প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
ছোটবেলায় তেলাপোকা উড়তেই মা’র দুচোখ ছলছল করতো। অভাবের কাঠপোড়া রোদ্দুরদুপুরে বাবা মাইনের সব টাকাগুলো মা’র হাতে তুলে দিলে মা হাসতে হাসতে বলতেন-জানতাম বেতন হইবো, ওইদিন খুউব তেলাপোকা উড়তাছিল। অবাক হয়ে শুনতাম।
দাদু মারা গেছেন অনেক আগেই। কয়েকটা স্মৃতি তবু জীবিত। শরতের অসহায় আনমনা সন্ধ্যায় আপার সাথে পড়তে বসতেই কুপির চারপাশে উলির উপদ্রব। মারতে গেলেই দাদুর কড়া নিষেধ- ওডি মারিছ না, টেয়া আইবো।
রাতে যখন শুতে যেতাম খুব ভয় হতো। মাচার নিচে মাটিগড়া উলির শিল্পাশ্রম। ঝাঁঝড়া কাঠের ফাঁকে ট্রাঙ্ক আর মাটির মটকাগুলো উঁকি দিয়ে ভেঙচি কাটতো, মনে হতো-এই বুঝি আকাশ ভেঙ্গে পড়লো!
ধীরে ধীরে উলিবাহিনী সমস্ত ঘর জয় করলো। অতিষ্ঠ হয়ে আপা একদিন ধঞ্চে দিয়ে মাটির বাসাগুলো ভাঙতে লাগলো। দাদু দৌড়ে গিয়ে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে বলেছিল-করছ কি! জানছ এডি কিয়ের লক্ষণ? নতুন বাড়ির। সে দৃশ্য মাঝেমধ্যেই চোখের নদীতে ভাসে। নদীর পাড়ের হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসে নিজেকেই বিভূতির অপু মনে হয়।
দাদু-মা-আপা সবাই স্মৃতির মিনার। প্রজন্ম প্রায়ই ওনাদের গল্প হা করে শোনে।
ওদিন এক শিক্ষক বন্ধুর সাথে চা খেতে খেতে গল্প করছিলাম। হঠাৎ ডান হাতের তালু চুলকাতেই চুমু দিয়ে মাথায় ঘষতে বলল। টাকা আসার লক্ষণ। কখনো বাম হাতের তালু চুলকালে পায়ের ধূলো লাগিয়ে দিতে বলল। টাকা যাবার লক্ষণ।
গত এক সপ্তাহ যাবৎ প্রায়ই বাম হাতের তালু চুলকাচ্ছে। অথচ বিগত এক মাস যাবৎ আমার ডান হাতের তালু একবারের জন্যেও চুলকায়নি।