বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

গণতন্ত্র মানে দুর্নীতির বেস্ট প্র্যাকটিস নয়

রহমান মৃধা
গণতন্ত্র মানে দুর্নীতির বেস্ট প্র্যাকটিস নয়

এখনও ইংল্যান্ড, সুইডেনসহ বহু দেশে রয়েছে রাজতন্ত্রের ছোঁয়া; যেখানে রাজা বা রাণী হন উত্তরাধিকারসূত্রে। তবে এই রাজতন্ত্র সেই রাজতন্ত্র নয়, এটি হলো নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র। নখদন্তহীন সিংহ। গণতন্ত্র বর্তমান রাজতন্ত্রকে খাঁচার মধ্যে আটকে ফেলেছে। রাজতন্ত্র পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকে গণতন্ত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তাই উভয়ের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ নেই। রাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মধ্যে এই যে সমন্বয় এটি পরস্পরবিরোধী চিন্তার সমন্বয়ের ফসল। এতে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, হয়েছে ঐশ্বর্যময়। চিন্তা আর প্রতিচিন্তার সংঘর্ষ ও চূড়ান্ত পর্যায়ে সমন্বয়ের মধ্য দিয়েই সমাজ এগিয়ে চলছে।

> কথিত আছে, প্রাচীন গ্রিস গণতন্ত্রের জন্মভূমি। তবে আধুনিক কালের প্রতিনিধিত্বমূলক পরোক্ষ গণতন্ত্র নয়, প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র। বলা যেতে পারে আধুনিক গণতন্ত্র বিকশিত হয় প্রথমে ইংল্যান্ডে। স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণের দীর্ঘ সংগ্রামের পর রাজতন্ত্রের চূড়ান্ত পতন হয় এবং জনগণের বিজয়ের ফসল হিসেবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর গণতন্ত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকে গোটা ইউরোপ এবং শেষে গোটা বিশ্বে শুরু হয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আজও দেশে দেশে চলছে সে সংগ্রাম।

> গঠনতন্ত্রের এ সংঘর্ষ যদি তখন সমাজ মেনে না নিত, আজকের এই উন্নত আধুনিক পৃথিবী নির্মাণ করা সম্ভব হতো না। তাই বলা যেতে পারে, জীবন মানের উন্নয়নের জন্যে উন্নয়ন নীতিমালার কেন্দ্রে থাকতে হবে পরিবর্তন এবং মত দ্বিমতের সম্পর্ক। একটি সমাজ বা দেশের জনগণের যদি কিছু বলার অধিকার না থাকে, তবে কারো কিছু করার কোনো অধিকার থাকার কথা নয়। অথচ দুর্নীতি, ঘুষ, গুম, খুন, ধর্ষণ চলছে দেদারচে। বাধা তো এসব ক্ষেত্রেও রয়েছে। তা সত্ত্বেও এসব কিছু মানুষ ঝুঁকি নিয়ে করছে। এগুলো যখন করা সম্ভব সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে, তাহলে প্রতিবাদ কেন করা যাবে না? এমনটি প্রশ্ন করে বসলেন আমার এক সুইডিশ বন্ধু।

> উত্তরে বললাম, বন্ধু প্রতিবাদ করতে হিম্মত লাগে, কিন্তু কুকর্ম করতে কাপুরুষ হতে হয়। প্রতিবাদ লোকালয়ে ঘটে আর অকাম, কুকাম ঘটে রাতের অন্ধকারে। বন্ধু আমার বিশ্লেষণে মুগ্ধ হলেও হঠাৎ পাল্টা প্রশ্ন করলেন, তোমাদের দেশে দিনে দুপুরে ভোট চুরি করে কর্তৃপক্ষের সামনে, তারা নিশ্চয় কাপুরুষ নয়? উত্তরে বললাম, না, তারা রাজনীতিবিদ। কারণ পলিটিক্স মানেই তো ট্রিকস, তাইতো ভোটের আগের দিন সমস্ত ভোট ব্যালট বাক্সে ঢুকে যায়। যে কথাগুলো আমি লিখলাম, এ কথাগুলো আমি ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি, এর জন্যেই কিন্তু আমি দায়ী। আবার যে কথাগুলো আমি এখনও লিখিনি, তবে ভাবছি লিখব এবং মনে মনে চিন্তাও করছি কী লিখব। এর জন্যেও কিন্তু আমি দায়ী বিবেকের কাছে।

> বাক স্বাধীনতা এবং তার প্রকাশের দায়ভার আমার। এর ভালো-মন্দের জন্যে আমি পরিবার, সমাজ বা দেশের কাছে জিম্মি। যখন তখন যা খুশি তাই বলতে বা লিখতে পারি না। আবার সমাজ বা দেশের ক্রান্তিকালে যদি আমি নীরবতা পালন করি, তাহলে কিন্তু আমি অন্যায়ের পক্ষে। শুধু লেখক বা কবি-সাহিত্যিকই নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষেরই কথা বলা এবং লিখার স্বাধীনতা থাকতে হবে। সর্বস্তরের মানুষের কথা শুনতে হবে। সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং সরকারকে একত্রে বসতে হবে। রাজনৈতিক সংগঠনকে কালের স্পন্দন বুঝতে হবে আর কালের স্পন্দন বুঝতে পারলেই মানুষের মনের স্পন্দন বোঝা সম্ভব।

> বস্তুত রাজনীতির জন্যে প্রয়োজনীয় যে জ্ঞান, তার উৎস হলো জনগণ এবং তারা সাধারণ মানুষ। এখন জনগণ ছাড়া কি গণতন্ত্র সম্ভব? তবে হ্যাঁ, গণতন্ত্রের দেশে যদি কেউ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে, গুজব ছড়ায়, সমাজের জন্যে ক্ষতিমূলক আচরণ করে তবে তাকে সংশোধন হতে হবে। কিন্তু একেবারে মেরে ফেলা যাবে না। কারণ, যদি কেউ দ্বিমত পোষণ করে, আর তাকে যদি মেরে ফেলা হয় বা জেল হাজতে ঢোকানো হয় তবে শেষে দেখা যাবে কেউ আর বেঁচে নেই। যেমন গত কয়েক বছর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি আটকাবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদ মারা গেলেন। তার অপরাধ হলো, সে এমন কিছু কথা বলতে চেয়েছিলেন, যা সমাজের কিছু লোকের পছন্দ হয়নি।

> কেউ যদি আমার কথা পছন্দ না করে, তাহলে আমার বক্তব্য খণ্ডন করার মতো যুক্তি দেখাতে হবে এবং নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনবো। এমনও হতে পারে, তার যুক্তির কাছে আমি পরাজিত হয়ে আমি নিজেই তার অনুসারী হয়ে গেছি। কিন্তু তা না করে আমাকে বন্দি করে জেলে ঢোকানো হলো বা ভয় দেখানো হলো বা মেরে ফেলা হলো। আমাকে হত্যা করে ফেললেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আর দশজনের মতো আমিও বেঁচে থাকতে চাই। আমারও তো রয়েছে সংসার, পিতা-মাতা, সন্তান, ভাই-বোন, সমাজ আর রাষ্ট্র, যাদের প্রতি আমারও রয়েছে দায়, রয়েছে ঋণ, রয়েছে ভালোবাসা।

> তবে হ্যাঁ, আমার বক্তব্যটা উপস্থাপন করতে হবে শালীন ও যুক্তিপূর্ণ ভাষায়। বক্তব্যের সঙ্গে যদি কেউ দ্বিমত পোষণ করে তার জবাবটাও দিতে হবে একইভাবে। আলোচনা-সমালোচনা, যুক্তি-প্রতিযুক্তি, তর্ক-বিতর্ক— এসবের অনুশীলন ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির ধাপে পৌঁছাতে পারে না। এটি একটি প্রমাণিত সত্য। কিন্তু বাংলাদেশের সমাজ থেকে এগুলো বিলীন হতে চলেছে, কারণ কী?

> দেশ স্বাধীন হবার পর আজ অবধি কোনো সরকারই জনগণের মনের ভাষা বোঝেনি, তবে বুঝেছিলেন শেরে বাংলা, ভাসানি, বঙ্গবন্ধু। তাইতো তারা স্বাধীনতার নায়ক-মহানায়ক হতে পেরেছিলেন। আমরা কোটি কোটি জনগণ যেমন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, প্রাণ দিয়েছিলাম, তিনিও স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করে তার প্রতিদান দিয়েছেন।

> এখন কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যে সকলেই কাজ করবে এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। এ সত্য ভুলে গেলে চলবে না। এখন যারা ক্ষমতায় আসছে কেবল তারাই নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক মনে করছে আর বাকিদেরকে মনে করছে রাষ্ট্রদ্রোহী, দেশদ্রোহী, রাজাকার আরও কত কী! মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রেখে অনেক দেশনেতাকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে, যা অন্যায়। আর কতকাল ধরে চলবে এই অত্যাচার? এই প্রতিহিংসাপরায়ণতা? এটাই কি স্বাধীনতা? এটাই কি মানবাধিকার? প্রশ্নগুলো কার কাছে করবো? এমন মানুষও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

> আমরা গ্রাম-গঞ্জের মানুষ ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর অবধি ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। ক্ষোভে পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছি। এখন আমাদের কাজ নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে ভবিষ্যৎ দেখানো। দেশের প্রায় সাড়ে তিন কোটি তরুণ বেকার। দেশে মধ্যবিত্তের সংখ্যা এখন প্রায় ছয় কোটি। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন হয়ে বর্তমান পর্যন্ত যা কিছু সামাজিক আলোড়ন হয়েছে সবই সম্ভব হয়েছে তরুণদের কারণে। অথচ সেই তরুণরা আজ বঞ্চিত বাকস্বাধীনতা থেকে, স্বাধীন মতপ্রকাশ থেকে, ভোটাধিকার থেকে। ফলে তাদের মধ্যে নতুন নতুন চিন্তা ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটছে না। আমরা এগিয়ে যাবার নতুন পথও খুঁজে পাচ্ছি না। তাদেরকে বাদ দিয়ে দেশ গড়া যেমন সম্ভব হতে পারে না, ঠিক তেমনি সমাজের লেখক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী ও ভিন্নমতের মানুষ হত্যা করে দেশ চালানো সম্ভব নয়। লেখক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী ও ভিন্নমতের মানুষ হত্যার মতো জঘন্য বিষয়টি নিয়ে কি জাতীয় সংসদে বা মন্ত্রিসভায় কার্যকর আলোচনা হয়েছে? একজন লেখক কখনো কখনো সমগ্র মানবজাতির ওপরই সুদূরপ্রসারী ও শক্তিশালী অবদান রাখতে পারেন। একটি মহল প্রতিবাদী লেখকদের মেরে ফেলতে চাইছে, অথচ সংসদেও সে বিষয়ে নির্ভীক কোনো আলোচনা নেই, বিরোধীদলের তেমন প্রতিবাদ নেই। কীভাবে মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান ক্রমেই উন্নত স্তরে পৌঁছাবে, যদি বিরোধী দলের তেমন প্রতিবাদ না থাকে?

> বিরাজমান জ্ঞানের সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত নতুন জ্ঞানের সংঘর্ষের ফলেই মানব সমাজের জ্ঞানবৃদ্ধি ঘটে। অতএব, মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত এই নতুন জ্ঞান তাকে প্রকাশ করতে দিতে হবে। তা না হলে সমাজে জ্ঞানবৃদ্ধি ঘটবে না এবং সমাজ একদিন একটা বদ্ধ ডোবায় পরিণত হবে। প্রশ্ন হলো, বিরাজমান জ্ঞানের সঙ্গে নতুন জ্ঞানের সংঘর্ষ কীভাবে হবে? আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্ক হলো সেই মাধ্যম, যা এই সংঘর্ষ তৈরি করে। বিতর্ক একটা সমাজ এবং দেশের মানুষের মাঝে গতি তৈরি করে। এ গতিই সমাজ এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

> ইউরোপ যে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতি করছে, তার মূলে ছিল বিতর্ক ও অন্যায়-অবিচার-বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করলে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাই যে, ঐতিহাসিক কয়েকটি ঘটনা আজকের এই আধুনিক পৃথিবীর জন্ম দিয়েছে। যেমন পুনর্জাগরণ, ফরাসি বিপ্লব, শিল্পবিপ্লব প্রভৃতি। অর্থাৎ এসব ঘটনা না ঘটলে শিল্পবিপ্লবে কখনোই মানবজাতির পক্ষে আজকের এই উন্নত জীবন অর্জন সম্ভব হতো না। কারণ, এই ঘটনাগুলো ব্যক্তির চিন্তা, কর্ম ও সৃজনশীলতার পথ খুলে দিয়েছিল।

> গত কয়েক বছর আগে ফরাসির প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের তিন বছরের সাজা হয়েছে, কারণ তিনি দুর্নীতি করেছিলেন কোনো এক সময়, যা আমাদের দেশে কোনো ব্যাপারই না।

ফরাসি দার্শনিক ভলটেয়ারের বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ে গেল, ‘আমি তোমার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি, কিন্তু তোমার বক্তব্য প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে আমি আমার জীবন দিতে প্রস্তুত’। আমরা ভুলে গেছি বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের শিক্ষা, ভুলতে শুরু করেছি স্বাধীনতা আন্দোলনের শিক্ষা। অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত অধিকারের জন্যে কথা বলতে পারার নাম স্বাধীনতা। নিজের মতো করে ব্যক্তির কথা বলা, কথা শোনা ও কথা লেখার অধিকারের নাম স্বাধীনতা।

> এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে মূল্যহীন হবে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, ব্যর্থ হবে শহীদদের চরম আত্মত্যাগ। ২০২৩ সালের শেষে এসে সেটা দেখা যাচ্ছে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তরুণদের মনে রাখেনি। তরুণদের মনে রেখেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইনে বন্দিদের বেশির ভাগই তরুণ। এ কারণে তরুণরা আন্দোলন করছে তরুণবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে। নতুন প্রজন্ম এ সরকারকে বিশ্বাস করতে চেয়েছিল। অনলাইনে বেশিরভাগ লেখকই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনুকূলে। কিন্তু কী হয়েছে? সরকার তাদের পরিত্যাগ করেছে। অনেকের অপমৃত্যু সরকার ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

> অনেক লেখক-সাংবাদিক-শিল্পী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। সরকার আর রাষ্ট্র এক নয়। অথচ সরকার আর রাষ্ট্রকে এক করে ফেলা হয়েছে। সরকারের বিরোধিতাকে রাষ্ট্রবিরোধী বলে আখ্যায়িত করে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। তাহলে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর দোষ কোথায় ছিল? পাকিস্তানি সামরিক জান্তার অধীনে ১৯৭০ সালে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারলো, অথচ আমরা সেইরকম একটি নির্বাচন করার যোগ্যতাও হারিয়েছি। আজ তরুণদের সকল অধিকার হরণ করে নিয়ে তাদেরকে বোবা করে দেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে জবানের স্বাধীনতা ধ্বংস করা হচ্ছে। সত্যকে সঠিকভাবে প্রকাশ করার মতো সাহস জাতির কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। স্বাধীন করেছিলাম বাংলাদেশ পরাধীন হয়ে বেঁচে থাকার জন্যে নয়, এ বিষয়ে আমরা একমত নিশ্চয়ই। আমরা যদি একমতই হই, তবে গণতন্ত্রের বেস্ট প্র্যাকটিসে বাধা কেন?

লেখক : সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়