলুয়া। নোয়াখালী সদর থানার আদি নাম সুধারাম। নোয়াখালী নামের উৎপত্তি নিয়ে নানাজনের নানান মত রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত মতটি হলো, ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসাবে ১৬৬০ সালে বিশাল একটি খাল খনন করা হয়, যা পানির প্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী হতে রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল নতুন খালকে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় ‘নোয়া (নতুন) খাল’ বলা হতো। এর ফলে ‘ভুলুয়া’ নামটি একসময় পরিবর্তিত হয়ে ১৬৬৮ সালে হয়ে যায় নোয়াখালী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের দায়িত্বশীলবৃন্দ , নোয়াখালী সমিতির নবনির্বাচিত ও সাবেক কমিটির দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা হাসান বিন মোহাম্মদ উল্লাহ। সবশেষে নবনির্বাচিত কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটির দায়িত্বশীলগণকে ফুল দিয়ে অভিষিক্ত করেন বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নৈশভোজের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি হয়।